কমছে দৈনিক সংক্রমণ। খুলে যাচ্ছে স্কুল-কলেজ। অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে জীবনযাত্রা। কেউ কেউ মনে করছে, এবার হয়তো অবসান হল অতিমারি। যদিও আইসিএমআরের তরফে বলা হয়েছে আগামী মার্চ থেকেই কবে সংক্রমণ। উন্নতি হবে পরিস্থিতি। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়ে দিল, এমন ভাবলে সর্বনাশ হবে। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে WHO-এর মুখ্য বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন বললেন, যে কোনও সময় একটা ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব হতে পারে এবং আমরা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারি। তাই সতর্ক থাকতে হবে। সাধারণ মানুষের সতর্কতাই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার এক ও একামাত্র রক্ষাকবচ।
স্বামীনাথনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, অতিমারির শেষ কবে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না কেউ সেটা অনুমান করতে পারবে। অতিমারি শেষ হয়ে গেছে এটা ঘোষণা করা উচিত না, কিছু মানুষ যেমন করছে। সমস্ত সাবধানতা এখনই ঝেড়ে ফেললে বিপদ হবে। সাবধানতা চালিয়ে যেতে হবে এবং আশাকরি, ২০২২-এর শেষে গিয়ে আমরা অনেকটা ভাল পরিস্থিতির মুখোমুখি হব।’
আরো পড়ুন:বুস্টার ডোজ নিয়েও দ্বিতীয়বার করোনা সংক্রমিত প্রিন্স চার্লস
উহানের ল্যাবরেটরি থেকেই করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি, এই তত্ত্ব কি খারিজ করে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা? স্বামীনাথন বললেন, কোনও তত্ত্বই খারিজ করা হয়নি। যে বিজ্ঞানীরা চীনে গিয়েছিলেন, তাঁদের মনে হয়েছে, জীবাণুটি এসেছে কোনও জন্তু-জানোয়ার থেকে। হয় কোনও বন্য জন্তু, কিংবা বন্য জন্তু যাকে পোষ মানানো হয়েছে অথবা গৃহপালিত জন্তু। জন্তু, নাকি পাখি নাকি বাদুড় এখনও নিশ্চিত নয়। তত্ত্ব খাড়া করতে গেলে চীনে গিয়ে আরও তথ্য বিচার করা প্রয়োজন।
যদিও কয়েকদিন আগেই হু-এর তরফে দাবি করা হয়েছিল, ওমিক্রন করোনার সাম্প্রতিকতম সংস্করণ। কিন্তু, এটাই শেষ না। হয়তো কিছুদিন পর হানা দেবে ওই ভাইরাস। কিন্তু, তা বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। আর, সেই সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই জন্যই ভ্যাকসিনেশনে বেশি করে জোর দিতে হবে। পাশাপাশি, সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে সতর্কতাও জরুরি।
এর আগে হু ২০২১-এর ২৬ নভেম্বর জানিয়েছিল, করোনার বি.১.১.৫২৯ ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ আছে। তারপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিএ.১, বিএ.১.১, বিএ.২ এবং বিএ.৩ ওমিক্রনেরই প্রজাতি।এরমধ্যে বিএ.২ বিশ্বজুড়ে ছড়াতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন হু-এর বিজ্ঞানীরা। ওমিক্রন অন্যান্য সব ভাইরাসের চেয়ে এখনও পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে।
তবে, যে দেশগুলোয় প্রথমে ছড়িয়েছিল, ২০২২-এর জানুয়ারির পর দেখা যাচ্ছে যে সেই সব দেশগুলোয় ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। আর ৩১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেখা যাচ্ছে, গোটা বিশ্বেই করোনার সংক্রমণ আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৭ শতাংশ কমে গেছে। এটা যেমন আশার কথা। তেমনই নতুন করে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সাত শতাংশ বেড়েছে। আর, তাতেই উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বজুড়ে শুধুমাত্র ওমিক্রনের দাপটেই প্রায় ৫ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।