Bengali Actress Manosi Sengupta: বাংলা ধারাবাহিকের অত্যন্ত পরিচিত মুখ মানসী সেনগুপ্ত। নিম ফুলের মধু ধারাবাহিকে শেষ দেখা গিয়েছে তাঁকে। যদিও সেই ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পর অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই বেশ কিছুদিন কোন গোপনে মন ভেসেছে-তে কাজ করেছেন। এখন কোনও বাংলা মেগায় দেখা যাচ্ছে না মানসীকে। তবে খুব শীঘ্রই আবার বাংলা সিরিয়ালের দর্শকের ড্রইংরুমে হাজির হচ্ছেন মানসী সেনগুপ্ত। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সেই কথা নিজেই বলেছেন অভিনেত্রী। তবে কোন ধারাবাহিক বা কী রকম চরিত্রে তাঁকে দেখা যাবে সেটা অবশ্য এখনই খোলসা করেননি অভিনেত্রী। প্রোমো রিলিজের পরই নতুন কাজ নিয়ে কথা বলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নিউলি মাম্মি মানসী।
দুই মাসের সন্তান সামলে কাজে ফেরা কতখানি চ্যালেঞ্জের? মানসীর সাফ জবাব, 'মেয়ের সময়তো তিন থেকে চারমাসের মধ্যেই কাজে ফিরেছিলাম। মা-বোন ছিল। এখনওঁরা আছে। ন্যানি রাখব। আমার কাছে কাজ আর পরিবার দুটোই প্রায়োরিটি। কাজ না করলে তো পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য কিছুটা হলেও তো ঘাটতি হবে। তাই কাজকে আমি সবসময় ফার্স্ট প্রায়োরিটি দিই। তার মানে এটা নয় আমার সন্তানদের কোনও অযত্ন হবে। মা হওয়াটাও তো আমার চয়েজ। তাই কাজ আর পরিবার দুটো সামলানোই আমার দায়িত্ব। একইরকমভাবে আমি আমার অভিনেত্রী সত্ত্বাটাকেও বিসর্জন দিতে পারব না।'
এই মুহূর্তে ধারাবাহিকে দেখা না গেলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই সক্রিয়। দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পরও ফটোশুটে মাত দিয়েছেন। কখনও পরিবারের সঙ্গে তো কখনও দুই সন্তান বা সদ্যোজাতকে নিয়ে ছবি-রিল শেয়ার করেন। বৃষ্টিস্নাত একটি ভিডিও ইনস্টা হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন মানসী। একসঙ্গে দুই সন্তানের দায়িত্বপালন, ব্যক্তিগতজীবন-কর্মজীবন সামলে নিজের ইচ্ছেগুলো পূরণ করা সম্ভব? সংসারের দায়িত্ব বাড়লে এই ছোট ছোট ইচ্ছেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা যায়?
আমাদের সমাজের একটা ধারণা, মা হওয়ার পর সন্তানের জন্যই পুরো সময় ব্যয় হয়ে যায়। মায়েদের জন্য আর সময় কই! এই ধ্যানধারণাকে প্রাধান্য দিতে একেবারেই নারাজ 'সুপারমম' মানসী সেনগুপ্ত। তাঁর মতে, বিয়ে বা সন্তানের জন্মের সঙ্গে নিজের শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। মানসীর জীবন যে বিন্দুমাত্র বদলায়নি সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিনেত্রী। প্রথাগত নিয়মের বাইরে নিজের জীবন কী ভাবে উপভোগ করেন অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বললেন, 'জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলো উপভোগ করার সঙ্গে বিয়ে বা মা হওয়ার পরের লাইফস্টাইলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা এগুলো নিয়ে বড্ড বেশি আলোচনা করি। যেটা আমার একদম পছন্দ নয়। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে প্রতি মুহূর্তে সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার আছে। বৃষ্টিতে ভিজতে অনেকেরই ভাল লাগে। আর সেই ভাল লাগাটা বিয়ের পরে তো বদলে যেতে পারে না। কিন্তু, জীবনের পরিবর্তনের সঙ্গে ইচ্ছেগুলোকে দমিয়ে রাখা যুক্তিহীন। আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনও সেইরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। আমার পরিবারের তরফে কখনও এইরকম নেতিবাচক কথা শুনিনি। আমি শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে বাঁচতে ভালবাসি না।'
মানসীর দ্বিতীয় সন্তানের বয়স মাত্র দু'মাস। তাকে নিয়েই স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। সেখানে কোনও নিয়মের বেড়াজাল নেই। আগের মতোই সবটুকু রয়েছে। এমনকী ডায়েটও করছেন মানসী। আনন্দ করা, সকলের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া সবটাই করছেন। মানসীর মতে, 'দুই সন্তানের জন্মের পর কোনওভাবেই আমার জীবন বদলে যায়নি। এমনকী বিয়ের পরও নয়। আমি কিন্তু, বিয়ের পর বেশ কিছুদিন মায়ের কাছেও ছিলাম। সমাজের নিয়ম মেনে শ্বশুরবাড়িতই থাকতে হবে সেটা আমি অন্তত বিশ্বাস করি না। সোসাইটির চাপিয়ে দেওয়া কোনও নিয়ম আমি ফলো করতে রাজি নই। আমার মতে, ছেলে-মেয়ের জন্য কোনও আলাদা নিয়ম হতে পারে না।'
সেলেব মম মানসী আরও বলেন, 'বর্তমান প্রজন্মের মায়েরা কিন্তু, মিথ নিয়ে বাঁচে না। বৃষ্টিতে ভিজলে মায়ের যদি ঠান্ডা লাগে তারপর সেই মা স্তন্যপান করালে বাচ্চারও ঠান্ডা লাগবে এগুলো যৌক্তিকতার সঙ্গেই মেনে নেয় না। মানুষ যত শিক্ষিত হবে এই মিথগুলো বিলুপ্ত হবে।'
আরও পড়ুন 'ভেবেছিলাম ফ্লোর থেকেই...', দ্বিতীয় প্রেগন্যান্সি নিয়ে কী বললেন মানসী?