বলা চলে বেশ কিছুদিন পরই সিনেমার পর্দায় আসছেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়। তাও আবার প্রধান চরিত্রে। সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সৃষ্টি প্রোফেসর শঙ্কু-র (ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু) চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। এদিন ছবি আড্ডা দিতে গিয়েই সিনেমা, সমাজ থেকে সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে এল।
'প্রোফেসর শঙ্কু' সিনেমার পর্দায়। ভেবেছিলেন কখনও সেলুলয়েডের পর্দায় আসবে এই গল্প?
খুবই পুলকিত হয়েছি অভিয়েসলি। কখনও ভাবিনি সিনেমায় শঙ্কু আসবে। তাছাড়া গল্প-উপন্যাস থেকে কোনও ছবি হলে আমার দায়বদ্ধতা চিত্রনাট্যের প্রতি এবং পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি। সেখান থেকেই কাজটা শুরু করার চেষ্টা করি। এখানে আরও একটু গভীরে যেতে হয়েছিল।
প্রোফেসরের চরিত্রের জন্য কোনও প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল?
আমার কাছে একটা সমস্যা ছিল, গল্পগুলো তো আসলে ডায়েরি ফর্মে লেখা। সেখানে শঙ্কু ব্যক্তি হিসাবে কেমন তার খুব একট আভাস আমি পাইনি। একেবারে শেষের গল্প (১৯৯২ তে প্রকাশিত) সেখানে বাবার সম্পর্কে কিছু স্মৃতিচারণা রয়েছে। সেখানে কিছুটা জানতে পারি এবং সত্যজিৎ রায়ের স্কেচ থেকে শারীরিক একটা অবয়ব পাই। এগুলো ছাড়া আর কোনও ক্লু নেই। তবে সাধারণত ছবি করার আগে আমার ওয়ার্কশপ বা বিশ্লেষণে খুব একটা বিশ্বাস নেই। কিন্তু এমনিই যা পড়াশুনো করি তার থেকে একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে গল্পগুলো পড়ি।
আরও পড়ুন, ভাল সিনেমা যদি থাকে, সমাজে অনেক খারাপ কাজ কম হবে: সুব্রত
প্রোফেসর শঙ্কু-র শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা?
ভাল!
আর একটু যদি বিশদে বলেন...
প্রফেসর শঙ্কু কেবমাত্র ছোটদের কাছে নয়, বড়দের কাছেও জনপ্রিয়। সত্যজিৎ রায় নিজেই বলে গিয়েছিলেন, ''সার্থক তথাকথিত ছোটদের গল্প সেগুলোই যেগুলো বড়রা পড়েও আনন্দ পাবে।'' কাজেই শঙ্কু বলি বা ফেলুদা, দর্শক শুধু ছোটদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
আরও পড়ুন, অপরাধের গল্পে আবার ঈশান-সুদীপ্তা
শঙ্কু বক্সঅফিসে ছাপ ফেলবে?
আমার কোনও ধারণা নেই। আশা করব সফল হবে। কারণ নইলে পরবর্তীতে আমরা আর শঙ্কু করতে পারব না। তবে কী ধরণের ছাপ ফেলবে এটা আপনি নকুড়বাবুকে জিজ্ঞেস করতে পারেন, উনি ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা তো!
সব ধরণের ছবি বাঙালি দর্শক সিনেমা হলে দেখতে যান না। তারা অপেক্ষা করেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য...
এটা তো সাধারণ প্রবণতা। এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখাটা জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রযুক্তি যখন এগোয় বা বদলায় তখনই বিক্ষিপ্ততা হয়ই। গেল গেল রব আগেও উঠেছে। সাইলেন্ট সিনেমা থেকে সাউন্ড সিনেমার সময়ও হয়েছিল। সাদা-কালো থেকে রঙিন সিনেমার সময়েই একই চিত্র ছিল। তোলপাড় হয়েই একটা স্থিতি আসে। ওয়েব ও সিনেমার পর্দাতেও একটা সামঞ্জস্য আসবে।
আরও পড়ুন, জামিয়ার বিক্ষোভ পোস্টে ভুল করে ‘লাইক’, শুধরে জানালেন অক্ষয়
তাছাড়া সাহিত্য থেকে সিনেমার দু'ধরণের দর্শক আছে বলে আমার মনে হয়। এক যাঁরা মূল গল্পগুলোর সঙ্গে খুবই পরিচিত তাদের একটা তুলনা করার প্রবণতা থাকবে। আরেক ধরণের কম বয়সী দর্শকও আছে যাঁরা বিভিন্ন কারণে শঙ্কু পড়েনি। তার অনেক কারণ থাকতে পারে। এই অংশটা ছবিটা ছবি হিসাবেই দেখবে।
এই সমস্ত গল্পের পর্দায় অবতরণ কী পাঠকের বই পড়ার আগ্রহ বাড়ায়?
কিছুটা তো বটেই। সিনেমাটা দেখে মনে হয়, এটা ভীষণ ইনটারেসন্টিং লাগছে তাহলে বাকি গল্পগুলোও পড়ে ফেলা যাক।