Bollywood: বাবাকে ঠকিয়েছিলেন কাকা, এই পরিচালক ভাইদের জীবনযাত্রা শুনলে চোখে জল আসতে বাধ্য..

গুজরাটি মুসলিম পরিবারে জন্ম। তাঁদের বাবা ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি, যিনি কোলাবায় আসবাবপত্র ভাড়ার ব্যবসা করতেন। তাঁরা মোহাম্মদ আলি রোডের কাছে একটি বড় রুমের চালাঘরে পুরো পরিবার নিয়ে থাকতেন...

গুজরাটি মুসলিম পরিবারে জন্ম। তাঁদের বাবা ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি, যিনি কোলাবায় আসবাবপত্র ভাড়ার ব্যবসা করতেন। তাঁরা মোহাম্মদ আলি রোডের কাছে একটি বড় রুমের চালাঘরে পুরো পরিবার নিয়ে থাকতেন...

author-image
IE Bangla Entertainment Desk
New Update
abbas-mustan

চমকে উঠবেন এই দুজনের গল্প শুনলে...

আজ যাঁরা হিন্দি সিনেমার থ্রিলার ঘরানার এক অবিচ্ছেদ্য নাম- সেই পরিচালক জুটি আব্বাস-মাস্তান, তাঁদের পথচলা কিন্তু সহজ ছিল না। বরং কঠিন বাস্তব, দারিদ্র্য, পারিবারিক সংকট এবং বছরের পর বছর ধরে চলা অবিরাম সংগ্রাম তাঁদের সাফল্যের ভিত গড়েছে।

Advertisment

নম্র শুরু ও পরিবারিক টানাপোড়েন

গুজরাটি মুসলিম পরিবারে জন্ম আব্বাস ও মাস্তানের। তাঁদের বাবা ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি, যিনি কোলাবায় আসবাবপত্র ভাড়ার ব্যবসা করতেন। তাঁরা মোহাম্মদ আলি রোডের কাছে একটি বড় রুমের চালাঘরে পুরো পরিবার নিয়ে থাকতেন। যৌথ পরিবারে মিলেমিশে থাকা গেলেও পরিস্থিতি বদলে যায়। তাঁদের এক কাকা ব্যবসায় তাঁদের বাবাকে ঠকিয়ে দেন। রাতারাতি সবকিছু বদলে যায়। শুরু হয় চরম দারিদ্র্য- দু’দিনে একবার খাবার, বারান্দায় ঘুম, অদ্ভুত ছোট ছোট কাজ করে উপার্জনের চেষ্টা।

Advertisment

তাঁদের মা-বাবা নিজেরা না খেয়ে ছেলেদের খাইয়ে দিতেন। আব্বাস না খেয়ে মস্তানকে খাওয়াতেন। এমন নিঃস্ব জীবনে যে জিনিসগুলো তাঁদের ধরে রেখেছিল, তা ছিল পরিবার, একতা আর মূল্যবোধ। তাঁরা বলেছিলেন, "আমরা আমাদের মা-বাবার থেকে তিনটি জিনিস শিখেছি- কাউকে কষ্ট না দেওয়া, কাজের প্রতি নিষ্ঠা রাখা, এবং যাঁরা আমাদের সঙ্গে কাজ করেন, তাঁদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া।”

Uttam Kumar-SatyajitRay: উত্তমকুমারের কাছে এক বিশেষ অনুরোধ করেন সত্য…

স্কুল ছেড়ে সিনেমার পিছনে ছোটা

আর্থিক চাপে আব্বাস নবম শ্রেণিতে স্কুল ছেড়ে দেন এবং এক কাকার অধীনে ফিল্ম স্টুডিওতে সহকারী হিসেবে যোগ দেন। দিনে ২ টাকা রোজগার করতেন। সেই কাকাই একদিন তাঁকে বলেন, “তুমি যদি সম্পাদক হতে চাও, তাহলে আমার কাছ থেকে শেখো। আমি জানি তুমি একদিন পরিচালক হতে চাও।” মস্তান স্কুল ছেড়ে কাজ নেন একটি কাপড়ের দোকানে। মাসিক বেতন ১২৫ টাকা। তাঁদের ভাই হুসেন কাজ শুরু করেন কাঠের আসবাবপত্রের দোকানে- মাইনে পেতেন ৭৫ টাকা। তিন ভাই মিলে মাসে ২৫০ টাকা পরিবারের জন্য তুলে রাখতেন।

সঞ্চয়ের জন্য তাঁরা মাইলের পর মাইল হেঁটে বেড়াতেন। দিনে মাত্র এক বেলার খাবার খেতেন, তবু স্বপ্ন দেখতেন সিনেমা বানানোর। তিন বছর ধরে তাঁরা বলিউড তারকাদের পিছনে ঘুরেছেন, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েছেন, দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছেন- তবু দেখা মেলেনি। শুধু একজনই ছিলেন, যিনি তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি রাজ বব্বর।

Mamata Banerjee-Soumitrisha Kundu: সৌমিতৃষার নাম বলতে গিয়ে হিমশিম …

গুজরাটি ছবি থেকে বলিউডে উত্তরণ

তাঁদের মামারা সিনে জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, একজন ছিলেন ফিল্ম এডিটর, যিনি দিলীপ কুমারের ছবিতে কাজ করেছেন, আর একজন ছিলেন ছোট বাজেটের ছবির সম্পাদক। এই পরিবারিক সংযোগেই তাঁদের যাত্রা শুরু হয় গুজরাটি সিনেমা দিয়ে। কিন্তু তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল হিন্দি সিনেমা, সেখানেই নিজেদের জায়গা তৈরি করতে চেয়েছিলেন তাঁরা।

‘বাজিগর’ এবং ভাগ্য বদলের গল্প

তাঁদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ১৯৯৩ সালের ‘বাজিগর’, শাহরুখ খান অভিনীত সেই বিখ্যাত থ্রিলার, যা সারা দেশে আলোড়ন তোলে এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০০ কোটি আয় করে। তবে ছবির সাফল্য এলেও তাঁদের জীবনযাত্রায় সঙ্গে সঙ্গে কোনো বড় পরিবর্তন আসেনি। তাঁরা তখনও চালাঘরে বাস করতেন। শাহরুখ যখন ‘বাজিগর’-এর জন্য তাঁর প্রথম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জেতেন, তিনি ভোর চারটায় তাঁদের বাড়িতে যান আশীর্বাদ নিতে।

তাঁদের দুইভাইয়ের কথায়, "তখনও আমরা একটি চৌকিতে থাকতাম, মস্তান বারান্দায় ঘুমাতেন। শাহরুখ সেটা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।" তাঁরা বারান্দা থেকে তাকিয়ে দেখলেন, হাজারখানেক লোক নিচে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছে। এরপর তাঁরা অবশেষে লোখান্ডওয়ালায় একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে উঠে যান।

থ্রিলারের রাজা হয়ে ওঠা

‘বাজিগর’-এর পর একের পর এক হিট ছবি- রেস, সোলজার, আওয়ারা পাগল দিওয়ানা, আফতাব, অ্যলান, হমরাজ ইত্যাদি—তাঁদের করে তোলে থ্রিলার ঘরানার কিংবদন্তী। তাঁরা কাজ করেছেন শাহরুখ খান, অক্ষয় খান্না, সাইফ আলি খান, বিপাশা বসু, দীপিকা পাড়ুকোনসহ বহু প্রথম সারির তারকার সঙ্গে।

bollywood Entertainment News Entertainment News Today Bollywood Directors