scorecardresearch

রাজের প্রস্তাবে আমার পেট চলেনি, দেড় বছর আমি বেকার: রুদ্রনীল ঘোষ

“ভাই তুই বিজেপিটা ছেড়ে দে, তাহলে কাস্ট করতে সুবিধে হয়! শুনতে হয়েছে..”, বিস্ফোরক রুদ্রনীল ঘোষ। ঠিক কী বললেন?

Rudranil Ghosh, BJP, tollywood, Raj Chakraborty, রুদ্রনীল ঘোষ, রাজ চক্রবর্তী, বিজেপি, টলিউডে কাজ নেই রুদ্রনীলের, bengali news today
রাজ চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ

“মেইনস্ট্রিম ইন্ডাস্ট্রিতে আমার পরিচিত কোনও প্রযোজক, পরিচালক বন্ধু-বান্ধবরা ১৬ মাস ধরে আমাকে কাজ দিচ্ছেন না। একুশ সালের পর থেকে আমাকে সকলে এড়িয়ে চলছেন”, অভিযোগ বিজেপির তারকা সদস্য রুদ্রনীল ঘোষের।

অভিনেতার বিস্ফোরক মন্তব্য, “রাজ (চক্রবর্তী) আমাকে মাস খানেক আগে বলেছিল যে- ‘একটা ছবি করব, খুব ভাল একটা চরিত্র আছে তোর…’ এই কথা দিয়ে তো আমার পেট চলেনি তাই না! সেরকম কোনও কাজ তো আর এগোয়নি। কবে হবে, সেটাও তো জানি না। যেখানে একের পর এক ইন্টারেস্টিং চরিত্র নিয়ে কাজ হচ্ছে, সেখানে প্রায় দেড় বছর আমি রুদ্রনীল ঘোষ শুটিং ফ্লোরের বাইরে। বেছে বেছে আমার জন্যই নাকি চরিত্র পাওয়া যাচ্ছে না! আমার সঙ্গে তো কারও ঝগড়া-মারামারি হয়নি। আমরা একসঙ্গে গেট-টুগেদার করি, পার্টি করি, আড্ডা মারি, এমনকী সোশ্যাল মিডিয়াতেও সব ছবি দেওয়া হয়… কিন্তু কাস্ট করার জায়গায় হঠাৎ করে দেড় বছর ধরে তাঁরা আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন?” প্রশ্ন রুদ্রনীলের। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে শেষ রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ।

বিজেপি ছাড়লে, তবেই কাজ পাওয়া যাবে- এহেন প্রস্তাবের সম্মুখীনও যে হতে হয়েছে অভিনেতাকে, সেকথাও তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে জানালেন। রুদ্রনীলের কথায়, “আমাকে তো ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন বলেওছেন যে- ‘ভাই তুই বিজেপিটা ছেড়ে দে, তাহলে কাস্ট করতে সুবিধে হয়, বুঝিস তো!’ দু’জন আলাদা আলাদা মানুষ ব্যক্তিগত স্তরে আমাকে এই কথা বলেছেন। এই কথার অর্থ নিশ্চয় আমাকে আলাদা করে বলে দিতে হবে না। তাঁরা দুজনেই আমার খুব পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ।”

“আমার যে ছবিগুলো রিলিজ করছে সেগুলো সব উনিশ-কুড়ির। প্রায় ১ বছর চার মাস ধরে আমি বেকার। এই গত দেড় বছরে যে আমি কোনও শুটিং করিনি, তার মানে এটাই ধরে নেওয়া উচিত যে আমি আমার জীবিকার (অভিনয়) বাইরে। ২০২০ সাল অবধি যে প্রযোজক-পরিচালকদের আমি খুব পছন্দের অভিনেতা ছিলাম, কী এমন হল একুশের পর থেকে যে তাঁরা আমাকে কাস্ট করতে ভুলে যাচ্ছেন?”, প্রশ্ন রুদ্রনীল ঘোষের।

[আরও পড়ুন: ফের বাদ লতা! গ্র্যামির মঞ্চেও অবহেলিত কিংবদন্তী]

কাজ না পাওয়ায় রাজনীতি ছাড়ছেন? প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতার জবাব, “আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিরোধী রাজনীতি যে কোনও কেউ করতেই পারে। শাসক দলের বিরোধিতা করলেই যে কাজ পাওয়া যাবে না, আমার ক্ষেত্রে তো তা পদে পদে প্রমাণিত হচ্ছে। হঠাৎ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই তো আমি খারাপ অভিনেতা হয়ে যেতে পারি না, তাই না! তাহলে সবাই মিলে একযোগে কেন আমার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন, কেন বলছেন যে, বিজেপি ছা়ড়লে আমাকে কাস্ট করতে সুবিধে হবে।”

বিজেপি-তৃণমূল দু’ দলের তরফেই কি আপনি রাজনীতির শিকার? “না। বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি পরিচালনা করেন রাজ্যের শাসক দল। তবে মুশকিল হল, কোনও শিল্পী নানাকারণে এক-দেড় মাস বসে থাকলেও সেটা ১৬ মাস অবধি তো গড়াতে পারে না! বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী যে রুদ্রনীল ঘোষ, সেটা তো ইন্ডাস্ট্রির প্রযোজক-পরিচালক কিংবা দর্শকরা যাঁরা আমাকে ভালবাসা দিয়েছেন, তাঁরা কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না। সব ধরণের চরিত্রে মানুষ আমাকে অ্যাকসেপ্ট করেছে। ভোটের পর আমি অভিনয়ে ফিরতে চাওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করলেও আমাকে কেউ কাজ দিতে পারছেন না। “

Rudranil Ghosh, Raj Chakraborty, Rudranil Ghosh got trolled, Raj-Rudranil, রুদ্রনীল ঘোষ, রাজ চক্রবর্তী, একসঙ্গে রাজ-রুদ্রনীল, tollywood, tmc, bjp, bengali news today

এদিকে পাল্টা কুণাল ঘোষ রুদ্রনীলের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন- “বাদশা মৈত্র বামপন্থী হয়েও ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। রুদ্রনীল তো বিজেপিতেও অভিনয় করেছেন।” এপ্রসঙ্গে রুদ্রনীলের মত, “কুণাল ঘোষ যদি নিজের যুক্তিকে জোর করে প্রমাণিত করার জন্য বাদশা মৈত্র ও রুদ্রনীল ঘোষকে একই আসনে বসাতে চান, তাতে লোকে হাসবে। তার কারণ, বাদশা টেলিভিশনে কাজ করেন। তাছাড়া, বামেরা যদি বিধানসভায় দুটোর বেশি আসন পেত, তখন বাদশার ওপরে কী নেমে আসত, সেটাও সবার জানা। উনি সবজান্তা। চাঁদে জমি কত কাঠা করে বিক্রি হয়, সেটাও ওঁর জানা। যে কুণাল ঘোষ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্তরকম দুর্নীতির রানি, তারপর তিনিই আবার সেই দলনেত্রীর প্রশংসা করে, সেখানে উনি ওনার বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে ফেলেছেন।”

[আরও পড়ুন: অস্কার মঞ্চে চড়-কাণ্ডের পর উইল স্মিথের ছবি মুক্তি পিছোল Netflix]

একুশের নির্বাচনের আগে যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা অনেকেই অনেকেই বিজেপি ছেড়েছেন কোণঠাসা হওয়ার ভয়ে, মত রুদ্রনীলের। তাঁর বক্তব্য, “কারও মনে হতেই পারে যে রাজনীতি আমার জন্য নয়, সেটা আলাদা কথা। কিন্তু একুশের নির্বাচনের পর বিরোধী পক্ষের ওপর যে আক্রমণ-অসম্মান নেমে এসেছে, আমার মতো মানুষকেও ৩ বার মার খেতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাকিরা তো অবশ্যই ভয় পেয়েছেন। গ্রামে-মফঃস্বলে স্টেজ শো আমাদের একটা বড় আয়ের জায়গা। যেগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই পেটের দায়ে প্রিয় জীবিকাকে বাঁচাতে তাঁরা বিজেপি ছাড়তে হয়তো বাধ্য হয়েছেন। আসলে যাঁরা শাসকদলের ঘনিষ্ঠ তাঁরাই মঞ্চ আলোকিত করছেন। বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড ফাংশনে তাঁরাই পুরস্কৃত হচ্ছেন। সরকার আয়োজিত কোনও অনুষ্ঠানে তাঁদের হাসিমুখে গিয়ে দাঁড়াতে হচ্ছে। সে তো খোলা চোখে দেখা যায়। এবং তারপরও তাঁরা রামপুরহাট-কাণ্ড কিংবা আনিস খান খুন নিয়ে মুখ খুলতে পারেন না। চুপ করে থাকতে হয়।”

পাল্টা কুণাল ঘোষকে তোপ দেগে রুদ্রনীল ঘোষ বললেন, “তৃণমূলের মুখপত্র হিসেবে তিনি বলেন- বিজেপিতে কোনও শিল্পী থাকতে পারেন না, কারণ সেই দল বাংলার সংস্কৃতি বোঝে না। মুশকিল হল, একমাত্র রুদ্রনীল ঘোষ এখনও পর্যন্ত বিজেপিতে থেকে যাওয়ার কারণে এই তত্ত্বটা ঠিকঠাক প্রমাণ করতে পারছেন না ওঁরা। তাই প্রযোজক-পরিচালকদের একটা বড় অংশকে প্রভাবিত করে তাঁরা সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন। এবার সেই চাপে রুদ্রনীল ঘোষ যদি বিজেপি ছাড়তে বাধ্য হয়, তাহলে ওঁদের সেই তত্ত্বটা পূর্ণতা পাবে।”

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Entertainment news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Bjp actor rudranil ghosh claims nobody is casting him the actor on raj chakraborty