ঋতু ফুরোলেও ভূমিষ্ঠ হচ্ছে 'জ্যেষ্ঠপুত্র'। এখানে আমরা বড়পর্দায় ছবি রিলিজের কথা বলছি, তবে তার পাশাপাশি যাঁর কথা বলছি, তিনি আক্ষরিক অর্থেই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠপুত্র। ছবি মুক্তির আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
ঋতুপর্ণ ঘোষের অবর্তমানে আপনি 'অন্য নায়ক' তৈরির কথা ভেবেছিলেন?
না! ঋতু চলে যাওয়ার পরে ওকে নিয়ে আমি কথাই কটা বলেছি? আপনারাও দেখেছেন। এটা আমি পারি না। ঋতু আমার কাছে এমন একটা জায়গা যে ওকে নিয়ে বলতে গেলে গলা বুজে আসে। সে কারণে এদিকটা নিয়ে ভাবিইনি।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তো তিনটে ছবি হয়ে গেল...
হ্যাঁ! আর এই ছবিটা তো এক্কেবারে অন্যভাবে এলো। গল্প নিয়ে আলোচনা করতে করতে কৌশিক বলল, "বুম্বাদা, এটা তো তোমাকে নিয়ে ভেবেছিল, ঋতুদার সঙ্গে তখন কাজ করছিলাম তাই জানি। চিঙ্কুদা (ঋতুপর্ণর ভাই ইন্দ্রনীল ঘোষ)-কে কি একবার বলে দেখব?" এভাবেই তৃতীয় কাজের সূচনা।
আরও পড়ুন, ‘শ্লীলতাহানির পরে’-র কাহিনি সেলুলয়েডে, মুখ্য ভূমিকায় সৌমিত্র
কিন্তু ঋতুপর্ণর নামের সঙ্গেও তো বিতর্ক জড়াচ্ছে।
সেটা খুব দুঃখের। কিন্তু কথা বলে সবটা ঠিক করে নিয়েছি। জ্যেষ্ঠপুত্র হিসাবে যেভাবে কথা বলে নিয়েছি, মনে এটা নিয়ে আর কোনও মান-অভিমান ক্ষোভ নেই। যে বলেছে, সেও আমাদের ছোট ভাই। আর এটা না বিশ্বাসের জায়গা, অধিকারের প্রশ্ন। আসলে সেটা তো পুরোটাই চিঙ্কুর। কষ্টের জায়গা এটাই, যে ঋতুর নামের সঙ্গে কিছু কিছু কথা জুড়ে গেল।
বাঙালির কাছে ঋতুপর্ণর আলাদা জায়গা রয়েছে, সেটাই কি 'জ্যেষ্ঠপুত্র' দেখার একমাত্র কারণ হবে?
না না! কেবলমাত্র ঋতুপর্ণ ঘোষের কারণে ছবিটা দেখতে যাবেন না। গল্পটা সাজানো কৌশিকের মতো করেই, কিন্তু কিছু জিনিস ঋতু নোটসে লিখে দিয়ে গেছে, সেগুলো চমক। সেগুলো কৌশিক রেখেছে। আর এটা একটা পরিবারের ছবি। ঋতুর গল্প কৌশিক অন্তস্থ করেছে, সেটা দেখতেই আসুন। আসলে ছবিটা ভীষণই মধ্যবিত্ত।
আপনাকে নিয়েই এই গল্পটা ভাবা। ফ্লোরে সেই পুরোনো স্মৃতি তাড়া করেছে নিশ্চয়ই!
ওরে বাবা! মায়ের চলে যাওয়ার সময়টা দেখেই ঋতুর মনে এই গল্পটা আসে। ফ্লোরে এটা বারবার মনে করিয়েছে। কিছু কিছু দৃশ্যে তো কৌশিককে বলেছি, "জানিস তো, তুই এভাবে লিখেছিস কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এভাবে হয়েছিল।" শ্রাদ্ধবাড়িটা অন্য রূপ নিয়ে নেয়, তখন একটা মানুষকে ঘিরে কাহিনী বোনা হতে থাকে।
ইন্ডাস্ট্রিও আপনার নতুন নাম দিয়েছে 'জ্যেষ্ঠপুত্র'...
(চেনা হাসি) ভাল লাগছে। নতুন নতুন গল্পে ছবি হচ্ছে। বাঙালি যে নিজের ঘরানায় ফিরতে পারছে তাতে আনন্দ হচ্ছে। দায়িত্ব বাড়ছে। এখন চিন্তা, বাংলা ছবির মার্কেট কী করে বড় করা যায়? কয়েকটা মাল্টিপ্লেক্স নিয়ে লড়াই করছি। হিন্দি, ইংরেজী ছবি তো আছেই। বাজার এবং বন্টনের পরিধি তো বাড়াতেই হবে। সে ব্যাপারেই কাজ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি।