সান বাংলার ধারাবাহিক 'আয় খুকু আয়'-এ অটিস্টিক মানুষের ভূমিকায় রাহুল ও অন্য এক মুখ্য ভূমিকায় সন্দীপ্তা। কিন্তু আজ আমরা কথা বলছি এই ধারাবাহিকের অন্যতম খলনায়িকা 'রত্না মাসি'-কে নিয়ে। এই চরিত্রে অভিনয় করছেন অরিজিতা মুখোপাধ্যায়। পর্দায় তাঁকে দেখে আঁতকে উঠলেও বাস্তবে চরিত্রের সঙ্গে কোনও মিল নেই। সারাদিনের শুটিংয়ের পর অরিজিতার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় উঠে এল কিছু কথা।
থিয়েটার থেকে ধারাবাহিকে এলেন, তাও আবার সম্পূর্ণ নেতিবাচক চরিত্রে...
ওয়েল! থিয়েটার থেকে ধারাবাহিক বললে একটা কোথাও প্রাসঙ্গিকতা থেকে যায় যে, থিয়েটারটা ছেড়ে দিয়েছি। সেটা কিন্তু নয়। থিয়েটারটা পাশাপাশি চলছে এবং ধারাবাহিকটাও করছি। দু'টো আলাদা মিডিয়াম অফ অ্যাকটিং, অভিনয়টা করতে ভালবাসি তাই যে কোনও মাধ্যমে কাজ করে অভিজ্ঞতা তৈরি করার ইচ্ছেটা থেকেই যায়। তাই প্রথম অফারটা পেয়ে দ্বিতীয়বার ভাবিনি।
তবে যেহেতু মেগা সিরিয়ালে প্রচুর সময় দিতে হয় সে কারণে নতুন কোনও কাজ এই মূহুর্তে না করতে পারলেও, পুরনো শো-গুলো করব (ভাদ্রজা)। থিয়েটার আর ধারাবাহিকের কোনও বিরোধ নেই, দুটোই ভীষণ সিরিয়াসলি করছি।
আরও পড়ুন, ‘প্লাস্টিকের বোতলে জল খাওয়া চলবে না’, বলেন ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’
প্রথম ধারাবাহিকেই খল চরিত্র, টাইপকাস্ট হয়ে যাওয়ার চিন্তা হচ্ছে না?
দেখুন আমার চেহারাগত একটা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেটাকে খারাপ বলব না। আসলে ধরা বাধা সৌন্দর্য্যের সংজ্ঞায় আমাকে ফেলা যায়না, একটু লম্বা-চওড়া তো (হাসি)। যে নাটকটা এখন করছি ভাদ্রজা, সেখানে তিনটে চরিত্রে অভিনয় করি। সুতরাং, মনে হয় চেহারার কারণেই আমায় বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে কাস্ট করা যায়। রত্না মাসি-ও সেরকমই একটা চরিত্র, আর রত্না মাসির চরিত্রের কয়েকটা শেড রয়েছে, সেকারণেই কাজ করতে ভাল লাগছে।
আরও একটা কারণ চরিত্রটা অবাঙালি, যে হিন্দি ভাষাটা বেশি বলে থাকেন। আসানসোলে বেশ কিছুটা সময় থাকার ফলে এই ধরণের মানুষ দেখেছি, যাঁরা বাংলা বলতে জানেন না কিন্তু চেষ্টাটা করেন। উৎপল দত্তের 'মগনলাল মেঘরাজ'-চরিত্রটি এক্ষেত্রে ইন্সপিরেসন বলতে পারেন। এই দুটো কারণেই চরিত্রটা লুফে নিয়েছিলাম।
আরও পড়ুন, কোনও চরিত্রই সাদা বা কালো নয়, সব চরিত্রই ধূসর: মিশমী
তবে টলিউড টাইপকাস্ট করবে কিনা তা আমি জানিনা। এটুকু বলতে পারি, আমি অনেক ধরনের চরিত্র করতে উত্সাহী।
কিন্তু রত্না মাসি-র চরিত্র আপনার কাজে এসে পৌঁছল কী করে?
এটা না হঠাত্ করেই হয়েছে। প্রেসিডেন্সির আমার জুনিয়র সৌভিক চক্রবর্তী (বর্তমানে চিত্রনাট্যকার), ও প্রথম নাটক দেখে সাহানাদি-কে আমার কথা বলে, উনি কিছু ছবিও দেখেন। আগেও একটি কাজের জন্য ওনার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল, কিন্তু কিছু কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি। আয় খুকু আয়- এর ক্রিয়েটিভ হেড শেরা বন্দ্যোপাধ্যায় চরিত্রটা সম্পর্কে জানান। মেগা সিরিয়াল পর্দায় কাজ শেখাচ্ছে। ক্যামেরাকে চিনছি মেগার জন্য, এজন্য সাহানাদির মতো মানুষদের ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন, মানুষটার শরীর ৩৫ বছরের কিন্তু মন-মাথা ৫-৬ বছরের: রাহুল
আরও পড়ুন,টেলিপর্দায় দেবী লক্ষ্মী চরিত্রে নজর কেড়েছেন যে অভিনেত্রীরা
রাহুল-সন্দীপ্তার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা...
আয় খুকু আয়-এর পুরো ইউনিটই খুব ভাল। নতুন কাজ করতে এসেছি, পরিচালক আকাশ সেন খুব সাহায্য করেন, অভিনেতাকে লিবার্টিও দেন। তবে এখনও পর্যন্ত রাহুলদার সঙ্গে বেশিরভাগ শট হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একটু বুক দুরদুর ছিল। ক্লোজ শটের কিছু টেকনিক বলে দিয়েছে, অত্যন্ত ভাল সহঅভিনেতা। সম্প্রতি সন্দীপ্তাদির সঙ্গেও কাজ করলাম, প্রাণখোলা মানুষ।
সান বাংলা-র ধারাবাহিক ‘আয় খুকু আয়’-এর সম্প্রচার শুরু হয়েছে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে, অরিজিতা মুখোপাধ্যায় টাইপকাস্ট হবেন কিনা জানা নেই, তবে আপাতত দর্শক যে দুর্দান্ত এক খলনায়িকাকে পেয়েছেন তা বলাই বাহুল্য।