অর্পন চক্রবর্তী
একটা যুগের অবসান হল আজ। দুই বছরের ব্যবধানে দুজন ছুটি নিলে তোমরা। জানি নতুন আবার কিছু কম্পোজ করবে। সে নিয়ে আবার চর্চা হবে তর্ক -বিতর্ক হবে ও পাড়ায়। যাত্রা শুভ হোক জ্যেঠু। একটা সুন্দর জুটি দুবছরের মধ্যে পুরোপুরি ভেঙে গেল। আমাদের ছেড়ে চলে গেল জানি না পরবর্তীকালে লোকসংগীতের আধুনিক যে অঙ্গন সেখানে কেমন গান তৈরি হবে। আশা করি সেই গানও সাফল্য পাবে। একটা সুন্দর সৃষ্টি হোক। আমরা যেন আরও অনেক কিছু শিখতে পারি। সেই সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের লোকসংগীতের প্রতি আমাদের গুরুভারও অনেকটা বেড়ে গেল।
আজকাল অনেক গানই নানান ভাবে গাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে অরিজিনালিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সে কথা কখনই বলব না। কারণ যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যে আর্ট ফর্মকে নতুনভাবে পরিবেশন করা হয়। গানও সেইরকমই একটা জিনিস। আজকাল পুরনো গানের গানের সুর তো একটু-আধটু বদলে নতুনভাবে গাওয়া হয়। একদম যে আদি গান বা আদির গানের সুরগুলো রয়েছে সেগুলোকে একটু এদিক-ওদিক করে নতুন ভাবে পরিবেশন করি। কারণ আমাদের কাছে তো শ্রোতারাই শেষ কথা।
তাঁদের মনোরঞ্জন করতে পারছি না বা গানটা শ্রুতিমধুর হচ্ছে কিনা সেই বিষয়টা খেয়াল রাখতে হয়। তখনই এই পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। গানটাকে অপিরবর্তিত রেখে সুর-তাল বদলাচ্ছি, অ্যাম্বিয়েন্স-আবহ কিছুটা রদবদল করছি। এই সবকিছুর পিছনে উদ্দেশ্য একটাই জনগন যাতে গানটাকে ভালোবাসে। তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
আরও পড়ুন: পাহাড়ির দেশ ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি! প্রয়াত কালজয়ী গানের স্রষ্টা অরুণ চক্রবর্তী
আমার ছোটবেলাটা কেটেছে বাঁকুড়াতে। ওটাই আমার জন্মভূমি। পরে যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর নিয়ে পড়াশোনা করতে এলাম তখন ধীরে ধীরে পুরো পরিবারই কলকাতায় শিফ্ট করে গেলাম। বোনও রবীন্দ্রভারতী থেকে মিউজিক নিয়েই মাস্টার্স করল। তবে তার আগে ছোটবেলায় জ্যেঠুর (অরুণ চক্রবর্তী) সঙ্গে তো অনেক স্মৃতি রয়েছে। একসঙ্গে ওঁরা আমাদের বাড়িতে এসেছেন।
বাবা দীর্ঘদিন চন্দননগর, চুঁচুড়ায় কাটিয়েছেন। অরুণ জ্যেঠুও হিন্দ মোটরে চাকরি করতেন। সেই জন্য যাতায়াত তো ছিলই। সেই সঙ্গে লেখালেখি নিয়েও চর্চা হত। শুধু যে লাল পাহাড়ির দেশে যা গানটাই জনপ্রিয় তা তো নয়। এছাড়াও আরও হিট গান রয়েছে যেমন, অরুণ জ্যেঠুর লেখা ও বাবা কম্পোজ করা 'ও রাজা রে তুই'। এছাড়াও 'বাঁকুড়ার মাটি কে '। এই দুটি গান পরে উষা উত্থপও রেকর্ড করেছেন।