Advertisment

কমিশনের কড়া নজর সত্ত্বেও প্রাণহানি, তিন দফাতেই রক্তাক্ত বাংলা

Lok Sabha Election 2019: কমিশনের কড়া নজরদারিকে উপেক্ষা করেই লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মাটিতে ঝরল রক্ত, বলি গেল প্রাণ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
West Bengal Lok Sabha Election 2019 Controversies: বাংলায় কেমন হল ভোটযুদ্ধ? সাত দফার সাতকাহন একনজরে

ভোটের দিন চোপড়ার ছবি।

General Election 2019: উনিশের নির্বাচনে বাংলাকে এবার একটু বেশিই ‘গুরুত্ব’ দিয়ে দেখছে নির্বাচন কমিশন। সাত দফায় নির্বাচন আয়োজনের পাশাপাশি বিশেষ পর্যবেক্ষক, বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক যেমন নিয়োগ করেছে কমিশন, তেমনই বাংলার বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ রাজ্যে গণতন্ত্রকে কবর দেওয়া হয়েছে, বিরোধীদের এমন অভিযোগের মুখে এবার লোকসভা নির্বাচনে কোমর বেঁধে মাঠে নামার বার্তা দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এমনকি, প্রথম, দ্বিতীয় দফার থেকে তৃতীয় দফায় অতিরিক্ত বাহিনীকে ভোট ময়দানে নামিয়েছিল কমিশন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কি রক্তপাতহীন নির্বাচন সম্ভব হল না। কমিশনের কড়া নজরদারিকে উপেক্ষা করেই লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মাটিতে ঝরল রক্ত, বলি গেল প্রাণ।

Advertisment

লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন, এখানে

একনজরে জেনে নিন, আপাতত এই ৩ দফায় বাংলায় কী কী অশান্তির ঘটনা ঘটেছে-

* তৃতীয় দফার ভোট (২৩ এপ্রিল)- লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফাতেই প্রথমবার বাংলায় প্রাণ ঝরল। এদিন মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষে বাঁধে। সেই সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম টিয়ারুল শেখ। টিয়ারুল কংগ্রেস কর্মী বলে দাবি। এছাড়া জখম হয়ে আরও ২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদিন জখম অবস্থায় টিয়ারুল শেখকে বহরমপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে ঘর থেকে মিলেছে ভোটকর্মীর মৃতদেহ। মৃত ব্যক্তির নাম বাবুলাল মুর্মু। তিনি কুশমুন্ডি সরলা স্কুলের শিক্ষক বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: বাংলায় লোকসভার তৃতীয় দফায় জোড়া মৃত্যু, কংগ্রেস কর্মী খুনের পর মিলল ভোটকর্মীর দেহ

তৃতীয় দফার ভোটের সকাল থেকেই তেতে ছিল মুর্শিদাবাদ। ডোমকলের টিকটিকিপাড়ায় ব্যাপক বোমাবাজির খবর মিলে। মানিকনগরে তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামীর উপর হামলার অভিযোগও উঠেছে। বোমা-লাঠি নিয়ে হামলায় জখম কাউন্সিলরের স্বামী-সহ ২। এ ক্ষেত্রে সিপিএম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল। তবে এ সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম-কংগ্রেস। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার কুমরিপুরে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের পোলিং এজেন্টকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে, মালদার কালিয়াচকের আলিপুরে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। বোমার ঘায়ে জখম হন ৩ জন কংগ্রেস কর্মী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ কংগ্রেসের। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্যের শাসকদল।

* দ্বিতীয় দফার ভোট (১৮ এপ্রিল)- বাংলায় লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় যেসব অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, সে তালিকার শীর্ষে চোপড়া। ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। প্রথমে ৩১নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়দের একাংশ। পরে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর ভোট দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের নিয়ে বুথের দিকে রওনা দেয় পুলিশ। এমতাবস্থায় ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট দেব না’’, কার্যত এমন দাবিই তোলেন স্থানীয়দের একাংশ। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ভোট দিতে যেতে চান না বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের হাতাহাতিও বাধে। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকে এবং পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়দের একাংশ। স্থানীদের তৎপরতায় এক তৃণমূল কর্মীকে পাকড়াও করে পুলিশ। ওই তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধেই ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এদিকে, এই ঘটনার পর আচমকাই পুলিশের উপর হামলা চালায় গ্রামবাসীদের একাংশ, এলাকায় বোমাবাজিরও অভিযোগ ওঠে। এরপরই বিক্ষোভকারীদের হঠাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। পরের দিনও চোপড়ায় হিংসার ঘটনা ঘটে, পায়ে গুলি লাগে সপ্তম শ্রেণির এক পড়ুয়ার।

আরও পড়ুন: বাংলাই তোমায় টাইট করবে, শাহকে হুঙ্কার মমতার

দ্বিতীয় দফার ভোটে রায়গঞ্জের বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে কয়েকজন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। ধূপগুড়িতে তৃণমূল সমর্থকের খড়ের গাদায় আগুন লাগানোর অভিযোগও উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পদ্মবাহিনী।

* প্রথম দফার ভোট (১১ এপ্রিল)- লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় মাথাভাঙায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ ৩ জনের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জখম হন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ ৩ জন। অন্যদিকে, তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় দিনহাটায়। ভোটারদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল কর্মীদের পাল্টা মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। শীতলকুচিতে মহিলা ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এদিকে, কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী গোবিন্দ রায়ের গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে শাসকদলের দিকে।

প্রথম দফার ভোটের শেষে নতুন করে উত্তাল হয়ে ওঠে কোচবিহার। সাড়ে তিনশো বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজে অবস্থানে বসেন ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। সংশ্লিষ্ট কলেজটিকে নির্বাচনের ডিসি-আরসি কেন্দ্র করা হয়েছে। সেদিন সন্ধ্যায় প্রথমে হাতাহাতি বেঁধে যায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের।

tmc bjp CONGRESS Mamata Banerjee election commission CPIM lok sabha 2019 General Election 2019
Advertisment