গায়ক আদনান সামি সম্প্রতি এক আবেগঘন সাক্ষাৎকারে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং পারিবারিক স্মৃতি সম্পর্কে নানা কথা বলেছেন। গায়িকার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “তিনি শুধু ভারতরত্ন বা নাইটিঙ্গেল অফ ইন্ডিয়া ছিলেন না, তিনি ছিলেন এমন এক কণ্ঠের অধিকারী, যিনি মাইক্রোফোন আর মানুষের হৃদয়কে একসাথে বাঁধতে জানতেন।”
আদনানের বাবার শৈশব জুড়ে লতা দিদি
আদনান স্মরণ করলেন, তাঁর বাবা আরশাদ সামি খান কতটা বড় ভক্ত ছিলেন লতা মঙ্গেশকরের। তাঁর বাবা রীতিমতো পুজো করতেন তাঁর। আদনান বলেন, "ছোটবেলায় আমার বাবা প্রতিদিন রাতে ঘুমোবার আগে শুনতেন ‘ধীরে সে আজা রি আঁখিয়ান মে’। উনি প্রায় সব গানই গাইতে পারতেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে লতার গান ছিল সঙ্গীর মত। ফলে আমার জন্য লতা দিদিরর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়াটা শুধু পেশাগত নয়, ব্যক্তিগত গর্বও বটে।”
Bollywood News: মাত্র ১৩ বছরে বিয়ে! বিয়ে করেই ইসলাম গ্রহণ করেন এই শিল্পী, সয়েছেন অসহ্য যন্ত্রণা, চেনেন তাঁকে?
বাবার মৃত্যুশয্যায় এক স্মরণীয় মুহূর্ত
আদনান সামির জীবনের অন্যতম আবেগঘন মুহূর্ত ছিল তাঁর বাবা যখন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন। তখন তিনি কিছুতেই বাবার মুখে হাসি ফেরাতে পারছিলেন না। শিল্পী বলেন, "তিনি তখন অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে ভুগছিলেন, কার্যত মৃত্যুশয্যায় ছিলেন। আমার নিজেকে এত অসহায় লাগত। তখন একদিন ভাবলাম, একবার দিদিকে (লতাজি) ফোন করি।”
লতা মঙ্গেশকর সেই ফোন ধরে তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর কথায়, "তিনি (বাবা) তখন শয্যাশায়ী। হঠাৎ যখন দিদির কণ্ঠ শুনলেন, মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল তাঁর। চোখে জল ছলছল করছিল। আর মুখে শুধু বলে যাচ্ছিলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে আপনার গান শুনি’। কী আশ্চর্য তারপর! দিদি আমার বাবার জন্য গান গাইতে লাগলেন। আর সেই গান শুনে, তাঁর মুখে যে শান্তি ফুটে উঠেছিল, সেটা আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দৃশ্য।”
Sayak Chakraborty: নাম লেখাতে চান রাজনীতিতে? ২১-শে জুলাইয়ের আগেই মনের ইচ্ছের কথা জানালেন সায়ক
মেয়ে মদিনার সাথেও লতার বন্ধন
আদনান আরও এক মধুর স্মৃতির কথা শোনান। তাঁর মেয়ে মদিনার জন্মের পর তিনি লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে মেয়ের কিছু ছবি ভাগ করে নিয়েছিলেন। শিল্পী বলেন, "দিদির একটা শখ ছিল। ফটোগ্রাফি আর ফটো এডিটিং-র। আমি যখন মদিনার ছবি পাঠাতাম, তিনি সেই ছবিগুলো এডিট করে ফেরত পাঠাতেন। একবার তো শুধু মদিনার পায়ের আঙুলের উপর জুম করে রঙ ঠিক করে পাঠিয়েছিলেন। এমন যত্ন, এমন মমতা, সত্যিই খুব স্পেশাল মানুষকে ছাড়া সম্ভব না।”