এক দিনেই ৮১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল সৌদি আরব। সৌদি আরবের ইতিহাসে এই প্রথম। সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের এই সংখ্যা ১৯৮০-এর জানুয়ারির মোট মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। ১৯৭৯ সালে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ দখলের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৬৩ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ১৯৮০ সালে। এবার দেশটিতে একদিনেই ৮১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের জেরে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৮১ জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার আগে ঠিক কেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য শনিবারই বেছে নিল সৌদি আরব তা স্পষ্ট হয়নি। আপাতত গোটা বিশ্বের নজর রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে। ঠিক এই আবহেই এখনও পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকর করে ফেলল সৌদি আরব।
উল্লেখ্য, করোনভাইরাসের প্রকোপ চলাকালীন সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমে যায়। যদিও রাজা সলমান ও তাঁর ছেলে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অধীনে দোষীদের শিরশ্ছেদ করা অব্যাহত ছিল। সৌদি প্রেস এজেন্সি শনিবারের মৃত্যুদণ্ডের কথা ঘোষণা করে জানিয়েছে, "নিরপরাধ পুরুষ, নারী ও শিশুদের হত্যা সহ বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা।"
শনিবার সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজন আল-কায়েদা, ইসলামিক স্টেট গ্রুপের সদস্য এবং ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থনকারীও ছিলেন বলে জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবেশী ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে।
শনিবার সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৭৩ জন সৌদি, সাতজন ইয়েমেনি এবং একজন সিরিয়ান রয়েছেন। তবে ঠিক কোথায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তা প্রতিবেদনে বলা হয়নি।
আরও পড়ুন- ‘ছেলেদের ভিনদেশে যুদ্ধে পাঠাবেন না’ রাশিয়ার মায়েদের অনুরোধ জেলেনস্কির
সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, "অভিযুক্তদের একজন অ্যাটর্নির অধিকার দেওয়া হয়েছিল। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন সৌদি আইনের অধীনে তাদের পূর্ণ অধিকারের নিশ্চয়তাও দেওয়া হয়েছিল। তবে দেশের আইন তাদের একাধিক জঘন্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছিল। তাদের জন্যই বিপুল সংখ্যক সাধারণ নাগরিক এবং আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা নিহত হয়েছিলেন।"
সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থী মতাদর্শের বিরুদ্ধে কঠোর এবং অনড় অবস্থান গ্রহণের জন্যই তাদের এই পদক্ষেপ বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছে সৌদি আরব। তবে দোষী ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কীভাবে দেওয়া হয়েছিল তা বলা হয়নি। যদিও সৌদি আরবে সাধারণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের শিরশ্ছেদ করা হয়।
Read story in English