একমাত্র ছেলে অনির্বাণ বাইরে থাকে। গোবিন্দর পুজো, ঋতম, ঝুমা এদের নিয়ে দিব্যি বাস মুক্তি দেবীর। আরও একজন রয়েছে এই ছবিতে তিনি তারেক আলি। মুক্তি দেবীর রাগ তার উপর “বুড়ো ভাম জুটেছে”। কিন্তু স্বাধীনতা প্রিয়, মুক্ত মানসিকতা ও সংস্কৃতিসম্পন্ন এই মহিলাই প্রশ্ন তুলেছে ‘গোত্র’ কী? আর এবারও সামাজিকতার বার্তায় সকলকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন শিবপ্রসাদ-নন্দিতা। তাদের ফর্মুলা যে অব্যর্থ তার প্রমাণ গোত্র-র বক্সঅফিস রিপোর্ট।
মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গল স্ক্রিনে আবারও বাজিমাত করলেন তারা। বিশেষ করে সাড়া জাগানো সাফল্য দেখা যাচ্ছে সিঙ্গল স্ক্রিনে। উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র হাউসফুল চলছে গোত্র। প্রায় ৯২ টি হলে ১০২ টি শো ছিল প্রথম সপ্তাহে, দ্বিতীয় সপ্তাহে তা কমে ৭৪টি থিয়েটারে দাঁড়ালেও দর্শকের উত্সাহে ভাঁটা পড়েনি। গোত্র-র ডিস্ট্রিবিউটর বাবলু দামানি জানালেন, ''গোত্র সিনেমা হলে আসার পর থেকেই ব্যবসার নিরিখে তা ভালই চলছে।প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহান্তের পর বক্সঅফিস রিপোর্ট দারুণ। নতুন হিন্দি ছবি আসায় বিগত শুক্রবার তুলনায় কম আয় করেছে ঠিকই কিন্তু শনিবার তা ছাপিয়ে গিয়েছিল।আমার আশা এই ছবি পুজো অবদি চলবেই।''
আরও পড়ুন, রানু প্রসঙ্গে লতার মন্তব্যে সরব ক্ষুব্ধ ফ্যানেরা
হাতিবাগানের মিনার, ভবানীপুরের বিজলী এবং শিয়লদার ছবিঘরের কর্ণধার সুরঞ্জন পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ''প্রথম সপ্তাহের বিক্রির থেকেও দ্বিতীয় সপ্তাহটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।প্রথম সপ্তাহে না হলেও দ্বিতীয় সপ্তাহ থেক দর্শক হলে যায় ছবির কাহিনির জন্য, ছবিটা ভাল না খারাপ জেনে।প্রথম সপ্তাহ হয় মেকারের আর দ্বিতীয় সপ্তাহ হয় মেকিঙের। সেইখানে দাড়িয়ে ‘গোত্র’ সোম থেকে শুক্র গড়ে ৬০-৬৫% বিক্রি হয়েছে যেটা এক কথায় অসাধারণ।''
জয়ার কর্ণধার মনোজিত্ বণিকের কথায়, ''ছবিটা আসা মাত্রই ভাল বিক্রি দিয়েই শুরু করে। প্রথম সপ্তাহান্তে রিপোর্ট ৯৯%, কিন্তু দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে সেটাও ছাপিয়ে গিয়ে তা হয় ১০০%। সবচেয়ে ভাল ব্যাপার সমস্ত বয়সের লোকেরাই ভীড় করছে এই সিনেমাটি দেখতে এবং শুধু সপ্তাহান্তেই নয়, সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতেও।''
আরও পড়ুন, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব, ফোকাস কান্ট্রি জার্মানি, রেট্রোস্পেকটিভে মৃণাল সেন-বেরনার্দো বের্তোলুচি
অশোকা সিনেমার প্রবীর রায় বলেন, ''নান্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখার্জীর সিনামা মানেই একটা ডেডিকেটেড দর্শক আছে। এই বছরের দুট সিনেমাতেই আমরা সেটা দেখে আসছি। গোত্র যে একটা লম্বা দৌড়ের সিনেমা সেটা এই প্রথম ১০দিনেই বুঝিয়ে দিয়েছে। প্রথম উইকেন্ডে টোটাল বিক্রি ৮৬%, পরের উইকেন্ডে সেটাই বেড়ে হয়ে যায় ৯৬%। সোম থেকে শুক্র প্রতিদিন সেল বেড়েই গেছে। আমার মতে তৃতীয় সপ্তাহে দর্শক সংখ্যা আরও বাড়বে।''
একই মত অজন্তার মালিক শতদীপ সাহার। তিনি বললেন, ‘'গোত্র সিনেমাটা আমাদের প্রেডিকশানের থেকে অনেক ভাল পারফর্ম করছে, প্রতিদিন তার সেল বাড়ছে। সাধারণত অনেক বাংলা সিনেমা শনি-রবিবার ভাল পারফর্ম করলেও সোমবার স্টেডি সেল থাকেনা। কিন্তু গোত্র’র ক্ষেত্রে তা একেবারে আলাদা।'' আসলে নান্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখার্জীর সিনামা মানেই একটা ডেডিকেটেড দর্শক আছে। এই বছরের দুটো সিনেমাতেই সেই ধারা অব্যাহত।ব্যকরণের বাইরের সমীকরণে সর্বদাই সাফল্য এনেছেন শিবপ্রসাদ-নন্দিতা।