/indian-express-bangla/media/media_files/2025/07/24/anand-l-rai-ranjhanaa-2025-07-24-13-06-15.png)
কেন এত চটলেন তিনি...
২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আনন্দ এল রাই পরিচালিত রোমান্টিক ছবি- 'রানঝানা', যার বিতর্কিত ও আবেগঘন পরিণতির পরেও একটি নিবেদিত অনুরাগী শ্রোতাবলয় তৈরি হয়েছিল, তা এখন ১২ বছর পর আবারও প্রেক্ষাগৃহে ফিরছে। তবে এবার ছবির কিছু অংশে থাকবে "কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত" পরিবর্তন, যা ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
মূল সিনেমায়, ধনুশ অভিনীত কুন্দন নামের চরিত্রটি একটি রাজনৈতিক জনসভায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। সে একটি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। যার বিষয়ে সোনম কাপুরের চরিত্র সচেতন থাকলেও কিছু করতে পারে না। কুন্দন নিজেও পরিস্থিতি জানতো, তবু ভালোবাসার খাতিরে সে কিছু বলেনি। দর্শকদের কাছে এই করুণ সমাপ্তিই ছিল গল্পের হৃদয়। বর্তমানে সাইয়ারা ছবিকে যারা ট্রমা বলছেন, তাঁরা আসল ট্রমা জানেন না।
এবার স্টুডিও ইরোস ইন্টারন্যাশনাল ঘোষণা করেছে যে তারা ১ আগস্ট রানঝানা পুনরায় মুক্তি পাচ্ছে, যেখানে কিছু দৃশ্য 'পুনঃকল্পনা' করা হয়েছে। পরিচালক আনন্দ এল রাই এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, "কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণাটি দেখে আমি ব্যাপারটি জানতে পারি। দর্শকরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন করছে, কেন ছবির সমাপ্তি পাল্টানো হচ্ছে। আমার এটা কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না।"
রাই জানান, তিনি ইরোস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করেছে। এখন তিনি আইনিভাবে চিঠি পাঠিয়ে দাবি করবেন, যেন তার নাম এই নতুন সংস্করণ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তার কথায়, "যদি আপনি চলচ্চিত্র নির্মাতাকে সম্মান না করেন, তাহলে অন্তত দর্শকদের কথা তো ভাবুন!"
Johny Lever: ছেলের শরীরে বাসা বাঁধে ক্যানসার, সন্তানের মঙ্গলের জন্য পা…
স্টুডিওর তরফে ইরোস মিডিয়া ওয়ার্ল্ডের সিইও প্রদীপ দ্বিবেদী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, "রানঝানার একমাত্র এবং একচেটিয়া কপিরাইট আমাদের হাতে। আমরা আইনি এবং নৈতিকভাবে এটি পুনরায় প্রকাশ করার অধিকার রাখি।" তিনি আরও যোগ করেন, এই নতুন সংস্করণটি কোনও পরিবর্তন নয়, বরং একটি সংযোজন, যা মূল সিনেমার ‘শৈল্পিক আত্মা’ অক্ষুণ্ন রেখেই তৈরি হয়েছে। নতুন প্রজন্মের দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য জেনারেটিভ এআই-এর মতো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
তবে পরিচালক রাই একে বিপজ্জনক নজির হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, "আমি এখন বুঝেছি, ভবিষ্যতে ডটেড লাইনে সই করার আগে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। এটা আমার জন্য এক বড় শিক্ষা। স্টুডিওগুলো এখন শুধু টাকা দেখতে পায়, তারা আর শিল্পকে সম্মান করে না।" তিনি আরও বলেন, "এআই যে ভবিষ্যৎ, তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু ভবিষ্যৎ গড়তে ব্যবহার করুন, অতীতকে বদলাতে নয়। শিল্পের প্রতি যদি সম্মান না থাকে, তবে দর্শকও একদিন মুখ ফিরিয়ে নেবে।"
ইরোস যদিও তাদের অবস্থানে অনড় এবং দাবি করেছে, তারা সবসময় প্রতিভাকে উৎসাহ দেয়। তাঁদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা ৪,০০০-এর বেশি ছবি বিশ্বজুড়ে তৈরি ও বিতরণ করেছি। প্রযুক্তি ও শিল্পের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখেই আমরা কাজ করি।”