আর্থিক কারণে জ্বালানি সংকটে ভুগছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। সংকট মেটাতে অতীতের মতো ভারতেরই দ্বারস্থ হচ্ছে এই প্রতিবেশী দেশ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৪০ হাজার মেট্রিক টন করে পেট্রোল এবং ডিজেল আমদানি করবে দ্বীপরাষ্ট্র। সরবরাহ করবে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি)। অবশ্য এবারই প্রথম না। ২০০২ সাল থেকেই শ্রীলঙ্কায় তেল সরবরাহ করছে আইওসি। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎমন্ত্রী জানিয়েছেন, দ্বীপরাষ্ট্রে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। ঘাটতি মেটাতে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তারপরই মঙ্গলবার দ্বীপরাষ্ট্রে আইওসির নতুন করে তেল সরবরাহের কথা জানা গেল।
শ্রীলঙ্কার শক্তি মন্ত্রী উদয় গাম্মানপিলা জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রার অভাবেই দ্বীপরাষ্ট্রে জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। বহু পাম্পেই তেল নেই। সংকট মেটাতে বাধ্য হয়ে ইন্ডিয়ান অয়েলের শ্রীলঙ্কান সংস্থা 'দ্য লঙ্কা আইওসি'র দ্বারস্থ হয় কলম্বো। কিন্তু, ইন্ডিয়ান অয়েলের এই শ্রীলঙ্কান সংস্থাও প্রথমে দ্বীপরাষ্ট্রে তেল সরবরাহের রাজি হয়নি। কারণ, শ্রীলঙ্কার অন্যান্য সংস্থার মতো 'দ্য লঙ্কা আইওসি'ও বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে ভুগছে। আর, সেই কারণে তেল আমদানিও করতে পারেনি। শেষপর্যন্ত অবশ্য নয়াদিল্লির আশ্বাসে শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি সরবরাহে রাজি হয়েছে আইওসির শ্রীলঙ্কান সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক বাজারে বহু লেনদেনই ডলারের মাধ্যমে হয়। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কাছে এখন যথেষ্ট ডলার নেই। তাই জ্বালানির পাশাপাশি অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীও বিদেশ থেকে আমদানি করতে পারছে না দ্বীপরাষ্ট্র। জ্বালানি সংকটের সঙ্গে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকটও তাই এখন শ্রীলঙ্কার পরিচিত ছবি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে একমাত্র তেল শোধনাগারও অপরিশোধিত তেলের অভাবে বন্ধ।
আরও পড়ুন ওমিক্রনের নয়া ভ্যারিয়েন্টের হদিশ, আরও বেশি সংক্রামক জানালেন গবেষকরা
এই অবস্থায় বরাবরের মতোই শ্রীলঙ্কা সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। গতমাসেই কলম্বোর জন্য নয়াদিল্লি ১০০ কোটি ডলার আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। এতে দ্বীপরাষ্ট্রবাসীর খাদ্য এবং ওষুধের সংকট কিছুটা হলেও দূর হবে। পাশাপাশি, দ্বীপরাষ্ট্রের জ্বালানি সংকট মেটাতে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার তেলও সরবরাহ করবে ভারত। সঙ্গে শ্রীলঙ্কার অন্যান্য ঋণ মেটানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করা হবে বলেই নয়াদিল্লির তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তারপরই মিলল ভারত থেকে পেট্রোল-ডিজেল আমদানির খবর।