তালিবানরাজ, সঙ্গে পর পর বিস্ফোরণে ধ্বস্ত কাবুল। নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়া শিখ ও হিন্দুদেরও অপেক্ষার সীমা বাড়ল। বাড়ছে আতঙ্কও। ৩১ তারিখের মধ্যে দেশ ছাড়তে না পারলে কার্যত মৃত্যু নিশ্চিত বলেই এখন মনে করছেন সেদেশের সংখ্যালঘুরা।
ইতিমধ্যেই ভারতে শরণার্থী হয়ে এসেছেন ৭০ আফগান শিখ ও হিন্দু। আসার কথা আরো অনেকের। পরিসংখ্যান অনুসারে আফগানিস্তানে এখনও ২১০ দন আফগাম শিখ ও হিন্দু আটকে রয়েছেন। প্রাণে বাঁচতে এঁদের সবাই সেদেশ ছাড়তে চান। বৃহস্পতিবারই এঁদের অনেকের ভারতগামী বিমান ধরার কথা ছিল। কিন্তু, পর পর বিস্ফোরণে আপাতত সেগুড়ে বালি। বিমানবন্দরের পথে রওনা হওয়ার আগেই ঘটে হাড় হিম করা বিপত্তি। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক না হলে দেশ ছাড়ার আশা দেখছেন না আফগান শিখ ও হিন্দুরা।
আরও পড়ুন- ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার সময় এসেছে’, বিস্ফোরণের কড়া নিন্দা করে বার্তা ভারতের
কাবুলের গুরুদ্বারে আশ্রয় নেওয়া কুলবিন্দর সিং ফোনে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "গুরুদ্বারে আমরা সবাই সুরক্ষিত। বিস্ফোরণের সময়ে আমাদের কেই বিমানবন্দরে বা বিমানবন্দরের পথে ছিল না।"
বুধবার থেকেই ১৪০ আফগান শিখ ও হিন্দু ভারতে আসার জন্য কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। বৃহস্পতিবারই তাঁদের বিমানে ওঠার কথা ছিল বলে জানা যায়। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকালে তারা বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেন। সেই সময়ই গুলি চলার শব্দ কানে আসে তাদের। ফলে আর ঝুঁকি নেননি তারা। ফিরে আসেন গুরুদ্বারে। না হলে হয়তো এইসব আফগান সংখ্যালঘুদেরও বিস্ফোরণের ভয়াবহতার মুখোমুখি হতে হতো।
আরও পড়ুন- কাবুল বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৩, হামলার নেপথ্যে আইএস, দাবি আমেরিকার
এই বিস্ফোরণের ফলে তাঁদের ভারতে ফেরার অপেক্ষা বাড়ল বলেই মনে করছেন সেদেশের সংখ্যালঘুরা। গুরুদ্বার থেকে কাবুল বিমানবন্দর মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু এখন সেই দূরত্বও কয়েক হাজার বলে মনে হচ্ছে, আতঙ্ক আরও গভীর হচ্ছে বলে দাবি আফগান হিন্দু ও শিখদের। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক আফগান শিক জানান, বুধবার রাতেই গুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল। পরিস্থিতি য়ে খারাপ হবে তার আঁচ মিলেছিল। এরপরই বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া শিখ, হিন্দুরা বুধবার রাত ২টোয় গুরুদ্বারে ফিরে আসেন। এই শিখ ব্যক্তির কথায়, "সাতটি বাসে আমরা বিমান ছাড়ার প্রায় ১২ ঘন্টা আগে বিমানবন্দরের দিকে রওনা হই। ভারতে যাওয়ার কথা ছিল আমাদের। বিমানবন্দরে প্রচুর ভিড় ছিল। তার মাঝেই গুলির শব্দ শোনা যায়। আমাদের দলে শিশু ও মহিলা থাকায় দেরি না করে আমরা ফিরে আসি। পরে বিস্ফোরণ ঘটল। আবার কখন ভারতের উড়ান ছাড়বে তার কোনও খবর নেই। ৩১ অগস্টের মধ্যে সবাই দেশ ছাড়তে পারবো কিনা জানি না। ভেবেই ভয় লাগছে যে তারপর বিমানবন্দর তালিবাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।"
দিল্লি শিখ গুরুদ্বার পরিচালনা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি মানজিন্দর শিরসার কথায়, "বিস্ফোরণের ফলে কাবুলের পরিস্থিতি এখন দিশেহারা। শুধু আতঙ্ক শহরজুড়ে। আফগানিস্তান থেকে ফের ভারতে ফেরার বিমান নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।"
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন