/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/04/Syed.jpg)
'ইরাবতির চুপকথা' সিরিয়ালের দৃশ্য
টেলি পাড়াতে অনেকেই তাঁকে বলেন 'হৃতিক'। আর প্রত্যেকবার সেটা শুনে একটু লজ্জা পান, আবার মনে মনে একটু খুশিও হন। তবে এই প্রথম নয়, এমনটা শুনে আসছেন তিনি সেই স্কুল জীবন থেকে। "২০০০ সালে 'কহো না প্যায়ার হ্যায়' দেখে খুব ভাল লেগেছিল। একটু হৃতিক রোশনকে নকল করার চেষ্টা করতাম। সবাই বলত হৃতিকের মতো লাগছে। আমার ছোট থেকেই স্কুলে প্রচুর ফ্যান ফলোয়িং ছিল। আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়তাম, তখনই সিক্স-সেভেনের বাচ্চারা এসে আমার অটোগ্রাফ নিত," বেশ খানিকটা লজ্জা নিয়েই জানালেন টেলি নায়ক। "এখন ভাবলে খুব হাসি পায়, লজ্জাও লাগে।"
প্রথম যেদিন স্টার জলসা-তে দেখানো হয় 'ইরাবতীর চুপকথা'-র প্রোমো, সেদিন থেকেই দর্শক থেকে শুরু করে বাংলা টেলিভিশন জগতের অনেকেরই প্রশ্ন ছিল, কে এই সুদর্শন নায়ক? আসলে অভিনয়ের শুরুটা বাংলা-তে হলেও মাঝখানে বেশ কিছু বছর ছিলেন মুম্বইতে। তাই কিছুটা হলেও দর্শকের অগোচরে ছিলেন সৈয়দ আরেফিন। আর সেটাই অনেকটা ঘনিয়ে তোলে আকাশ চ্যাটার্জি-কে নিয়ে বিশেষ করে মহিলা দর্শককুলের উচ্ছ্বাস।
আরও পড়ুন: ‘ধন্যি মেয়ে’ জয়ার বয়স হল ৭১, পার্টি দিলেন কে
মহিলা চরিত্র কেন্দ্রিক কোনও ধারাবাহিকের 'নায়ক' হলে সেটা অভিনেতার পক্ষে বেশ খানিকটা কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে যদি মনামী ঘোষের মতো পোক্ত অভিনেত্রী থাকেন উলটো দিকে। সেই কঠিন কাজটি বেশ সহজেই সেরেছেন আরেফিন। আর এই প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতেই জানা হয়ে গেল তাঁর একটি চুপকথা। "মনামীর সঙ্গে কাজ করা সত্যিই খুব দারুণ অভিজ্ঞতা, আমি অনেক কিছু শিখেছি ওর থেকে। আমি টিন এজে যখন প্রথম ওকে টিভিতে দেখি, তখন থেকেই খুব ভাল লাগত," জানালেন তিনি।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/04/Syed_Arefin2.jpg)
স্ক্রিন ক্রাশ? লাজুক নায়ক একটু অপ্রস্তুত। আসলে আকাশ চরিত্রটি প্রথম দিকে যেমন দেখেছেন দর্শক, অহংকারী এবং আপাতদৃষ্টিতে নিষ্ঠুর, বাস্তবে অভিনেতা কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত। তাঁর সঙ্গে দু'মিনিট কথা বললেই জেনে ফেলা যায় তাঁর এই আর একটি চুপকথা।
আরেফিন স্বল্পবাক, পার্টি করতে ভালবাসেন না তেমন। শুটিং না থাকলে সিনেমা দেখেন, আর শরীরচর্চা তাঁর প্যাশন। "মুম্বইতে থাকতে আমি যে জিমে যেতাম, সেখানে বলিউডের অনেকেই আসতেন। আমি এখন আর তেমন সময় পাই না তাই। ওই কয়েক বছর আমি খুব বেশি সময় দিয়েছি চেহারা তৈরি করতে, যেটা খুবই দরকারি একজন অভিনেতার কাছে। আসলে আমি মুম্বইতে গিয়েছিলাম কারণ সবাই আমাকে বলতো যে আমাকে একটু অবাঙালি ধাঁচের দেখতে। ওখানে কাজ করার অভিজ্ঞতাটাও একটা বড় ব্যাপার," বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সিরিয়াল নয়, অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত ‘ইমন’
কিন্তু আরেফিন সব সময়েই চেয়েছেন বাংলা-তে কাজ করতে, বাংলা-তে ফিরতে। কারণ এই বাংলা ছোট পর্দা দিয়েই তাঁর অভিনয় জীবন শুরু, ২০১০ সালে, পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েই খানিকটা। "আমার বাবা চাইতেন আমি অ্যাকাডেমিক অথবা সরকারি চাকরি করি। তাই প্রথম দিকে একটু রাগও করেন। বাবা রঞ্জিত মল্লিকের খুব বড় ফ্যান। কোনওদিন যে আমি ওঁর সঙ্গে কাজ করতে পারব, সেটা ভাবতেও পারতেন না, বলেছিলেন এটা অসম্ভব। আমি বলেছিলাম, কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। যেদিন রঞ্জিত স্যারের সঙ্গে শুটিং করলাম, সেদিন থেকে বাবা আর রাগ করেন নি!"
'ইরাবতীর চুপকথা' সৈয়দ-কে বিপুল জনপ্রিয়তা দিয়েছে। প্রবাসী বাঙালি দর্শকের মধ্যেও তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রবল। আরেফিন খুশি, আপাতত। কিন্তু সন্তুষ্ট নন। "আমার কাছে এটা এমন একটা প্রোজেক্ট, যার মাধ্যমে আমি প্রচুর ভালবাসা পেয়েছি। তার জন্য চ্যানেল এবং অ্যাক্রোপলিস এন্টারটেইনমেন্ট-এর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমি চাই, আরও অনেক অনেক ভাল কাজ আসুক, আরও কঠিন কাজ আসুক। নিজেকে বারবার প্রমাণ করার সুযোগ আসুক।"