তাঁর আকস্মিক মৃত্যু নির্বাক করে দিয়েছিল আসমুদ্রহিমাচলকে। কলকাতায় কনসার্টে এসে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-র। কলেজ ফেস্টের গান গাইতে এসে এমন মর্মান্তিক পরিণতি হবে গায়কের তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি কেউ। তাঁর মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক-রাজনীতিও কম হয়নি। এবার কেকে-র মৃত্যু নিয়ে রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।
গত ৩১ মে কলকাতার নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। এর পর হোটেলে ফিরে যান। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় সিএমআরআই হাসপাতালে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি গায়ককে। মৃত্যু হয় তাঁর। আর সেই মৃত্যু অনেক প্রশ্ন রেখে যায় তিলোত্তমার কাছে। আয়োজকদের গাফিলতি, বিশৃঙ্খলা, শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের বেনিয়মকে কাঠগড়ায় তোলেন কেকে-র অনুরাগীরা। কেকে-র মৃত্যু নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে।
আরও পড়ুন ফের নজরুল মঞ্চ মাতাবেন কেকে! এবার দুর্গাপুজোয় চমকের পর চমক
সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল। তিনটি মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। এদিন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ জানান, গুরুদাস কলেজের বার্ষিক ফেস্টে কেকে-র অনুষ্ঠান রাখা হয় রবীন্দ্র সরোবরের নজরুল মঞ্চে। আসন সংখ্যা ছিল ২,৪০০, সেখানে দর্শক হয়েছিল ৭,৫০০। নিরাপত্তারক্ষী-ই নিজে জানিয়েছেন, পাঁচিল টপকে, গেট ভেঙে প্রচুর ছেলে-মেয়ে হলে ঢোকে। এত ভিড় সামাল দেওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন লোকাল ট্রেনে KK-এর গানে ঝড় তুললেন শিল্পী, ভিডিও ভাইরাল মুহূর্তেই
পাশাপাশি অভিযোগ, অনুষ্ঠানে ৩০ লক্ষ টাকা খরট হয়। এর জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ চাঁদা তোলা হয়। সেই টাকার হিসাব কোথায়! আইনজীবী এই ঘটনার তদন্ত ইডি-কে দিয়ে করানোর দাবি জানিয়েছেন। আরও একটি মামলায় আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, নজরুল মঞ্চে সেদিন অতিরিক্ত ভিড় ছিল। হলের এসি কাজ করছিল না। পুরো ঘটনার জন্য উদ্যোক্তাদের গাফিলতি দায়ী।
আরও পড়ুন KK-র মৃত্যুতে নয়া মোড়, CBI তদন্তের দাবিতে মামলা, অনুমতি কলকাতা হাইকোর্টের
মামলার শুনানিতে রাজ্যের এজি জানান, ঘটনার এফআইআরে দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু কেকে-র পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কিছুটা সময় দেওয়া হোক। রাজ্য তার বক্তব্য পেশ করবে। কিন্তু এজি এই জনস্বার্থ মামলাগুলির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। হাইকোর্টের নির্দেশ, তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এই মামলায় হলফনামা জমা দিতে হবে।