পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে মন্দিরের মেরামতির কাজ শেষের পর তা ফেরানো হল হিন্দুদের। পাক পঞ্জাবের ভং শহরের ওই মন্দিরে হামলা চালায় কয়েকশো উন্মত্ত জনতা। মন্দিরের বেশ কিছু অংশে ভাঙচুর চালানো হয়। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের এই পীঠস্থানে হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে। একাধিক সংগঠন ইমরান খানের সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মন্দিরে হামলা চালানোর অভিযোগে ১৫০ জনেরও বেশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। ৯০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরটির পুনর্গঠনেও তৎপরতা নেয় ইমরান খানের সরকার। শেষমেশ মন্দিরটির পুনর্গঠনের পর ফের তা তুলে দেওয়া হয়েছে হিন্দুদের হাতে।
লাহোর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দূরে ভং শহর। পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খান জোলার এই শহরেই রয়েছে হিন্দুদের একটি মন্দির। কয়েক দিন আগে ওই মন্দিরে চড়াও হয় শতাধিক জনতা। মন্দিরে ঢুকে পড়ে দেদার ভাঙচুর চালায় তারা। মন্দিরের দেব-দেবীর মূর্তি, দরজা, জানলা ও দেওয়াল ভাঙচুর করা হয়। বাঁশ, লাঠি হাতে মন্দিরে ঢুকে কার্যত কয়েক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায় কয়েকশো উন্মত্ত জনতা। মন্দিরের বেশ কিছু সামগ্রীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে রহিম ইয়ার খান জেলার শীর্ষ পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, সরকারের তরফে মন্দিরের পুনর্গঠনের কাজ করা হয়েছে। ফের মন্দিরটি স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, মন্দিরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে ইতিমধ্যেই ৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করছে পুলিশ। স্থানীয় প্রশাসনের আরও এক কর্তা জানিয়েছেন, হায়দরাবাদ থেকে মন্দিরের মূর্তি আনানোর ব্যবস্থা করেছে পাক সরকার।
আরও পড়ুন- প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই NSO গ্রুপের, পেগাসাস ইস্যুতে দাবি মন্ত্রীর
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের মন্দিরে হামলার ঘটনা এই নতুন নয়। এর আগেও পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়স্থানে হামলা হয়েছে। সম্প্রতি পাক পঞ্জাবের ভং শহরের ওই মন্দিরে হামলা চালায় কয়েকশো উন্মত্ত জনতা। মন্দিরে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের পরপরই পাকিস্তানের একাধিক রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে বহু সংগঠন প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নেই বলেও অভিযোগ ওঠে কোনও-কোনও মহল থেকে। শুরু থেকেই এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদের আঁচ পেয়ে তৎপরতা নেয় ইমরান খানের সরকার। দোষীদের রেয়াত করা হবে না বলে আগেই বার্তা দিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে মন্দিরের পুর্নগঠনেরও আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। আপাতত মন্দিরটি পুনর্গঠনের পর ফের তা খুলে দেওয়া হয়েছে।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন