পারভীন বাবির একসময়কার ঘনিষ্ঠ ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট। সেই সময় অভিনেত্রী মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মহেশ ভাট পারভীনের শেষ দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন এবং বলেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও পারভীন কখনও লাইমলাইট থেকে পুরোপুরি সরে আসতে পারেননি।
"দ্য হিমাংশু মেহতা শো"-তে অংশ নিয়ে মহেশ বলেন, "তখন সে তার মানসিক ভাঙনের শেষ ধাপে পৌঁছে গিয়েছিল। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল যে, একবার যদি কেউ এমনভাবে ভেঙে পড়ে, তবে এই প্রতিযোগিতামূলক ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা অসম্ভব। ওর উচিত ছিল নিজেকে সরিয়ে নেওয়া। কারণ তার শরীর এবং মন - দুটিই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমার মনে হয়, একবার কেউ এই জগতের স্বাদ পেয়ে গেলে, আর্কলাইটের আকর্ষণ থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন। আর তার সঙ্গে যা ঘটেছিল, তা নিঃসন্দেহে এক নির্মম ট্র্যাজেডি।"
সেই কথোপকথনে মহেশ আরও জানান, পারভীনের বলা একটি কথা আজও তাঁর মনে গেঁথে আছে- "আমার ভয় করছে।" তিনি বলেন, "পর্দার সামনে যে গ্ল্যামারাস নারীকে সবাই দেখেছিল, বাস্তবে তিনি ছিলেন একেবারে সহজ-সরল। বন্ধ দরজার আড়ালে, তিনি ছিলেন গুজরাটের জুনাগড়ের এক সাদামাটা মেয়ে, যিনি চুলে তেল দিয়ে, রান্না করতে ভালোবাসতেন। কিন্তু তার পরনে থাকত দারুণ আকর্ষণীয় পোশাক, যেটা তাকে সুপারস্টারের মতো করে তুলত। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তিনি ছিলেন একেবারেই সহজ মানুষ।"
বিবিসি নিউজ হিন্দিকে দেওয়া এক পুরনো সাক্ষাৎকারেও মহেশ ভাট পারভীনের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, "আমি ওর পতন নিজের চোখে দেখেছি। আমি ওর সঙ্গে ছিলাম সেই সময়। সকালে ওকে মেকআপ করে শুটিংয়ে যেতে দেখেছি, আর সন্ধ্যায় ফিরে এসে দেখেছি, ও এক কোণে পশুর মতো বসে আছে! কাঁপছে! বলছে, 'কেউ আমাকে মেরে ফেলবে।' ও স্কিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিল।"
মহেশ স্বীকার করেন, "আমি তাকে সাহায্য করতে অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু এই ধরনের অসুস্থতা ধীরে ধীরে সবকিছু নষ্ট করে দেয়। আমাদের সম্পর্ক শেষ হয়েছিল এক বেদনাদায়ক মোড়ে।" পারভীন বাবি ২০০৫ সালে প্রয়াত হন।