/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/monisha-unni-movies-death-mohanlal-2025-10-16-12-29-33.jpg)
কী হয়েছিল সঙ্গে?
Actress who lost life at 21: সব অভিনেতার জনপ্রিয়তার জন্য দীর্ঘ কেরিয়ারের প্রয়োজন হয় না। কেউ কেউ অল্প কিছু সময়ে, নিজের অভিনয়েই কোটি মানুষের হৃদয় জয় করে নেন। এমনভাবে, যে মৃত্যুর বহু বছর পরেও তাঁরা অমর থেকে যান দর্শকদের স্মৃতিতে। ঠিক তেমনই এক নাম - মনিশা উন্নি। মাত্র ২১ বছর বয়সে তাঁর জীবন থেমে গেলেও, মালয়ালম সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ে আজও অমলিন তাঁর ছাপ।
প্রবীণ মোহিনীঅট্টম নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী, শ্রীদেবী উন্নি এবং নারায়ণন উন্নি-র কন্যা মনিশা খুব অল্প বয়সেই ক্যামেরার সামনে পা রাখেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর অভিষেক ঘটে এম. টি. বাসুদেবন নায়ার রচিত এবং হরিহরণ পরিচালিত কালজয়ী ছবি ‘নখক্ষথাঙ্গাল’ (১৯৮৬)-এ। কেরালার সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে তৈরি, এই সংগীতনির্ভর প্রেমের গল্পে তাঁর অভিনয় এতটাই মন ছুঁয়ে গিয়েছিল যে, তিনি সেরা অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে এই সম্মান পাওয়া অভিনেত্রী হিসেবে তিনি জায়গা করে নেন।
Mimi Chakraborty-Kali Puja: আলো উৎসবে অবলাদের আর্তনাদ! শব্দবাজি কমাতে অনুরোধ মিমি চক্রবর্তীর
এরপর একে একে তিনি কাজ করেন এম. টি. নায়ারের লেখা বেশ কয়েকটি ছবিতে- পেরুমথাচান (1990), ভেনাল কিনাভুকাল (1991) এবং কাদাভু (1991)। পাশাপাশি মোহনলালের বিপরীতে তিনটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন- প্রিয়দর্শনের আরিয়ান (1988), কে. মধুর অধিপান (1989), এবং সিবি মালায়েলের কমলাদালাম (1992)। প্রতিটি ছবিতেই তাঁর উপস্থিতি যেন এক অন্য মাত্রা যোগ করেছিল।
তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী ও গায়িকা। তাঁর মা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ছোটবেলা থেকেই মনিশা গান, নাচ আর খেলাধুলায় পারদর্শী ছিল। ৯ বছর বয়সে তাঁর ভরতনাট্যম অভিষেক হয়েছিল। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় ‘নখক্ষথাঙ্গাল’-এর জন্য তাঁকে নির্বাচিত করা হয়। প্রথমে আমি চেয়েছিলাম সে যেন পড়াশোনায় মন দেয়, কিন্তু অভিনয়ের প্রতি ধীরে ধীরে ওর ভালোবাসা বাড়তে থাকে।” তবুও মনিশা চেয়েছিলেন ক্যামেরার পিছনে কাজ করতে। তাঁর কথায়, “আমি কিছুদিন অভিনয় করব, কিছু অর্থ উপার্জন করব, তারপর ক্যামেরার পিছনে কাজ করব।”
Madhumati Death: স্বর্ণযুগের অবসান, না ফেরার দেশে ফিল্মি দুনিয়ার কিংবদন্তি
কিন্তু জীবনের অদ্ভুত নির্মমতায় সব থেমে যায় ৫ ডিসেম্বর, ১৯৯২-এ। কেরালার আলাপুঝা জেলার চেরথালার কাছে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মনিশা প্রাণ হারান। সে সময় তিনি চেপ্পাদিবিদ্যা ছবির শুটিং করছিলেন। দুর্ঘটনায় তাঁর মা গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান, কিন্তু প্রিয় কন্যাকে হারানোর শোক আর কখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
শ্রীদেবী উন্নি পরবর্তী সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা তখন সকালের ফ্লাইট ধরতে যাচ্ছিলাম। রাস্তা পরিষ্কার ছিল, কিন্তু কুয়াশা ঘনাচ্ছিল। হঠাৎ একটি বাস আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। মুহূর্তের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যায়…।” মনিশার মৃত্যুর পর কেরালার চলচ্চিত্র জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হয়। তাঁর বয়স তখন মাত্র ২১।
আজও অনেক সিনেমাপ্রেমী ভাবেন, যদি তিনি বেঁচে থাকতেন, মালয়ালম সিনেমায় তাঁর উচ্চতা কোথায় পৌঁছাত! প্রতিভা, সংবেদনশীলতা ও অনন্য প্রকাশভঙ্গি- সবই ছিল তাঁর মধ্যে। মনিশা উন্নি তাই রয়ে গেছেন এক অসমাপ্ত অধ্যায়, যার আলো আজও ম্লান হয়নি।