Chandan Sen-Tathagata Mukherjee On Thakurpukur Accident: রবিবার ভোররাতে ঠাকুরপুকুর এলাকায় ধুন্ধুমার। একটি বিলাসবহুল গাড়ি তার গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে প্রাণ কেড়ে নেন এক বৃদ্ধের। চালকের আসনে ছিলেন মদ্যপ টেলি পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো। দোসর তাঁর সঙ্গীরা। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় সকলেই প্রায় বেহুঁশ। আকণ্ঠ মদ্যপান করে স্টিয়ারিং-এ হাত দিতেই গতির বলি ১, আহত অনেকে। স্টুডিওপাড়ার পরিচালকের এই কাণ্ডে তোলপাড় তিলোত্তমা। মঙ্গলবার থেকে ঘটনার মোড় ঘুরল অন্যদিকে। মৃত বৃদ্ধের সন্তানরা পুলিশের বিরুদ্ধে ঘোরতর অভিযোগ এনেছেন। পুলিশ নাকি টাকা নিয়ে বিষয়টা মিটমাট করার পরামর্শ দিয়েছে। 'ড্রিঙ্ক অ্যান্ড ড্রাইভ' -এর মতো নক্কারজনক ঘটনার পর পুলিশের এহেন আচরণ সামনে আসতেই পরিস্থিতি যেন আরও উত্তপ্ত। এর মাঝেই কাজ খুইয়েছেন স্যান্ডি সাহা ও ঋ সেন।
সত্যিই পুলিশ প্রশাসন তাদের দায়িত্বপালন করছে না? রূপোলি দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত কিছু মানুষের মাথায় প্রভাবশালীর আশীর্বাদী হাত আছে? চন্দন সেনের মতো বর্ষীয়ান অভিনেতা ও নাট্যকার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বর্তমান সরকারকে তুলোধনা করেছেন। অন্যদিকে ঠাকুরপুকুর কাণ্ডের নিন্দা করলেও, পুলিশ সত্যিই সেটলমেন্টের কথা বলেছে কিনা সেই বিষয়ে অবশ্য মতপ্রকাশ করতে চাননি অভিনেতা-পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে নিজের মত শেয়ার করলেন চন্দন সেন।
প্রতিবাদী কণ্ঠে বলেন, 'পুলিশের ভূমিকা তো আরও একবার প্রমাণ করল রক্ষকই ভক্ষক। রাজ্য সরকার অর্থাৎ যাঁরা ক্ষমতায় আছেন তাঁরা উপরতলার মানুষদের জন্য একরকমের আইন আর যাঁরা একটু কম ক্ষমতাসম্পন্ন আমাদের মতো তাঁদের জন্য নিয়মটা অন্য। দুটোর তারতম্য প্রকাশ্যে দেখতে পাচ্ছি। যদি আপনার ক্ষমতা থাকে বিকেল চারটের মধ্যে জামিন পেয়ে যাবেন আর যদি ক্ষমতা না থাকে তাহলে ঘুরে বেড়াতে হবে। যদি প্রতিবাদ করেন তাহলে পাড়ার তৃণমূলের গুণ্ডারা এসে থ্রেট করবে। এটা তো নিয়মে পরিণত হয়েছে। ঠাকুরপুকুর ঘটনায় যাঁরা গাড়িতে ছিলেন তাঁরা কী করে নিস্তার পেয়ে গেলেন সেটা জানি না। যে ভদ্রমহিলা নেশাগ্রস্থ ছিলেন তিনি বলতেই পারেন আমি দোষী নই। কিন্তু, তিনি ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আছেন, তিনি বারণ করেননি বা বারণ করার মতো অবস্থাতেও ছিলেন না এটার কোনও দায় উনি নেবেন না সেটা তো হতে পারে না।'
তথাগত মুখোপাধ্যায়ের মতে, 'ওঁদের কম-বেশি আমি চিনি। কিন্তু, সত্যিই প্রভাবশালীর সাহায্যে দুজন ভদ্রমহিলা রেহাই পেল কিনা সেই বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে এটা বলতে পারি, যা ঘটেছে অত্যন্ত নিন্দনীয়। একইসঙ্গে আরও একটা কথা বলতে চাই, সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রতিনিয়ত অপরাধ ঘটে চলেছে। ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন এই ঘটনায় যুক্ত মানে পুরো পেশাটাকেই কলুসিত করা উচিত নয়। বারবার বলছি রবিবার ভোরে যা ঘটেছে সেটা সত্যিই অনভিপ্রেত ও খুব জঘন্য একটা ঘটনা। আর ঘটনাচক্রে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি জড়িয়ে রয়েছে। তবে পুলিশের যে বিষয়টা সামনে আসছে সেটা নিয়ে আমার সত্যিই কোনও ধারণা নেই। কে কী বলছে বা মোটিভেটেড সেটা বোঝার উপায় নেই। '
আরও যোগ করেন, 'যে পরিস্থিতিতে আমরা রয়েছি যতক্ষণ না সঠিক প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে কারও কথাই বিশ্বাস করা যায় না। আরজি কর-এর ঘটনাটা থেকে বোঝা গিয়েছিল হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এখানেও আমরা জানি দোষী কে। এখন যে কথাগুলো শোনা যাচ্ছে সেটা তো তাঁদের ভার্শন। কোন পিরস্থিতিতে কে কী বলেছে সেটা দূর থেকে বোঝাটা আমার মনে হয় একটু মুশকিল। তবে একটা বিষয় বলতে পারি, যে জঘন্য ঘটনাটা ঘটেছে সেটার শাস্তি দিতে গিয়ে আমরা যেন জঘন্য না হয়ে যাই। ফেসবুকে খাপপঞ্চায়েত বসানো যুক্তিহীন। শাস্তির জন্য আইন আছে। মরাল পুলিশিং-এ আমি বিশ্বাসী নই।'
আরও পড়ুন: সাফল্য সেলিব্রেট করতে গিয়ে সব শেষ! ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে কাজ হারালেন স্যান্ডি, ঋ-র পরিবর্তে নতুন মুখ