মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের (পূর্বে যা ক্যাডবেরি ইন্ডিয়া নামে পরিচিত ছিল) বিতর্কিত কর ফাঁকি মামলার নিষ্পত্তি হল। কেন্দ্রীয় সরকারের 'সবকা বিকাশ' প্রকল্পের সুবিধা নেয় এই সংস্থা। ৫৮০ কোটির কর ফাঁকির অভিযোগ থাকলেও ৪৩৯ কোটি টাকা দিয়েই অভিযোগ থেকে মুক্ত হয় মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটড। সূত্র মারফত এমনটাই জানতে পেরেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
কর ফাঁকি মামলার নিষ্পত্তির জন্যই ২০১৯ সালে 'সবকা বিকাশ' প্রকল্পের সূচনা করে মোদী সরকার। সেই বছরের ডিসেম্বরে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করে মন্ডলেজ। ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিত কর ফাঁকি মামলা থেকে মুক্ত হয় সংস্থাটি।
চিফ ভিজিল্যান্স কমিশন মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের কর ফাঁকির মামলাটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে রেফার করে। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে সিবিআই। কর ফাঁকির এই দুর্নীতির সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বেশ কিছু আধিকারিকও জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের অধীনে মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিল সিবিআই। তবে, সেই মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: প্যান কার্ড হারিয়ে গেছে? কত টাকা দিয়ে আবেদন করবেন নতুন কার্ডের জন্য?
সংস্থার মুখপাত্রের কথায়, 'হিমাচলের বাড্ডি প্লান্টের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অধীন প্রকল্পে আবেদন করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তবে, বিষয়টি ২০১০ সালের। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান হতে আরও বেশ কয়েক বছর সময় লাগতে পারত। ২০১৯-এ দেশের বিভিন্ন সংস্থার কর ফাঁকি নিষ্পত্তিতে সবকা বিশ্বাস প্রকল্পের সূচনা হয়। আইনি জটিলতা কাটাতে সেই সুযোগকেই আমরা কাজে লাগিয়েছি।' মুখপাত্র জানান, এবার ভারতের বাজারে আরও ভালো ব্যবসা করতে উদ্যোগী এই সংস্থা।
আরও পড়ুন: উবের ইটসে অর্ডার দিলে এবার খাবার পাঠাবে জোম্যাটো
হিমাচল প্রদেশের বেশ কিছু অঞ্চলে কর ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। বাড্ডিতে প্লান্টের মাধ্যমে সেই সুবিধা নিয়েছিল মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটেড। কিন্তু, সেন্ট্রাল এক্সসাইজের ডায়েরেক্টর জেনারেল জানতে পারেন প্লান্ট তৈরির আগে থেকেই সেই সুবিধা ভোগ করছে সংস্থাটি। 'ভুতুড়ে' প্লান্টের বিনিময়ে এই সুবিধা ভোগের জন্য কর ফাঁকির অভিযোগ ওঠে মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এর জন্য ২০১৫ সালে ৫৮০ কোটি টাকা জরিমান করা হয়।
২০১০ সালে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিল, বেশ কয়েকটি নির্দিষ্ট পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে ১০ বছরের জন্য এই কর ছাড়ের সুবিধা পাবে সংস্থাগুলি। তবে এক্ষেত্রে কারখানা গড়তে হবে ২০১০ সালের মার্চের মধ্যেই। কিন্তু, মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটেড তার বেশ কয়েকদিন পরে পরে বাড্ডির প্লান্টটি তৈরি করেছিল। অথচ সুবিধা ভোগ করছিল প্রথম থেকেই।
এর আগে মার্কিন সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অভিযোগ করে যে ক্যাডবেরি ইউনিট বাড্ডিতে চকোলেট প্লান্টকে সম্প্রসারণের প্রচেষ্টার মাধ্যমে এফসিপিএ আইন লংঘন করেছে। ২০১৭ সালে ১৩ মিলিয়ান ডলারের বিনিময়ে সেই অভিযোগেরও নিষ্পত্তি করেছিল মন্ডলেজ ইন্ডিয়ান ফুড প্রাইভেট লিমিটেড।
Read the full story in English