/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/30/cats-2025-10-30-11-02-01.jpg)
মৃত্যুর আগে একটু চেয়েছিলেন মা কিন্তু...
Arshad Warsi: প্রতিটি মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বাবা-মা। তাঁদের হাত ধরেই জীবনের প্রথম পথচলাটা শুরু হয়। ছোট ছোট স্বপ্নপূরণের নেপথ্যে থাকেন বাবা-মা। পরম যত্নে অনেক যন্ত্রণা সহ্য করে লালন-পালন করে সন্তানমকে বুকে আগলে মানুষ করেন। বড় পর্দার সার্কিট ওরফে আরসাদ ওয়ারসি খুব অল্প বয়সেই বাবা-মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত হন। কারণ মাত্র ১৪ বছর বয়সে অনাথ হয়ে যান আজকের এই জনপ্রিয় বলি অভিনেতা। এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তিনি শৈশবে বাবা-মাকে হারানোর কষ্টের কথা জানান আরসাদ। কীভাবে তিনি সকলের মাঝে বাবা-মাকে হারানোর কষ্ট লুকিয়ে হাসিখুশি থাকতেন সেই বিষয়ও খোলামেলা কথা করেন।
‘জলি এলএলবি ৩’-এর এই অভিনেতা রাজ শামানির পডকাস্টে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই তিনি নিজের কেরিয়ার, স্ত্রী ও বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে জীবনের নানা সংগ্রামের কথা তপলে ধরেন। তিনি জানান, পরিবারের সঙ্গে বিশেষ কোনও স্মৃতি নেই। কারণ জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি কাটিয়েছেন বোর্ডিং স্কুলে। আরসাদ বলেন, 'আমার শৈশবের কথা বললে, পরিবারের চেয়ে আমার স্কুলের স্মৃতিই বেশি মনে আছে। কারণ আমি আট বছর বয়সে বোর্ডিং স্কুলে চলে যাই।'
মায়ের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। শেষ স্মৃতিটা তাঁর কাছে খুবই ভয়ানক যা আজও যেন তাড়া করে বেড়ায়। বাবার মৃত্যুর পর তাঁর মা কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন এবং ডায়ালিসিস চলছিল। অভিনেতার সংযোজন, “আমার মা ছিলেন একদম সাদাসিধে গৃহিণী। দারুণ রান্না করতেন। কিন্তু ওঁর কিডনি খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাই ডায়ালিসিস চলত। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, জল খেতে চাইলেও দেওয়া যাবে না। মা বারবার জল চাইছিলেন কিন্তু আমি দিতে পারিনি। মৃত্যুর আগেও একটু জলের জন্য আমাকে ডাকেন। কিন্তু, আমাকে বাধ্য হয়েই না বলতে হয়েছিল। আর সেইদিন রাতেই তিনি মারা যান। এই ঘটনা আমাকে একদম ভেঙেচুরে শেষ করে দিয়েছিল'।
আরও পড়ুন হার মানাবে শাহরুখের মন্নত, ডায়নার ১০০ বছরের পুরনো বাংলোতে ব্রিটিশ আমলের জিনিস! আর কী আছে?
তিনি আরও যোগ করেন, 'বারবার মনে হত যদি আমি জল দিতাম তাহলে হয়তো তিনি আরও কিছুক্ষণ এই পৃথিবীর বুকে থাকতে পারতেন। মনে হত আমার জন্যই মা মারা গিয়েছেন। এখন মনে হয় আমার জল দেওয়া উচিত ছিল। আমি তখন ছোট ছিলাম তাই চিকিৎসকদের কথা শুনেছিলাম। আজ যদি এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাহলে আমি পরিবারের সঙ্গে শেষ দিনগুলো কাটাতে কাটাতে চাই, হাসপাতালের বিছানায় নয়। আমরা কখনও ভাবি না অসুস্থ মানুষটি কী চায়। আমরা সিদ্ধান্ত নিই নিজেদের অপরাধবোধ থেকে।'
আরও পড়ুন আমি পিঞ্জর এমনভাবে বানিয়েছি যে দর্শক শুধু হলে বসে দেখবে না, বিষয়টা অনুভব করতে পারবে: রুদ্রজিৎ রায়
ছোট থেকে অনেকটা পরিণত আরশাদ। সেই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমি বয়সের তুলনায় অনেক বেশি পরিণত ছিলাম। কারণ আমাদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল। বাবার ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়, একটার পর একটা বাড়ি ছেড়ে ছোট ঘরে থাকতে হচ্ছি। মা-বাবা মারা যাওয়ার পর আমি সেভাবে কাঁদিনি কারণ আমি ‘পুরুষ’ হতে চেয়েছিলাম। সবকিছু সামলাতে চেয়েছিলাম। কয়েক সপ্তাহ পর যখন মনের ভিতর সব স্মৃতিগুলো ভিড় করে আসছিল তখন হাপুস নয়নে কেঁদেছিলাম।'
আরশাদের বক্তব্য, 'আমি সাহসী হতে চেয়েছিলাম কিন্তু সময়টা খুবই কঠিন ছিল। একসময় শরীর-মন দুটোই ভেঙে গিয়েছিল। যতই নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করি না কেন একসময় নিজেকে আর সামলাতে পারতাম মা। তখন সপ্তাহে কয়েকশো টাকা রোজগার করতাম। মায়ের এক সপ্তাহের ডায়ালিসিস খরচ ছিল ৮০০ টাকা। তখনই বুঝেছিলাম—আমাকে অনেক টাকা রোজগার করতে হবে।'
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)

 Follow Us
 Follow Us