উত্তমকুমারের ডক্যুফিচারে আদালতের স্থগিতাদেশ, পিছিয়ে গেল মুক্তির দিন
মহানায়কের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে, এই অভিযোগেই 'যেতে নাহি দিব'-র বিরুদ্ধে আদালতে যান মহানায়কের পরিবার। তার জেরেই বৃহস্পতিবার তথ্যচিত্রের মুক্তির বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারি করল আলিপুর কর্মাশিয়াল আদালত।
উত্তমকুমার বাঙালির ভালবাসার নায়ক, বাঙালির আবেগ। সেই মহানায়ককে নিয়েই ডক্যুফিচার 'যেতে নাহি দিব' তৈরি করেছেন পরিচালক প্রবীর রায়। তবে বাঙালির ম্যাটিনি আইডলকে নিয়ে তৈরি এই ডক্যুফিচারই এবার আইনি জটে। ডক্যুমেন্টরিতে মহানায়কের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে, এই অভিযোগেই 'যেতে নাহি দিব'-র বিরুদ্ধে আদালতে যান মহানায়কের পরিবার। তার জেরেই এদিন আলিপুর কর্মাশিয়াল আদালত ডক্যুফিচারের মুক্তিতে স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
Advertisment
প্রায় দু'বছর ধরে একটু একটু করে ডক্যুফিচার তৈরি করেছেন প্রবীরবাবু। অর্থনৈতিক জটিলতার মধ্যে পড়েও হাল ছাড়েন নি। এবার মুক্তির ঠিক দু'দিন আগেই আদালতের নির্দেশে অনিশ্চয়তার মুখে 'যেতে নাহি দিব'। আগামী ২ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করেছে আদালত।
পরিচালক প্রবীর রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আদালতকে 'মিসলিড' করা হয়েছে, এবং যেহেতু বিষয়টি উত্তমকুমার সংক্রান্ত, তাই কোর্ট নিজের কাজ করেছে। তবে আমি মহানায়ককে অসম্মান করার মতো কোনও রকম কাজ করি নি। ওঁর জীবনের শেষ সাত বছর ওঁকে দেখেছি। সেই অভিজ্ঞতা, সুপ্রিয়া দেবীর কাছ থেকে শোনা এবং লোকমুখে ওঁর সম্পর্কে চর্চিত তথ্যের ভিত্তিতেই ওঁর জন্ম থেকে মৃত্যুর সময়কাল দেখানো হয়েছে ডক্যুফিচারটিতে। তাছাড়া তাঁরা (উত্তম-সুপ্রিয়া) সতেরো বছর একসঙ্গে ছিলেন (১৯৬৩-১৯৮০), তাই সুপ্রিয়া দেবীকে বাদ দিয়ে ওঁকে চিত্রায়িত করা সম্ভব নয়।"
প্রবীরবাবু আরও বলেন, "উত্তমকুমারের পরিবারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল, কিন্তু তাঁরা ছবিটা দেখবেন বললেও পরে আর কিছু জানালেন না। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। তাছাড়া ওঁদের বাড়ির প্রায় কেউই জীবিত নেই যাঁরা (নাতনি নবমিতার ছ'মাস বয়সে মহানায়ক চলে যান) ওঁকে সেভাবে দেখেছে। ওদের চেয়ে আমি বেশি চিনি-জানি। এত কষ্ট করে ছবিটা তৈরি করেছি, কিন্তু আদালতে যখন বিষয়টি গিয়েছে, আমাকেও সেখানে গিয়েই নিষ্পত্তি খুঁজতে হবে।"
‘যেতে নাহি দিব’ ছবিটিতে মহানায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সুজন মুখোপাধ্যায়। এছাড়া ছবির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন টেলিপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত ও সুদীপ সরকার। আগামীকাল, ২২ নভেম্বর, মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল এই ছবির। এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও মহানায়কের পৌত্র গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে কোনওরকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।