/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/26/cats-2025-09-26-18-18-57.jpg)
ভয়াবহ ঘটনা
Nafisa Ali Health: দ্বিতীয়বার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ নফিসা আলি। প্রথমবার এই রোগের সঙ্গে লড়াই করার সাত বছর পর ফের আক্তান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি দ্য কুইন্ট-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেন। কীভাবে জীবনের এই কঠিন লড়াই লড়েছিলেন সেই জার্নির কথাই শেয়ার করেন নাফিসা। চিকিৎসকরা প্রথমে ক্যানসার শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। স্মৃতিচারণা করে বলেন, '২০১৮ সালে যখন প্রথমবার ক্যানসার ধরা পড়ে। আমি জানতাম আমার শরীরে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। আমি প্রতিদিন গোয়াতে হাঁটতাম, কিন্তু হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব করতে শুরু করি। তখনই বুঝেছিলাম এটা কোনও সাধারণ ব্যাপার নয়।'
বহু চিকিৎসকের তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন গুরুতর কিছু নয়। অনেকে আবার অ্যান্টিবায়োটিকও লিখে দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর সংযোজন, 'আমি আবার রেডিওলজিস্টের কাছে ফিরে গিয়ে স্ক্যানটি পুনরায় দেখার জন্য অনুরোধ করেছিলাম । আমি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম, আমি জানি আমার শরীরে কিছু একটা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকরা বলেন আমি যক্ষ্মায় আক্রান্ত। কিন্তু আমি বিশ্বাস করেননি। চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে পেট স্ক্যান করাই। মজার ছলে চিকিৎসকদের সঙ্গে বাজিও ধরেছিলাম।'
অভিনেত্রীর আরও যোগ করেন, 'যখন রিপোর্ট এল ওঁরা পুরো চুপ। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলাম এটা টিবি নয়। আমি প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ টাকা করে নিলাম। ওঁদের মন খারাপ হয়েছিল। কিন্তু আমি বললাম, কোনও অসুবিধা নেই, আমি এই লড়াইয়ে জিতব।' এই ভুল রোগ নির্ণয় ও বিভ্রান্তিই তাঁকে ক্যানসার সচেতনতা ও রোগীর অধিকার নিয়ে সরব হতে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি বলেন, 'ক্যানসার নির্ণয়ের টেস্ট আছে। চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসা করুন। অযথা টাকা খরচ করবেন না। বায়োপসি ঠিকমতো না করলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। আমার ক্ষেত্রে টিউমারে সূঁচ ঢুকানোর সঙ্গে সঙ্গেই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে। আমি তখন স্টেজ ৩-এ পৌঁছে যাই।'
আরও পড়ুন ক্যানসারের চতুর্থ স্টেজে বাঙালি অভিনেত্রী, বৃদ্ধা মা-সন্তানের দায়িত্বভার, কী বললেন তন্নিষ্ঠা?
নাফিসা CA 125 টেস্ট-এর গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। যার খরচ প্রায় ১,২০০ টাকা। এটি ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে সাহায্য করে। তিনি বলেন, 'কেউ আমাকে এটা বলেনি। বরং আমাকে ২৫,০০০ টাকার PET স্ক্যান করানো হয়েছিল। তাই এখন আমি খোলাখুলি কথা বলি। মানুষের উচিত এমন টেস্টের ব্যাপারে নিজে থেকে দাবি তোলা। আমি যেমন বোকা হয়েছিলাম অন্যরা যেন না হয়।' নফিসা সেই মুহূর্তের কথা স্মরণ করেন যখন তাঁকে জানানো হয়েছিল ক্যানসার ছড়িয়ে গেছে।
অভিনেত্রী বলেন, 'আমি হেসে ফেললাম। চিকিৎসকরা বললেন দেরির কারণে এটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আমি বললাম, কোনও অসুবিধা নেই, আমি লড়ব। তখন আমি স্টেজ ৩-এ ছিলাম আর এখন স্টেজ ৪-এ। প্রথম কেমোথেরাপির ১২ দিন পর যখন মাথায় হাত দিতেই একগোছা চুল উঠে এল। তখনই সত্যিটা মেনে নিলাম। আমি নিজেই কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম, সত্যিই আমার ক্যানসার হয়েছে।'
আরও পড়ুন 'না পারি একটু কোলে নিতে না পারি খেলতে', একরত্তির জন্য চোখে জল দীপিকার
স্টেজ ৩ ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করার সাত বছর পর ফের শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যানসার। তাঁর কথায়, 'আমি অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছিলাম। তিন বছর আগে একবার রিলাপ্স হয়েছিল তখন চিকিৎসা হয়েছিল। কিন্তু রুটিন PET স্ক্যানে ধরা পড়ল এটা স্টেজ ৪। অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। চিকিৎসকরা বললেন, চলুন কেমো ট্রাই করি। আমি শুধু মনোবলের জন্য প্রার্থনা করছি।' অভিনেত্রীর পাশাপাশি তিনি রাজনীতিবিদও। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই জারি। নফিসা তাঁর ফিল্মি কেরিয়ার শুরু করেন ১৯৭৯ সালে 'জুনুন' ছবি দিয়ে। সর্বশেষ তাঁকে দেখা গিয়েছিল অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে 'ঊঁচাই'-তে।