খরাজ মুখোপাধ্যায়
৩ মে জাতীয় প্যারানর্মাল ডে (National Paranormal Day)। আজকের দিনে নিজের জীবনে ভূত দেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গেলে যে ভাবে শুরু করতে হবে সেটা হল, আমি ভেবেছিলাম ভূত কিন্তু, পরে বুঝেছিলাম সেটা পূর্বপরিকল্পিত একটা প্ল্যান। আমাকে ভয় দেখানোর জন্যই ওটা প্ল্যান করে করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে আর কোনওদিন ভূতে পাইনি। কারণ আমার তো সামনে থেকে ভূত দেখার অভিজ্ঞতাটা হয়েই গিয়েছে। সত্যিকারের ভূত না হলেও আমি তো ভূতই ভেবেছিলাম। তাই আজ আর কোনও পরিস্থিতিতেই আর যাই হোক ভূতের ভয় পাই না। এবার সেই মজার ঘটনাটা বলি। যা শুনলে প্রথমে সকলেই আতকে উঠবে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত যদি গল্পটা কেউ শোনে তাহলে হয়ত যে ভূতে ভয় পায় তাঁরও সব ভয় উবে যাবে।
সেই ঘটনাটা কী?
গ্রামের বাড়িতে আমার দিদা থাকতেন। দিদা মারা যাওয়ার পর দিদার ঘরেই আমরা কয়েকজন রাতে একসঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখন আমার তুতো দাদা-দিদিরা এসে বলেছিল, তোরা সবাই এই ঘরে বসে আছিস কেন? ঘরটা তো এখনও শুদ্ধ করা হয়নি। দিদা সবেই মারা গিয়েছেন। কোথায় আত্মা ঘুরছে-ফিরছে। আমরা ওঁদের কথাটা উড়িয়ে দিয়েছিলাম। ওঁরা চলে যেতেই আবার গল্প-আড্ডায় মজেছিলাম। তখনও আমাদের গ্রামের বাড়িতে ইলেট্রিসিটি আসেনি। অন্ধকারে লন্ঠন জ্বালিয়েই গল্প করছিলাম। রাতে যখন আমাদের খেতে ডেকেছে আমরা গিয়েছি। সেই সময় আমাদের খেতে বসা মানে প্রায় ১৭-১৮ জন সদস্য। আমরা যে কজন দিদার ঘরে গল্প করছিলাম খেতে এলাম। এসে তো দেখি সেখানে হাহাহিহি চলছে। আমার দিদি (জ্যেঠুর মেয়ে) সকলকে খেতে দিচ্ছে। হঠাৎ আমাকে বলল, তুই লন্ঠনটা নিয়ে এলি না! এদিকে আমার কিন্তু, স্পষ্ট মনে আছে লণ্ঠন নিয়েই আমি নেমেছি। কিন্তু, ওঁরা বলছে না তুই নিয়ে আসিসনি। এদিকে আমারও জেদ চেপে গিয়েছে। আমি বারবার বলছি যে, না আমি লন্ঠন নিয়েই নেমেছি। এবার ওঁরা আমাকে চ্যালেঞ্জ করল। আমি তো জানি যে ঘরের শিকল তুলেই আমি খেতে এসেছি। ওঁদের কথা মতো আবার দিদার ঘরের দিকে গেলাম। শিকল খুলে দরজা খুললাম। এদিকে তো ঘর পুরো অন্ধকার। আমি বাইরে দাঁড়িয়েই বললাম, দেখ আমি কিন্তু লন্ঠন নিয়েই নেমেছিলাম। দিদি তখন বলছে, ওই দেখ লন্ঠন ওখানে। আমি তখন অন্ধকার ঘরেই ঢুকেছি। আর ঢুকেই দেখি দিদা সাদা শাড়ি পরে দাড়িয়ে আছে! আমি তো প্রাণপনে দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসেছি। এতটাই জোরে দৌঁড়েছিলাম হাতের অনেকটা জায়গা কেটে গিয়েছিল। তারপর পাশের ঘরে শিবুকাকা ছিল। ওঁর কাছে গিয়ে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলি, দিদা গো দিদা...ভূত...ভূত..ভূত..। তারপর দেখি দিদি আর আমার বড়দা ওইভাবে সাদা শাড়ি জড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাকে প্র্যাঙ্ক করা হয়েছিল। তবে আমি খুব লাভবান হয়েছিলাম। কারণ ভূত সাক্ষাৎ দেখলে কেমন উপলব্ধি হয় সেটা বুঝেছিলাম। দ্বিতীয়বার জীবনে আর কেউ বোকা বানাতে পারেনি।
আর ভূতের রাজা যদি এখন আমাকে বর দিতে চায় তাহলে কী চাইব?
আজকের দিনে যদি ভূতের রাজার থেকে বর পাওয়ার সত্যিই সুযোগ আসে তাহলে প্রথমেই যেটা চাইব সেটা হল আমার দেশ ভারতবর্ষ যেন শান্ত হয়। মানুষ যেন সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
আরও পড়ুন শুক্তো থেকে মাছের কালিয়া লুচি দিয়ে কষা মাংস জাস্ট ফাটাফাটি, কলকাতার মানুষ তো আরও ভাল: সৌরভ শুক্লা