আবারও শ্রীলঙ্কায় জারি জরুরি অবস্থা। দেশের ঘোরতর অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং সরকার বিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জেরাদার করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ কড়া হাতে দমনের জন্য পুলিশ ও সেনাবাহিবনীকে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
প্রবল অর্থৈনিতক সংকটে দিশেহারা দ্বীপরাষ্ট্র। দেশের অর্থনৈতিক এই অস্থিরতার জন্য প্রেসিডেন্ট ও দেশের সরকারের বিরুদ্ধেই যাবতীয় ক্ষোভ দ্বীপরাষ্ট্রের বাসিন্দাদের। একটানা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে বিক্ষোভ-আন্দোলন। অবিলম্বে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রত্যেকের পদত্যাগের দাবিতে দিন-দিন সেই বিক্ষোভের সুর আরও চড়া হচ্ছে। প্রবল বিক্ষোভে উত্তাল হচ্ছে ভারতের পড়শি এই দেশ। এই পরিস্থিতিতে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার দেশে জরুরি অবস্থা জারি করলেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের মিডিয়া বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলির গতি মসৃণ রাখতেই ফের একবার জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবেই দেশের এই আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে এবং এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী ক্ষমতাসীন সরকার', এমনই অভিযোগ শ্রীলঙ্কার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশের। একাধিক রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে ফি দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সামিল হচ্ছেন নানা সংগঠনের মানুষজন।
আরও পড়ুন- বিমানের এমার্জেন্সি দরজা খুলে ডানা দিয়ে হেঁটে এলেন যাত্রী, কী ঘটল তারপর?
একদল পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার সংসদ ভবন চত্বর।
সংসদের আইন প্রণেতারা প্রেসিডেন্ট ও ক্ষমতাসীন সরকারকে সরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। জলকামান ব্যবহার করে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সংসদে সরকার সমর্থিত ডেপুটি স্পিকার শালীন নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন আর্থিক সংকট। অপরিহার্য জিনিসের ঘাটতি, তীব্র বৈদেশিক মুদ্রা সংকটে ধুঁকছে এই দ্বীপরাষ্ট্র। জায়গায়-জায়গায় চরম বিদ্যুৎ বিভ্রাটে প্রাণ ওষ্ঠাগত বাসিন্দাদের। ক্ষমতাসীন সরকারের জন্যই দেশের এই পরিস্থিতি, এমনই মনে করেন একাংশের বাসিন্দারা। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে শুরু হয়েছে প্রবল বিক্ষোভ।
এর আগে গত ১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের বাড়ির সামনে গণবিক্ষোভ চলে। তারপরেই দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট। এরপর ৫ এপ্রিল তিনি তা প্রত্যাহার করে নেন। এবার ফের একবার জারি জরুরি অবস্থা। জরুরি অবস্থা চলাকালীন দেশের নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশকে নির্বিচারে আটক এবং গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
Read story in English