/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/24/anirban-2025-06-24-21-37-41.jpg)
মৃগয়া মুক্তির আগে আড্ডায় অনির্বাণ
শুনছিলাম আপনার শরীরটা খুব একটা ভাল নেই। কয়েকদিন কাজ থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে ছিলেন...
অনির্বাণ চক্রবর্তী হ্যাঁ, আমি পড়ে গিয়েছিলাম। কোমরে একটু চোট পেয়েছি। দিন তিনেক বাড়িতেই বিশ্রামে ছিলাম। ১৮ জুন প্রথম বেরিয়েছিলাম। এখন সুস্থ আছি।
অনির্বাণ চক্রবর্তী নামটার সঙ্গে একেন বাবু ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। মৃগয়াতে এবার সকলের প্রিয় একেন বাবু টলিউডের সিংহম?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: ট্রেলারে দেখা যাচ্ছে, আমার মেয়ের চরিত্রে যে অভিনয় করেছে সে বলছে তুমি নিজেকে কী ভাবো, সিংহম? তখন বলা হচ্ছে, রিয়্যালিটিতে পুলিশরা তো এইরকমই হয় তোর বাবার মতো, সিনেমার সিংহমের মতো নয়। এটা একটা সংলাপ ঠিকই তবে কার্যকলাপটা আমার একার নয়। আমাদের পুরো টিম একটা কাজের মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। এমন একটা পয়েন্ট আসে যেখানে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হয় নাহলে নিজেদের প্রাণ নিয়ে সংশয়ের মতো একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন সকলের মিলিত সংগ্রামটা খুবই হিরোইক একটা অ্যাক্টিভিটি।
একেনবাবু হোক বা পুলিশ, দুই ক্ষেত্রেই রহস্য উন্মোচন করতে হয়। অভিনেতার নজরে তদন্ত কৌশলের সুক্ষ্ম পার্থক্যগুলো কেমন?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: পার্থক্য সেভাবে কিছু থাকে নমা। পুরোটাই স্ক্রিপ্ট নির্ভর। পরিচালক যেমন নির্দেশ দেন আমরা সেই অনুযায়ী কাজটা করি। দুটো চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। আর একজন অভিনেতা হিসেবে আমাকে চরিত্র অনুযায়ী সেই পথে হাঁটতে হয়। রাস্তাটা তো ঠিক করে দেয় সিনেমার স্ক্রিপ্ট-ই।
একটা হিট ছবির জন্য ভাল স্ক্রিপ্ট, দুর্দান্ত অভিনয়ের সঙ্গে আর কী প্রয়োজন যা ওটিটি-র যুগে দর্শককে হলমুখী করবে?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: প্রথমত, বড় পর্দা আর ওটিটি-র জন্য দুটো বিষয় মাথায় রেখেই পরিচালক তাঁর কাজটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। সিনেমার পর্দায় আমরা যে জিনিসটা দেখছি সেটা ওটিটি-তে দেখলে একজন দর্শক হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিতে যদি কোনও তফাৎ না হয় তাহলে তো সেটার জন্য কেউ টিকিট কেটে হলে যাবে না। তাই বড় পর্দার জন্য এমনভাবে ছবিটা বানাতে হবে যেটা কেবলমাত্র বড় পর্দাতে দেখেই মজা পাওয়া যাবে। সিনেমার মেকিংয়ের উপরও এটা বেশ খানিকটা নির্ভরশীল। দর্শককে হলে বসে মজা উপভোগ করার সমস্ত উপদান সিনেমায় দিতে হবে।
নিষিদ্ধপল্লীর একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে মৃগয়া। এই ধরনের ছবিতে কাজের ক্ষেত্রটা অন্য সিনেমার থেকে আলাদা মনে হয়?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: না, ছবি তো স্ক্রিপ্টের উপর নির্ভর করে বানানো হয়। আমি যখন যে ছবিতে কাজ করি সেটা স্ক্রিপ্টের ভিত্তিতে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে সত্যি ঘটনার প্রেক্ষিতে যখন কোনও ছবি তৈরি হয় তখন সেখানে সিনেম্যাটিক কিছু উপাদন যোগ করা করা হয়। আমি তো আমার চরিত্রটাকে অন্য ছবিতে যেমন নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি এখানেও সেটাই করেছি।
মৃগয়াতে আপনাকে কোন চরিত্রে দেখা যাবে?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: এখানে আমাকে দেখা যাবে টেকনিক্যাল এক্সপার্টের ভূমিকায়। পুলিশের টিমে একজন টেকনিক্যাল এক্সপার্টের যে ভূমিকা সেটা আমাকে খুব ভালভাবে বুঝতে হয়েছে। কারণ ওই বিষয়ে আমার কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না।
সকলের প্রিয় একেনবাবু না চালচিত্রের নাসির নাকি মৃগয়ার টেকনিক্যাল এক্সপার্ট রুদ্র-র মতো চরিত্র? ১০-এ কাকে বেশি নম্বর দেবেন?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: এই নির্বাচনটা খুব কঠিন। এখনও পর্যন্ত আমি ওয়েব সিরিজ আর ফিল্ম মিলিয়ে ১১ বার একেনবাবু চরিত্রে অভিনয় করেছি। আর বাকি চরিত্রগুলো একবারই অভিনয়ই করেছি। চালচিত্রের নাসির আর মৃগয়ার রুদ্র পুলিশ হলেও চরিত্রের ধরন কিন্তু একদম আলাদা। আমি যখন কোনও চরিত্রে অভিনয় করি তখন সেটা আমার ভাল লাগে বলেই নির্বাচন করি। তাই আমার কাছে সব চরিত্রই খুব প্রিয়।
মৃগয়ার সঙ্গে আরও কিছু বাংলা ছবি মুক্তি পেল। বক্স অফিস আয়ের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইটাকে একজন অভিনেতা হিসেবে কতটা প্রাসঙ্গিক মনে হয়?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: সিনেমার বক্স অফিস আয় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে সম্পূর্ণ অবহেলা করা যায় না। একটা সিনেমা রিলিজ করল, সেটা দর্শক কতটা গ্রহণ করল সেই বিষয়গুলোর একটা গুরুত্ব অবশ্যই আছে। অভিনেতা হিসেবে আমি প্রাথমিকভাবে দেখব আমার কাজ দর্শক পছন্দ করল কিনা। একইসঙ্গে আগ্রহ থাকে ছবিটা কতটা ভাল ব্যবসা করল।
কোন বিশেষত্বের জন্য রুদ্র চরিত্রটা পছন্দ হল?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: এই চরিত্রটায় অনেকগুলো লেয়ার আছে। সে যেমন ফ্যামিলি ম্যান তেমনই আবার কাজের জায়গাতেও খুবই পারদর্শী। যে থানায় ঘটনাটা ঘটেছে রুদ্র সেই থানার কর্মীও নয়। অন্য জায়গা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। তারপর সেই টিমে রুদ্র যোগ দেয়। যখন শুধু টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে তদন্তের কিনারায় পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে না তখন সে পুলিশের মতো অ্যকশনও শুরু করে দিল। এত কঠিন পরিস্থিতিতেও রুদ্র কিন্তু, কুল। এই সব কিছু মিলে যে চরিত্রটা তৈরি হয়েছে সেটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আর টেকনিক্যাল এক্সপার্টের চরিত্রে কাজ করে একটা নতুন অভিজ্ঞতাও হল।
মৃগয়ার পর এবার একটু স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের কথা বলা যাক। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের উপর যেখানে সকলে ক্রাশ খায় সেখানে আপনি ওঁর ক্রাশ, বিষয়টা এনজয় করেন?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: ও একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী। আমার বরাবরই ওকে ভাল লাগে। যখন আমি অভিনয় করতাম না তখনও ওঁর প্রতিভাকে আমি কদর করতাম, এখনও করি। স্বস্তিকা যেভাবে নিজেকে ক্যারি করে, ওঁর ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন বিষয়ে ওঁর বক্তব্য সবকিছু খুবই মার্জিত। আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করতে চাই তাঁদের মধ্যে স্বস্তিকা একজন।
বিবি পায়রার শুটিং সেটে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় কতবার ক্রাশ বলে ডাকলেন? একবারও বলেছেন অবশেষে সুযোগ এল...
অনির্বাণ চক্রবর্তী: হ্যাঁ, ও তো আমাকে ওটা বলেই ডাকে। কাজের অভিজ্ঞতা তো খুবই ভাল। আমাদের একসঙ্গে অনেকগুলো সিন ছিল। খুব মজা-আনন্দ করে কাজটা হয়েছে। সকলে যদি উৎসাহের সঙ্গে কোনও কাজ করে সেটা সিনেমার পর্দায় প্রতিফলিত হয়।
একেনবাবু যদি বলিউডে তৈরি হয় আর অভিনয়ের সুযোগ আসে, করবেন?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: হ্যাঁ, নিশ্চয়ই করব। আর যদি সত্যিই বলিউডে একেনবাবু তৈরি হয় তাহলে খুব খুশি হব।
আরও পড়ুন একসঙ্গে একাধিক সিনেমা মুক্তি পেলে আমার ছবির দর্শক কম হতেই পারে: ঋত্বিক চক্রবর্তী