গত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত আফগানিস্তান। আফগান নিরাপত্তা বাহিনী এবং তালিবানদের সংঘর্ষে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রই। আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে সমর্থন করার প্রয়াসের অংশ হিসেবেই গত ৩০ দিনে ছয় থেকে সাতবার সমগ্র আফগানিস্তান জুড়ে বিমান হামলা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ আধিকারিক স্বীকার করেন, তালিবানরা সংঘর্ষে কৌশলগত নীতির প্রয়োগ করতে শুরু করেছিল এবং তারা আফগানিস্তানের প্রায় অর্ধশতাধিক জেলা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। ফলতই আফগান নিরাপত্তা বাহিনী যথেষ্টই সমস্যার মধ্যে উপনীত হয়। যদিও বা পেন্টাগন সূত্রে খবর, আফগানিস্তানের বিমান হামলা সম্পর্কে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কার্বি বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান ,স্পষ্ট ভাবে তিনি কিছু বলতে না পারলেও বিগত বেশ কয়েকটি দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এএনডিএসএফ (আফগান ন্যাশনাল ডিফেন্স এবং সিকিউরিটি ফোর্সেস)-কে সমর্থন করার জন্য বিমান হামলার মাধ্যমে নিজেদের কাজ করেছে। কিন্তু এই এয়ার স্ট্রাইকের আদৌ কোনও কৌশলগত উদ্দেশ্য ছিল কিনা সেই সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণা নেই। তবে তাঁরা এই বিমান হামলার মাধ্যমে যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছেন এবং প্রয়োজনে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে তাঁরা আবারও এই পথ অনুসরণ করতে পারেন।
আরও পড়ুন কান্দাহারে আফগান সেনা-তালিবান সংঘর্ষে নিহত ভারতীয় চিত্র সাংবাদিক
আফগান বাহিনীর সমর্থনে মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার, সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেনজি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিমান হামলার কর্তৃত্ব বজায় রাখবেন বলে জানা গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ তালিবানদের বিরুদ্ধে আফগান সেনাকে সাহায্য করবে বলে প্রত্যাশা।
ভয়েস অফ আমেরিকা সূত্রে খবর, মার্কিন প্রতিরক্ষা আধিকারিক জানিয়েছেন, তালিবানরা আফগান বাহিনীর সামরিক সরঞ্জাম আটক করে রেখেছিল। সেগুলি উদ্ধার করতেই বিমান হামলা চালানো হয়েছে। সরঞ্জামের পাশাপাশি শত্রু বাহিনী, তাদের ডেরার প্রতিও লক্ষ্য ছিল। আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে পরাস্ত করতে করতে আফগানিস্তানের প্রায় অধিকাংশই নিজেদের আয়ত্বে আনতে সক্ষম তালিবানরা। তাই বাধ্য হয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপের কারণে নিকটবর্তী অঞ্চল সুরক্ষা পায়।
বুধবার জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি জানিয়েছেন, তালিবান বাহিনী আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর ১৭টির উপর নিজেদের চাপ বৃদ্ধি করছে। তিনি আরও জানান, সম্পূর্ণ আফগানিস্তানে তালিবানদের দখল, যুদ্ধনীতি, সামাজিক পরিস্থিতি ভাঙনের উপর নজর রাখা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড সম্প্রতি জানিয়েছেন, যে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ৯৫ শতাংশেরও বেশি সম্পূর্ণ। রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন বলেছেন, আগস্টের শেষ নাগাদ শেষ প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে। আফগানিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সুরক্ষিত রাখতেই প্রায় ৬৫০ জন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে যাতে শান্তি বজায় থাকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন