'যারা তসবির সে তু, মেরি মেহবুবা' - আর সেই 'মেহবুবা' মহিমা চৌধুরী (Mahima Chowdhury) ক্যামেরার সামনে আজ অতিরিক্ত কনসাস, বহুদিন পর ক্যামেরা ফেস করছেন বলে কথা। ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত মহিমা যেন আজ আরও বেশি পরিণত। আর অনুপম খেরের হাত ধরেই সিনেমার সেটে ফিরছেন মহিমা। সে আজ আরও সাহসী এক যোদ্ধা। নিজেকে নিয়ে কী বললেন অভিনেত্রী?
অনুপম খেরের (Anupam Kher) সঙ্গে কাজ করছেন মহিমা 'দ্যা সিগনেচার' ছবিতে। আমেরিকায় তার ট্রিটমেন্ট চলাকালীন বর্ষীয়ান অভিনেতা ফোন করেন তাঁকে, একরকম জোর করেই, রাজি করান। মহিমা বলেন, "বাড়িতে নির্দিষ্ট সময়ে ফটোশুট অনেক করেছি কিন্তু আজ হঠাৎ করেই কেমন যেন লাগছে। আমার ক্যানসার ট্রিটমেন্ট শুরু হওয়ার পর যথারীতি সব চুল উঠে যায়, এবং সেই সময় থেকেই অজস্র ওয়েব সিরিজ, নানা ওটিটি প্রজেক্টের সুযোগ আসছে আমার কাছে। আর আমিও চুল উঠে যাওয়ার কারণে সব অফার ফেরাতে থাকি। কিন্তু অনুপম একেবারেই বন্ধুর মত পাশে দাঁড়ায়। আমি যখন তাঁকে বলি যে চুল উঠে গেছে আমার, আমি উইগ পড়ে কাজ করব"। সেই মুহূর্তেই না করে দেন অনুপম, বললেন "তুমি যেমন ঠিক সেইভাবেই কাজ করো। কোনওরকম বদল আনার দরকার নেই"।
এমনিতেও ভীষণ শান্ত স্বভাবের মহিমা (Mahima Chowdhury diagnosed with Cancer)। তথাকথিত একটু ভীতু-ই সে। বলেন, "কেমো চলাকালীন একদিন হঠাৎ একটা বাচ্চাকে দেখতে পেলাম। সে আমায় এসে বলছে তোমার এটুকু ওষুধ! আমার তো কত ওষুধ, এটা দিয়েই তো ঠিক হব আমরা। ওকে দেখে সাংঘাতিক মনের জোর পেলাম, ভাবলাম কত স্পিরিট ওর মধ্যে। ওইটুকু বাচ্চা কেমো নেওয়ার পরে ৫ দিন মাত্র বিশ্রাম নেয়। তারপর থেকে সারাদিন খেলে বেড়ায়।"
আরও পড়ুন < মালাইকা-কে ধোঁকা দিচ্ছেন অর্জুন! ফোন ঘেঁটে কুকীর্তি বের করতে চাইছেন করিনা >
দুজনের বন্ধুত্ব দেখার মতো। ধমক দিয়ে বকেই মহিমাকে ছবি করানোয় রাজি করান অনুপম। শরীর আগের থেকে একটু সুস্থ। মহিমা বলেন, "আমার ব্রেস্ট ক্যানসারের কোনও উপসর্গ কিছু ছিল না। বরং, যেমন সাধারণ চেক আপ হয় সারাবছরে একবার, ওটাই করতে গেছিলাম। সেই মুহূর্তেই যিনি আমার টেস্ট করছিলেন তিনি বলেন একবার ক্যানসার টেস্ট করিয়ে নিন। শোনামাত্রই, আমি ছুটে যাই ডাক্তারের কাছে। প্রথমবার বায়োপসি করেও কিছু পাওয়া যায়নি। সেলগুলো রিমুভ করার পর হঠাৎ করেই নজরে আসে একদম ছোট একটি সেল সেটা ক্যানসারে পরিণত হয়। তখন ডাক্তার বলেন, আমায় কেমো দিতে হবে। সত্যি বলছি, সেই মুহূর্তেই অঝোরে কাঁদতে শুরু করি। কিছু মাথায় আসছিল না। আমার বোন খুব সাহায্য করেছে সেই সময়। এমনকি আমায় এও বলে বসেছিল ১৭ বছরের মেয়েদের মতো কাঁদছ কেন? এই রোগ সেরে যাবে, যেখানে ডাক্তার বলছে সেরে যাবে সেখানে কীসের এত ভয়। ক্যানসার যদি প্রথম স্টেজে ধরা পড়ে তাহলে কিন্তু সেরে যাবে। তবে হ্যাঁ, প্রথম দিকে মা বাবাকে বলিনি। ওনারা চিন্তা করবেন বলেই বলিনি"।
আরও পড়ুন < গোর্খাল্যান্ডে বেড়াতে গেছেন জোজো! এক পোস্টেই পৃথক রাজ্যের বিতর্ক উস্কে দিলেন গায়িকা >
দুদিন ধরে শুট করছেন মহিমা। অনুপম বললেন, "ও আমার হিরো, ওর মধ্যে আলাদা রকম এক পাওয়ার আছে"। সেটে ফিরে এক আলাদাই শান্তি রয়েছে তাঁর মনে। অভিনেত্রীর বক্তব্য, ক্যানসার শব্দটা বড় হলেও লড়াই চালিয়ে যেতেই হবে। নিজেকে মন থেকে সুস্থ থাকতে হবে। এমনও কিছু মানুষকে তিনি দেখেছেন যাঁরা কেমো নেওয়ার পরেই অফিসে দৌড়েছেন। তার কারণ ওঁরা ভীষণ মানসিক ভাবে শক্ত। মন থেকে ফিল করতে চাইতেন যে তারা একেবারেই সুস্থ, কোনও সমস্যা তাদের নেই।