মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এই ঐতিহাসিক ভাষণে ৪৪ বছর বয়সী ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়াকে সন্ত্রাসবাদী দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ইউক্রেনের আকাশ পথ সুরক্ষিত করতে কঠোর বিধিনিষেধের প্রয়োজন। একটি ভার্চুয়াল ইভেন্টের মাধ্যমে তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এদিন তাঁর বক্তব্য পেশ করেন। তাঁর এই বক্তৃতা বহুল প্রশংসা অর্জন করেছে। সেই সঙ্গে তিনি রাশিয়াকে দমন করার জন্য ব্রিটেনের কাছেও সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, “দয়া করে এই দেশের (রাশিয়া) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার চাপ বাড়ান এবং অনুগ্রহ করে এই দেশটিকে সন্ত্রাসী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিন। দয়া করে নিশ্চিত করুন যে আমাদের ইউক্রেনীয় আকাশ নিরাপদ। অনুগ্রহ করে নিশ্চিত করুন ইউক্রেনের গৌরব এবং যুক্তরাজ্যের গৌরবের বিষয়টি ,”।
একই সঙ্গে একটি আবেগপূর্ণ ভাষণে তিনি বলেন, "আমরা হাল ছাড়ব না, আমরা হার মানব না, শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব, এবং আমরা জয়ী হব"। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলার পর থেকেই তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রেখে চলেছেন, সেই সঙ্গে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। রাশিয়াকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার জন্য এবং সেদেশের ওপর চাপ বাড়ানোর জন্য মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বিডেন, ফরাসি রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সঙ্গেও ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন জেলেনস্কি।
আরো পড়ুন: রহস্যময় ‘Z’ এখন রাশিয়ার প্রতীক! কী এই চিহ্নের মাহাত্ম্য?
ব্রিটিশ সাংসদ ও রাজনীতিবীদদের উদ্দেশে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি একজন নাগরিক হিসেবে, একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এবং অনেক স্বপ্ন নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।’ ভাষণ চলাকালীন এক সময় তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে ব্রিটিশ যুদ্ধ প্রচেষ্টার সঙ্গে তুলনা করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যখন নাৎসিরা আপনাদের দেশ কেড়ে নিতে চেয়েছিল, তখন আপনারা সেটিকে রক্ষা করেছেন। আপনাদের ব্রিটেনের জন্য লড়াই করতে হয়েছিল।’তিনি আরও বলেন যে, তার দেশের লোকেরা রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা দেখিয়েছে। ‘রাশিয়ার ওপর অন্যান্য দেশের নিষেধাজ্ঞাগুলোকে স্বাগত জানাই। তবে এটি যথেষ্ট নয়। ইউক্রেনের ওপর একটি নো-ফ্লাই জোন থাকা দরকার।’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্তের জন্য আইসিসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন "এটি যথেষ্ট নয়। সন্ত্রাস বাদী দেশ হিসাবে তকমা পাক রাশিয়া'।
ইউক্রেনে হামলা করায় রাশিয়াকে এবার ভাতে মারার তোড়জোড় করেছে গোটা বিশ্ব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমী দুনিয়া রাশিয়াকে সবদিক থেকে কোণঠাসা করতে চাইছে। এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডো বাইডেন রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ করার কথা ঘোষণা করলেন। আমেরিকা আর রাশিয়া থেকে পেট্রোপণ্য এবং প্রাকৃতিক গ্যাস নেবে না। রুশ অর্থনীতির শিরদাঁড়া ভাঙতে কোমর বেঁধেছে আমেরিকা।