Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

'আরাধনা'য় শর্মিলা না হয়ে সুচিত্রাও হতে পারতেন 'সপনো কি রানী'!

শুরুতে হৃষীকেশ মুখার্জি এবং সুচিত্রা সেন, শেষে শক্তি সামন্ত এবং শর্মিলা ঠাকুর। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৯। দীর্ঘ এই যাত্রাপথের কাহিনী শোনালেন অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
durga puja 2019 making of aradhana movie

'আরাধনা' ছবির পোস্টার

এই কাহিনীর সূত্রপাত ১৯৬১ সালের মার্চ মাসের আশেপাশে। তার আগের বছরই রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের (বর্তমানে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডস, তৎকালীন স্টেট অ্যাওয়ার্ডস) তালিকায় বছরের শ্রেষ্ঠ ফিচার ফিল্ম নির্বাচিত হয়েছে হৃষীকেশ মুখার্জির 'অনুরাধা'। বাঁধা গত মেনেই বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবেও ভারতের মনোনীত ছবি হয় 'অনুরাধা', যার ফলে জুন মাসে বার্লিনে ছবিটির, তথা ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন হৃষীকেশ মুখার্জি। পাশাপাশি প্রথমবার ইউরোপ সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন 'অনুরাধা'র লেখক শচীন ভৌমিকও। সেই সফরের খরচ কিছুটা বহন করেন রাহুল দেব বর্মণ, কিছুটা শাম্মি কাপুর, কিছুটা হেমেন গাঙ্গুলি - রোটারি সদস্য, চিত্র প্রযোজক, দিলীপ কুমারের স্টাইল গুরু, আরও অনেক কিছু।

Advertisment

ফের একবার একসঙ্গে কাজ করবেন, সেটা আন্দাজ করে ইতিমধ্যেই হৃষীকেশ মুখার্জিকে আরও একটি গল্পের আইডিয়া দিয়ে ফেলেছেন শচীন ভৌমিক।

গল্পের অনুপ্রেরণা ১৯৪৬ সালের হলিউড ছবি 'টু ইচ হিজ ওন (To Each His Own)', যাতে অভিনয় করে অস্কার পেয়েছিলেন ওলিভিয়া ডে হ্যাভিল্যান্ড (বর্তমানে ১০৩ বছর বয়সে যিনি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী অভিনেত্রী)। 'অনুরাধা'র পর আরও একটি নারীকেন্দ্রিক চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করতে হৃষীকেশের আপত্তি ছিল না। উল্লেখ্য, বার্লিনের জুরি - যাঁদের মধ্যে ছিলেন সত্যজিৎ রায়ও - 'অনুরাধা' দেখে খুব একটা আলোড়িত হন নি, যদিও ছবিটি হৃষীকেশের সেই সময়ের কাজের তুলনায় গুণগতভাবে উচ্চমানের ছিল।

aradhana movie making 'টু ইচ হিজ ওন' ছবির পোস্টার

আরও পড়ুন, প্রাক্তন প্রেমিককে নিয়ে মুখ খুললেন কোয়েনা মিত্র

তা শিগগিরি শুরু হয়ে গেল প্রধান পাত্রপাত্রী নির্বাচনের কাজ। হৃষীকেশের নজর ছিল সুচিত্রা সেনের ওপর, কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল, শক্তিশালী প্রধান চরিত্র টেনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে সুচিত্রার। কিন্তু ততদিনে হিন্দি ছবির বাজার দ্রুত পড়তে শুরু করেছে মিসেস সেনের। 'বোম্বাই কা বাবু' (১৯৬০) মোটের ওপর ভালো ব্যবসা করলেও ছবিটি সুচিত্রার কাছে আসে মধুবালার হাত ঘুরে, কারণ তিনি অসুস্থতার কারণে কয়েক প্রস্থ শুটিংয়ের পর ছবিটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। সেই একই বছরে মুক্তি পায় দেব আনন্দ-সুচিত্রার আরও একটি ছবি, 'সরহদ', যা বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। পরবর্তী পাঁচ বছর আর হিন্দি ছবির কাজ করেন নি সুচিত্রা। তাঁর কামব্যাক হিন্দি ছবি ছিল 'মমতা' (১৯৬৬), যা কলকাতা থেকে প্রযোজিত হয়।

হৃষীকেশের পরের পছন্দ ছিলেন নূতন, কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে তাঁর নাম সঙ্গে সঙ্গেই নাকচ করে দিতে হয়। তালিকায় তার পরের নাম ছিল নার্গিস, কিন্তু তিনি ততদিনে অবসর নিয়েছেন, অতএব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। আলোচনায় উঠে আসে মালা সিনহার নামও, কিন্তু কাজ বেশিদূর এগোয় না, গল্প থেকে যায় শচীনবাবুর কাছেই।

***

কাট, সন ১৯৬৭।

আরও পড়ুন, মনে আছে নতুন জুতোটা নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম: জয়জিৎ

ষাটের দশকের শেষ পর্বে আমরা দেখি, গত দশ বছর ধরে স্ট্রাগল করা শচীন ভৌমিক অবশেষে সুপ্রতিষ্ঠিত লেখক। বাংলা এবং উর্দু সাহিত্যের ছত্রচ্ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে বলিউডি কায়দাকানুন শিখে গেছেন তিনি, গল্প পরিবর্তন করে বম্বে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পছন্দমত ঢেলে সাজাতেও শিখেছেন। কিন্তু তখনও অর্থবহ কিছু করার ভাবনা একেবারে মুছে যায়নি তাঁর মন থেকে। তখন কাজ চলছে শক্তি সামন্তের ছবি 'অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস'-এর, কিন্তু শচীনবাবুর মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে সেই ১৯৬১ সালের আইডিয়া, যার কথা শক্তি সামন্তকে বলতেই তৎক্ষণাৎ মঞ্জুর, কারণ গল্প শুনে পরিচালকের নাকি মনে পড়ে যায় তাঁর মায়ের কথা।

স্থির হলো, ছবির কার্যনির্বাহী নাম অর্থাৎ 'ওয়ার্কিং টাইটেল' হবে 'সুবহ প্য়ায়ার কী', যা কিনা 'অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস'-এর 'রাত কে হামসফর' গানের একটি কলি। অচিরেই এই নাম দেখা যেতে লাগল বিভিন্ন থিয়েটারের বাইরে বিক্রি হওয়া 'অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস'-এর পুস্তিকার পেছনের মলাটে। ইতিমধ্যে শক্তি সামন্ত পরিকল্পনা করেছেন 'দ্য গ্রেট গ্যাম্বলার' নামক একটি ছবির, যার শুটিং হবে মার্কিন মুলুকে। প্রচার করা হচ্ছে, বড় মাপের এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় থাকবেন শাম্মি কাপুর।

আরও পড়ুন, পুজোয় হোমওয়ার্ক পেলেন ‘রানু পেল লটারি’-নায়ক

পাশাপাশি শুরু হয়ে গেল 'সুবহ প্য়ায়ার কী' ছবির কুশীলব নির্বাচন। হিরো খুঁজতে বেশি বেগ পেতে হলো না। ছবিতে না ছিল খুব বেশি আউটডোর শুটিংয়ের সম্ভাবনা, না তারকার উপস্থিতির। ১৯৬৫ সালে যতীন ওরফে রাজেশ খান্না নামের একটি ছেলেকে ইউনাইটেড প্রোডিউসার্স-ফিল্মফেয়ার প্রতিযোগিতার আটজন বিজয়ীর একজন হিসেবে বেছে নেওয়ার পিছনে অন্যতম ভূমিকা ছিল ইউনাইটেড প্রোডিউসার্স গোষ্ঠীর সদস্য শক্তি সামন্তের। পরবর্তীকালে 'বাহারোঁ কে সপনে' (১৯৬৭) ছবিতেও রাজেশকে দেখে ভালো লেগেছিল তাঁর। সেটি ছিল রাজেশের দ্বিতীয় সই করা (প্রথমটি ছিল 'রাজ') এবং চতুর্থ মুক্তি পাওয়া ছবি (প্রথমটি আবারও একবার 'রাজ', প্রচলিত ধারণা মতে 'আখরি খত' নয়। 'আখরি খত' রাজেশের প্রথম সেন্সর করা তথা তৃতীয় মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি)।

aradhana movie making 'বাহারোঁ কে সপনে' ছবির একটি দৃশ্যে রাজেশ খান্না ও আশা পারেখ

আরও পড়ুন, বাংলা তাঁকে ভাঁড় সাজিয়েই রেখে দিল

রাজেশ তখন তরতাজা যুবক, কঠিন পরিশ্রম করতে ইচ্ছুক, এবং তখন পর্যন্ত তারকাসুলভ আচরণ বর্জিত।ইউনাইটেড প্রোডিউসার্সের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক তাঁর পারিশ্রমিকও যৎসামান্য, মাত্র ৩৫ হাজার টাকা। নাট্যজগতে প্রশিক্ষণ পাওয়ার ফলে কিঞ্চিৎ অতি অভিনয় দোষে দুষ্ট বটে, কিন্তু হিন্দি সিনেমায় অতি অভিনয় চিরকালই সমাদৃত। ছবির প্রস্তুতি পর্বে রাজেশের জন্য একটিই নির্দেশ ছিল - দেব আনন্দের ছবি দেখে তাঁর কিছু 'ম্যানারিজম' বা ভাবভঙ্গি আয়ত্ত করতে হবে।

প্রধান অভিনেত্রী খোঁজার কাজটি কিন্তু আরও অনেক বেশি কঠিন হলো। খরচ বাঁচাতে কিছু নাম ভেবেছিলেন শক্তি, কিন্তু একটিও খাটল না। সেই নামের তালিকায় ছিলেন অপর্ণা সেন, যিনি তখন কেবল কশ্যপের ছবি 'বিশ্বাস' (১৯৬৯)-এ কাজ করতে এসেছেন বম্বেতে, রয়েছেন তাজ হোটেলে। শেষমেশ অযথা নামের তালিকা দীর্ঘায়িত না করে শক্তি ফিরে গেলেন তাঁর পরিচিত রিঙ্কুর (শর্মিলা ঠাকুরের) কাছে। চুক্তি সই হলো। শচীন ভৌমিক এই ছবির প্রতি যথেষ্ট উচ্চাকাঙ্ক্ষা রাখেন, কিন্তু শক্তি সামন্তের কাছে এটি ছিল একটি পরীক্ষা মাত্র, তাঁর আসল লক্ষ্য তাঁর পরবর্তী 'পয়সা উসুল' ছবি।

কিন্তু পরীক্ষা শেষ হতে দেরি ছিল।

***

আরও পড়ুন, পুজো কীভাবে কাটাবেন প্রসেনজিৎ?

চিত্র প্রযোজনার বাড়তে থাকা খরচ সামলাতে ১৯৬৮ সালে কিছু ছোটখাটো প্রযোজক মিলে গঠন করেন 'অ্যাকশন কমিটি' নামে একটি গ্রুপ। এই সংগঠনের তরফে প্রযোজক, ডিস্ট্রিবিউটর, হল মালিক এবং চিত্র প্রযোজনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য একগুচ্ছ নিয়ম জারি করা হয়। অধিকাংশ প্রযোজক এবং হল মালিক এই নিয়মাবলী মানতে অনিচ্ছুক হওয়ায় ওই ছোটখাটো প্রযোজকরা ফের একটি দল গঠন করেন, যাতে সামিল হন তৎকালীন কলাকুশলী, অভিনেতা, এবং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত আরও বেশ কিছু মানুষ। এদের নাম দেওয়া হলো 'ফিল্ম সেনা'।

এই ফিল্ম সেনা এবং অ্যাকশন কমিটি মিলে ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন বা ইমপা-র ওপর চাপ দিয়ে ফিল্ম প্রযোজনা বন্ধ করিয়ে দেয়, এবং বম্বের সমস্ত সিনেমা হলে প্রিন্টের সরবরাহ আটকে দেয়। সেবছরের ৩১ মার্চ বাস্তবায়িত করার কথা ছিল এই আন্দোলন, যা শেষমেশ শুরু হয় ৫ এপ্রিল। শেষ পর্যন্ত এফএফআই, সিএমডিএ, ইমপা, এবং অন্যান্যদের সঙ্গে ফিল্ম সেনা-অ্যাকশন কমিটির একাধিক বৈঠকের পর ২৪ এপ্রিল এই আন্দোলন মুলতুবি করা হয়। ততদিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে 'অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস', যা কিনা তখন পর্যন্ত ভালো ব্যবসা দিচ্ছিল। এবং পিছিয়ে গেছে 'সুবহ প্যায়ার কী' ছবির মহরত। শেষ অবধি ১ জুন, ১৯৬৮ সালে ফেমাস স্টুডিওতে মহরত অনুষ্ঠিত হয়।

ছবির সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে শক্তি সামন্তের প্রথম পছন্দ ছিলেন শঙ্কর-জয়কিষণ, কিন্তু বাজেট কম পড়ায় তাঁকে দ্বারস্থ হতে হয় শচীন দেব বর্মণের। পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে 'ইনসান জাগ উঠা' ছবিতে, এবং ষাটের দশকের শুরুতে 'নটি বয়' ছবিতে শক্তির সঙ্গে কাজ করেছিলেন শচীন কর্তা। নতুন ছবির জন্য তিনি পারিশ্রমিক দাবি করলেন ৮০ হাজার টাকা, যেখানে 'ইনসান জাগ উঠা'র জন্য তিনি নিয়েছিলেন ৭৫ হাজার। শক্তি সোজা বললেন এক লক্ষ দেবেন। মহাখুশি শচীন দেব বর্মণ প্রতিশ্রুতি দিলেন একদম নতুন ধরনের কাজের। সেকথা রেখেছিলেন তিনি। ১৭ জুন রেকর্ড করা হলো ছবির প্রথম গান, 'রূপ তেরা মস্তানা'।

কিন্তু শচীন কর্তার অবদান শুধুমাত্র সঙ্গীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি আপত্তি তোলেন ছবির নাম নিয়েও। যার ফলে অন্যভাবে ভাবতে বাধ্য হন শক্তি। এই পরিস্থিতিতে তাঁর পরিত্রাতা হয়ে দেখা দেন তাঁর পাবলিসিটি ডিজাইনার।

***

আরও পড়ুন, অনেকটা এগিয়ে সেরা ‘ত্রিনয়নী’, দ্বিতীয় ‘কৃষ্ণকলি’

পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে বহু শীর্ষস্থানীয় পরিচালকের হয়ে কাজ করেছিলেন পাবলিসিটি ডিজাইনার চন্দ্রমোহন গুপ্ত, ওরফে সি মোহন। তবে তাঁর শিল্পী সত্তা বোধহয় চাইত শিল্প এবং বাণিজ্যের মেলবন্ধন, যার ফলে তিনি শিব কুমার এবং জেব রহমান নামের দুই অপেক্ষাকৃত অখ্যাত অভিনেতাকে নিয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন একটি ছবির। সঙ্গীতের দায়িত্বে ছিলেন সোনিক-ওমি।

শক্তি সামন্তের সঙ্গে আগে কাজ করেছিলেন মোহন। বস্তুত তাঁরই ডিজাইন করা আইফেল টাওয়ার সম্বলিত পোস্টার ছিল 'অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস' ছবির প্রচারের কেন্দ্রে, যদিও ভুলবশত তাঁর নাম বাদ চলে যায় ছবিটির কৃতজ্ঞতা স্বীকারের তালিকা থেকে। তা নিজের নতুন ছবির প্রচার শুরু করতে নটরাজ স্টুডিওজে মোহনের সঙ্গে দেখা করেন শক্তি, এবং মোহনও শচীন দেব বর্মণের সঙ্গে সহমত হয়ে বলেন, একটা সোজা সরল, উর্দু-বিহীন নাম দরকার।

আরও পড়ুন, রামকৃষ্ণ মিশনে মুখে ভাত! ছেলের প্রথম ছবি শেয়ার করলেন বিশ্বজিৎ-অন্তরা

শক্তি জানতেন যে নিজে ছবি তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন মোহন। এও জানতেন যে ছবির কাজ বিশেষ এগোয় নি। যে নামে ছবিটি রেজিস্টার্ড হয়েছিল, তা মনে ধরে শক্তির, এবং তিনি মোহনকে অনুরোধ জানান যেন নামটি তাঁকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। কিছুদিনের টালবাহানার পর রাজি হয়ে যান মোহন।

অতঃপর নতুন রূপে জন্ম নেয় 'আরাধনা', নতুন পরিচালক, নতুন কাস্ট, এবং তারকা সঙ্গীত পরিচালক সমেত। ইংরেজিতে লেখা নামে তাঁর শিল্পের ছোঁয়ায় 'd' এবং 'h' অক্ষর দুটিকে প্রলম্বিত করে পদ্মফুলের আকার দেন মোহন নিজেই।

কয়েকটি রিল শুট হওয়ার পর গল্প পরিবর্তন করে দ্বৈত ভূমিকার বিষয়টি ঢুকিয়ে নেওয়া হয়, এবং দলে যোগ দেন লেখক গুলশন নন্দা। এর পর আর একসঙ্গে কাজ করেন নি শচীন ভৌমিক এবং শক্তি সামন্ত, যদিও তাঁদের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণই রয়ে যায়।

***

aradhana movie making 'মেরে সপনো কী রানী' শুনছেন বই হাতে শর্মিলা। গানের ভিডিওর স্ক্রিনশট

আরও পড়ুন, ‘সত্যাণ্বেষী ব্যোমকেশ’: সময়টাকে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন পরিচালক

কথা ছিল সারা দেশে ২৪ অক্টোবর, ১৯৬৯ সালে মুক্তি পাবে 'আরাধনা', কিন্তু বাজেটের খামতি এবং প্রিন্টের অভাব বশত ছবিটি ধাপে ধাপে মুক্তি পায়। প্রথম মুক্তি ৭ নভেম্বর, ১৯৬৯। কলকাতায় মুক্তি তার পরের বছরের দ্বিতীয় শুক্রবার, ৯ জানুয়ারি, ১৯৭০।

কীভাবে ইন্ডাস্ট্রি ওলটপালট করে দিল 'আরাধনা', সে কাহিনী আরেকদিনের জন্য তোলা থাক। সে কাহিনী রাজেশ খান্নার, কিশোর কুমারের, বর্মণদের।

শুধুমাত্র সত্যের খাতিরে বলা, যে দর্শক কোনোকালেই তথ্যের সত্যতার বিশেষ ধার ধারেন না, বিনোদন হলেই হলো। বেশ জমাটি বিনোদন। নাহলে চল্লিশের দশকে ট্রেনে বসে ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত একটি বই - অ্যালিস্টেয়ার ম্যাকলিনের 'হোয়েন এইট বেলস টোল' - পড়ছেন শর্মিলা, এ নিয়ে আর কিছু না হোক, 'টাইম ট্র্যাভেলের' প্রশ্ন হয়তো উঠতই।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার: প্রিয়দর্শিনী বসু, যাঁর মাধ্যমে শচীন ভৌমিকের সঙ্গে ২০০৯-১০ সালে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়, যেখান থেকে জন্ম নেয় একাধিক সাক্ষাৎকার
(লেখক ব্যাঙ্গালোর নিবাসী SAP উপদেষ্টা। তাঁর লেখা বইয়ের তালিকায় রয়েছে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত 'R D Burman: the Man, the Music', MAMI বিজয়ী 'Gaata Rahe Mera Dil', এবং একাধিক মহলে সমাদৃত 'S D Burman: the Prince-Musician'.
Durga Puja 2019
Advertisment