Indraadip Dasgupta On Grihapravesh Success: বলিউড ও দক্ষিণী ছবির দাপটে নাকি প্রায় বিলুপ্ত বাংলা ছবি! বক্স অফিসে একেবারে মুখ থুবরে পড়ছে বাংলা সিনেমা! বিষয়টি নিয়ে একসময় খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন পরিচালক থেকে প্রযোজক সহ অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও। কিন্তু, সময় বদলেছে- বাংলা সিনেমার সুদিন ফিরেছে। চলতি বছরের শুরু থেকে জুন মাস পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে একগুচ্ছ বাংলা ছবি। যেগুলো দর্শকের মনে দাগ কেটেছে, একইসঙ্গে বক্স অফিসে লক্ষ্মীর ভান্ডার ফুলে ফেঁপে উঠেছে। সেই তালিকায় রয়েছে 'আমার বস' থেকে 'কিলবিল সোসাইটি', 'পুরাতন', 'দ্য একেন', 'সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই'। এই পাঁচটি ছবি কোটির ক্লাবে এন্ট্রি নিয়েছে। এবার সেই তালিকার নয়া সংযোজন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত পরিচালিত 'গৃহপ্রবেশ'।
ছবি মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহে এক কোটির ক্লাব ছুঁল 'গৃহপ্রবেশ'। ভারতে প্রথম সপ্তাহে গৃহপ্রবেশের আয় ৭৫.৮৩ লাখ। শুক্রবার, ছবি মুক্তির দিন গৃহপ্রবেশের আয় ৫.০৫ লাখ, শনি ও রবিবাসরীয় ছুটির দিনে আয় যথাক্রমে ১২.৭০ ও ১৮.১০ লাখ। সব মিলিয়ে জীতু-শুভশ্রী-কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সোহিনী সেনগুপ্ত অভিনীত গৃহপ্রবেশের মোট কালেকশন ৩৯.৯৮ লাখ। দ্বিতীয় সপ্তাহে তাক লাগানো ব্যবসা করল ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের 'গৃহপ্রবেশ'। এক কোটির মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলল তাঁর স্বপ্নের প্রজেক্ট। সিনেমার প্রচারের সময় পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাোশুপ্ত একটা কথাই বারবার বলেছিলেন, 'ছবি যদি ভাল হয় তাহলে দর্শক নিশ্চয়ই হলে এসে দেখবে।'
গৃহপ্রবেশ এক কোটির মাইল ফলক ছুঁতেই বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও আশাবাদী পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বললেন, 'সিনেমা পছন্দ-অপছন্দ সবটুকু নির্ভর করে দর্শকের উপর। তাই এই জয়টাও মানুষেরই জয়। আমি যখন ৩৩ বছর ধরে গান বানিয়েছি তখন যে গানগুলো মানুষের কাছে পৌঁছেছে সেগুলো তাঁদের ভাল লেগেছে বলেই গ্রহণ করেছে। কনটেন্ট বানানোটাই গুরুত্বপূর্ণ। অভিজিৎ, সৃজিত, শিবু, কৌশিক দার ছবি তো দর্শক উপভোগ করছে। কারণ একটাই, সিনেমার কনটেন্ট ভাল। মানুষকে দোষ দিয়ে লাভ নেই যে তাঁরা হলমুখী হচ্ছেন না। মানুষ যেমন ভাল সিনেমা হলে হলমুখী হবে তেমন আবার খারাপ ছবি হলে মারমুখী হতেও সময় লাগবে না। বাকিটা ঈশ্বরের কৃপা, কিছুটা সময়ের খেলা। সময় ভাল থাকলে বাজে ব্যাটেও রান আসবে আর সময় খারাপ হলে দামী ব্যাটও রান আসবে না।'
বাংলা সিনেমার গ্রাফ একটা সময় নিম্নমুখী হয়েছিল সেই সত্যতা স্বীকার করে নেপথ্য কারণ ব্যখা করলেন ইন্দ্রদীপ দাসগুপ্ত। তাঁর মতে, '২০১৭-১৮ সালে সিনেমা কর্মী হিসেবে দেখেছি বাংলা সিনেমার গ্রাফ নিম্নমুখী হয়। এরপর কোভিড, কোভিড পরবর্তী সময়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ক্রাইসিসের জন্য সেটা আরও বেড়েছে। সিনেমা দেখা, গান শোনা, পুষ্প প্রদর্শনীতে যাওয়া, ছবি আঁকার মতো বিষয়গুলো কিন্তু, মানুষের জীবনে অপরিহার্য নয়। প্রাথমিক চাহিদা বাসস্থান, খাওয়া, ওষুধ, বেঁচে থাকা। তারপর সময় থাকলে মানুষ এগুলো করবে।'
আরও পড়ুন Grihapravesh: সমপ্রেমের গল্প 'কলঙ্কিনী রাধা' শুভশ্রী! ঋতুস্মরণে ইন্দ্রদীপের অনন্য সৃষ্টি 'গৃহপ্রবেশ'
বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ইন্দ্রদীপ। পরিচালকের সংযোজন, '২০২৪ সালে বাংলা সিনেমা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারপর বাংলা সিনেমার ভাগ্যে শিকে ছেড়েছে। 'গৃহপ্রবেশ' তৈরি না হলেও বাংলা সিনেমার গ্রাফ ঊর্ধমুখীই হত। গত দশ-পনেরো বছর যাঁরা বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত তাঁদের ছবি তো রমরমিয়ে চলছে। 'বহুরূপী', 'খাদান', 'সন্তান', 'সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই', 'এই রাত তোমার আমার'-র মতো ছবিগুলো দর্শকের মনে দাগ কেটেছে। একেন তো দেখিয়ে দিল একটা চরিত্র কত বড় হিরো। পুজোর সময় আবার অনেকগুলো বাংলা ছবি মুক্তি পাবে। মাঝে কৌশিক দার ধূমকেতু আসছে। বাংলা সিনেমা আস্তে আস্তে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ-এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা আমার বিশ্বাস।' বক্স অফিসের ফলাফলে স্যাটিসফায়েড? ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের স্পষ্ট জবাব, 'আমি আশাপ্রদ। বর্তমান পরিস্থিতিতে খুশি। স্যাটিসফেকশন মরীচিকার মতো।'