Javed Akhtar-Salim Khan News: রূপোলি দুনিয়ার তারকাদের জীবন যে সবসময়ই ভীষণ মসৃণ হয় এমনটা নয়। অনেক সময় তাঁদের জীবনেও থাকে অজানা অনেক কাহিনি। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে হয়ত সফল্যের মুখ দর্শণ করেন। গ্ল্য়ামারের চাকচিক্যের আড়ালে তা অনেক সময় অন্তরালে চলে যায়। বিশিষ্ট গীতিকার জাভেদ আখতারের জীবনেও রয়েছে সেইরকমই এক গল্প। গীতিকার হিসেবে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। কিন্তু, সঠিক পারিশ্রমিকের জন্য দশকের পর দশক সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি ছবি নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার অনু সিং চৌধুরীর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অতীত নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করলেন জাভেদ আখতার। আজও একজন লেখককে তাঁর প্রয়োজনীয় পারশ্রমিকের জন্য লড়াই করে যেতে হয় বলে বিস্ফোরক গীতিকার ও লেখেক জাভেদ আখতার।
তঁর মতে, 'মানুষের জন্য কোনও পরিস্থিতিই প্রতুকূল নয়। প্রতি মুহূর্তে মানুষের লড়াই জারি। আমরা যখন ফিল্মি দুনিয়ায় পা রেখেছিলাম তখন কোনও সিনেমার পোস্টারে লেখকের নামের উল্লেখ থাকত না। সেই সঙ্গে অত্যন্ত কম পারিশ্রমিক দেওয় হত। কৃতিত্ব আর প্রাপ্য পারিশ্রমিক কোনওটাাই লেখকদের ভাগ্যে ছিল না। একের পর এক ভাল ছবি দর্শককে উপহার দেওয়ার পরও লড়াই করে যেতে হচ্ছে।' সেলিমের সঙ্গে যৌথভাবে জাভেদের লেখা বলিউডে বিবর্তন এনে ছিল। সকলের কাছে তাঁরা পরিচিত ছিলেন সেলিম-জাভেদ নামে। একটা সময় সুর চড়িয়ে বলেছিলেন, 'একটা সময় শর্তসাপেক্ষ কাজ শুরু করলাম। আমাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক না দিলে আমরা কাজ করব না।' যদিও সেই লড়াইটা খুব একটা সহজ ছিল না। তবে একদল লেখক এটুকু বলার সাহস জুগিয়েছিলেন যে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থের বিনিময়েই কাজ করবেন।
আরও পড়ুন চারবার বিয়েতেও মেলেনি সুখ, হাসপাতালেই সব শেষ! জীবনাবসান কিংবদন্তী সংগীতশিল্পীর
স্মৃতিচারণ করে জাভেদ বলেন, 'আমাদের প্রথম ছবি আন্দাজ, দ্বিতীয় হাতি মরে সাথী, তৃতীয় সীতা অউর গীতা, চতুর্থ ছবি জঞ্জির। প্রত্যিকটি সিনেমাই সুপারহিট। তারপরই আমরা নড়েচড়ে বসলাম। ফ্লপ ছবির নায়করা এই সিনেমাগুলোর মাধ্যমে সাফল্য পেল। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, আর নয়, চারটি হিট ছবি উপহার দিয়েছি। এবার আমরা আমাদের সঠিক পারিশ্রমিকই দাবি করব।' জঞ্জির-এ অভিনয়ের পরই রাতারাতি স্টার হয়ে গেলেন অমিতাভ। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একজন অভিনেতা যখন সাফল্যের নিরিখে পারিস্রমিক পাচ্ছেন তখন সিনেমার লেখক কেন পাবেন না?
জাভেদ জানান, চারটি হিট ছবির পরও তাঁরা টাকার অঙ্ক নির্দিষ্ট করলে কেউ তাঁদের সেই পরিমান অর্থ দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। সেই জন্য ন'মাস কোনও কাজ করেননি। টাকার অঙ্ক শুনে অনেকেই হাসতেন। সেই সময় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ব্যখা করতে গিয়ে বলেন, 'আমি তখন ১৩ হাজার টাকা দিয়ে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড অ্যম্বাসডার কিনেছিলাম। সেটাও বিক্রি করে দিতে হয়েছিল। কারণ তখন আমার হাতে কোনও কাজ ছিল না। তবুও আমরা আমাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিকের জন্য লড়াই করেছি। অভিযোগ করে কোনও লাভ হয় না, আসলে কোনও পরিস্থিতিই মানুষের জন্য আদর্শ নয়।'
আরও পড়ুন 'মাঝরাতে মদ্যপ অবস্থায় সলমন-সেলিমের...', নেশার ঘোরে কী করেছিলেন কিরণ? মুখ খুললেন অভিনেতা
১৯৭০ সালে সেলিম-জাভেদ একসঙ্গে ২৪ ছবিতে কাজ করেছেন। তার মধ্যে ২২ টিই ছিল ব্লকব্লাস্টার হিট। আইকনিক সংলাপ আর চরিত্রই ছিল তসেই সকল সিনেমার ইউএসপি। বলিউডের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লেখকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন।