New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/03/madhabi-2025-08-03-17-47-35.png)
যা বলেছিলেন মাধবী?
Madhavi Mukherjee on Ritwik Ghatak: ঋত্বিক ঘটক যেভাবে ছবি বানাতেন, তিনি যে কেন এভাবে কাজ করতেন, কেনই বা সকলের মনের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, অনেক প্রশ্নের উত্তর আজও তাঁর কাছে অজানা। মাধবী মুখোপাধ্যায় - তাঁর চোখ বেশ কথা বলত অভিনয়ের ক্ষেত্রে..
যা বলেছিলেন মাধবী?
ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তিদের কথা বলতে গেলে বাংলা ছবির এই কান্ডারিদের নাম নিতেই হবে। কিন্তু, যে পরিচালক গোটা ফ্লোর জুড়ে শুধুই আতঙ্ক ছড়িয়ে রাখতেন, যিনি বকাঝকা করতেন, যার ভয়ে আত্মারাম খাঁচা হয়ে থাকত সকলের। বাংলা ছবিতে যদি সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে কথা হয়, তবে ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে কথা হবে না, এমনটা হয় না। কিন্তু, ঋত্বিক ঘটক তাঁর অভিনেতা কিংবা অভিনেত্রীদের সঙ্গে যা করতেন। একবার তো রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। তাঁকে বলতে শোনা গেল সুবর্ণরেখা নিয়ে নানা গল্প।
এটি ১৯৬৫ সালের এমন এক সিনেমা যেই ছবির শুটিংয়ের কথা বেজায় মনে ছিল মাধবীর। কিন্তু, ঋত্বিক ঘটক যেভাবে ছবি বানাতেন, তিনি যে কেন এভাবে কাজ করতেন, কেনই বা সকলের মনের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, অনেক প্রশ্নের উত্তর আজও তাঁর কাছে অজানা। মাধবী মুখোপাধ্যায় - তাঁর চোখ বেশ কথা বলত অভিনয়ের ক্ষেত্রে। এবং খেয়াল করলে দেখা যাবে, সুবর্নরেখার সময়, নানা কিছু তিনি বুঝেছেন কিংবা অনুভব করেছেন। সেই ছবির শুটিংয়ে মা তাঁকে পৌঁছে দিয়ে এসেছিলেন।
Actor Death News: দীর্ঘদিনের লড়াই শেষ, না ফেরার দেশে ভারতীয় সিনেমার…
সুবর্ণরেখা নিয়ে নানা গল্প :
অভিনেত্রী বলেন, আমরা ওখানে শুটিং করতাম, খুব অদ্ভুতভাবে। যে ঘরে আমরা থাকতাম, সেখানেই আবার আমাদের সকালবেলা সব সরঞ্জাম সরিয়ে শুটিং হত। উনি আমায় ডেকে বললেন, দেখো মেয়ে একবার যখন কেউ আমায় রিজেক্ট করে, আমি তাঁকে আর ডাকি না। কিন্তু, তোমায় ডাকলাম। আমি তখন খুব লজ্জায় পড়ে গেলাম। কিন্তু, উনি যেমন নির্দেশ দিতেন, আমি সেভাবেই কাজ করতাম। প্রায় ১ মাসের মত ছিলাম। অনেকরকম অভিজ্ঞতা হল। সিনেমার তো বটেই, তাঁর সঙ্গে অনেককিছু শিখলাম। কিভাবে অভিনয় করতে হয়। কিভাবে দোষ ত্রুটি ঢাকতে হয়। আরেকটা জিনিস উনি শেখালেন, যে কথা বলব যখন যেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলি। তাতে অনেককিছু শেখা যায়। এতে নাকি মুখের বিকৃতি কমবে।
অভিনয় শেখাতেন কিভাবে ঋত্বিক ঘটক?
উনি অভিনয় দেখিয়ে দিতেন। কোথায় কী যাব আসব, বসব - অর্থাৎ সমস্ত পজিশন উনি দেখিয়ে দিতেন। তারপর বলতেন, এটা কি তুমি পারবে? আমার তো মনে হয় না। এটা শোনার পর না, আমার আরও রাগ হত। খালি ভাবতাম, যে উনি আমাকে এভাবে বললেন। এবং সেই রোল টা করার জন্য এত স্পৃহা হতো তখন মনের মধ্যে। খালি মনে হতো যে করতেই হবে এটা আমাকে। আমার খালি মনে হতো এর থেকেও যেন ভালো অভিনয় আমি করতে পারি। ঋত্বিকদা যেটা শিখিয়ে দিচ্ছেন তার থেকেও যেন বেস্ট হয় আমার অভিনয়। এরকম করতেন উনি। হয়তো এটাই ছিল উনার কাজ করার স্টাইল।
Sabyasachi Chakraborty: সহঅভিনেত্রীদের সঙ্গে প্রেম হয়নি? শশুরমশাইকে প্…
কী শব্দ ব্যবহার করতেন তিনি?
শুধু মাধবী মুখোপাধ্যায় বললে ভুল হবে, ঋত্বিক ঘটক নাকি সকলকে এরকম বকাঝকা দিয়ে কাজ করাবেন। অভিনেত্রী বললেন, আমি আরেক জনকে দেখেছি, শতিন্দ্র ভট্টাচার্যকে ঋত্বিক ঘটক এরকম বকাঝকা দিয়েই কাজ করাতেন। উনার যারা অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকতেন তাদের সকলকে এতটা চিন্তায় ফেলে দিতেন তিনি, প্রত্যাকে ভীষণ ভয় থাকত শুটিং ফ্লোরে। তবে ভালো লাগতো আমার। কিছু প্রশ্নের উত্তর আজও আমার কাছে অধরা। উনি আগে থেকেই বলে দিতেন পরের দিন কি শুটিং হবে। ধরে নেওয়া যাক আমার একটা গানের দৃশ্য আছে। এই গানটা যদি ঠিকঠাক না হতো তাহলে আমার কপালে যে কি দুঃখ লেখা থাকতো। উনি সোজাসুজি বলতেন, এই গানটা যদি পরের দিনে শুটিং ঠিক না হয়, তাহলে তোমাকে দেখে নেব।
অভিনেত্রী আরো বললেন, উনি একটা শব্দ ব্যবহার করতেন, কাঁটাইলের রাত। আমি অনেকদিন পর জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে এর অর্থ কি? তখন জানতে পারলাম যে ওই রাতে নাকি বলি দেওয়া হয়। মানে আমি যদি ঠিকঠাক শুটিং না করি, গানের লিপসিং না হয়, তাহলে উনি আমাকে বলি দেবেন। আমিও গান মুখস্থ করতাম। উঠে পড়ে লাগতাম।