/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/23/cats-2025-08-23-16-27-41.jpg)
শেষ জীবনে করুণ পরিণতি
Nalini jaywant Painful Life: হিন্দি চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন নলিনী জয়ওয়ন্ত। দিলীপ কুমার, অশোক কুমার, দেব আনন্দের মতো তারকাদের সঙ্গে একের পর এক হিট ছবিতে পর্দা কাঁপিয়েছেন। দিলীপ কুমার পর্যন্ত বলেছিলেন— 'আমার সঙ্গে কাজ করা অভিনেত্রীদের মধ্যে নলিনী জয়ওয়ন্ত সবচেয়ে স্বতঃস্ফূর্ত এবং অসাধারণ।' অথচ সেই প্রতিভাবান অভিনেত্রীর কেরিয়ারের আলো ম্লান হতেই জীবনও ডুবে যায় নিঃসঙ্গ অন্ধকারে। ২০১০ সালে মৃত্যুর তিন দিন পর প্রতিবেশীরা তাঁর দেহ উদ্ধার করেন। বহু বছর তিনি সমাজ থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। আত্মীয়স্বজন বা চলচ্চিত্রজগতের কেউই কখনও তাঁর খোঁজ নেননি। নিঃশব্দে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। আর সেই আত্মীয় ছিলেন প্রবীণ অভিনেত্রী তনুজার মাসি।
নলিনীর জীবনের গোড়ার কথা
১৯২৬ সালে মুম্বই জন্ম নেন নলিনী। সমৃদ্ধ ও রক্ষণশীল পরিবারে বড় হলেও খুব অল্প বয়সেই চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পা রাখেন। ১৪ বছর বয়সে অভিনেত্রী নতুন-এর জন্মদিনে এক প্রযোজকের নজরে আসেন। এরপর তিনি ১৯৪১ সালে 'রাধিকা' ছবিতে অভিনয় করেন। মেহবুব খানের 'বহেন' ছবিতেও দেখা যায় তাঁকে। আশোক কুমারের সঙ্গে 'সমাধি' ও আরও একটি ছবিতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে যান। ১৯৫৯ সালে রাজ খোসলার 'কালা পানি' ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য ঝুলিতে আসে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।
ব্যক্তিগত জীবনের উত্থান-পতন
কিশোরী বয়সেই বিয়ে করেছিলেন পরিচালক বিরেন্দ্র দেসাইকে। বয়সে ছিলেন অনেকটা বড় এবং তাঁর সন্তানও ছিল। সেই জন্য নলিনীর সঙ্গে তাঁর পরিবার সব সম্পর্ক ত্যাগ করেছিল। বিয়ে ভাঙার পর ফের সিনেমায় ফেরেন। পরবর্তীতে অশোক কুমারের সঙ্গে নলিনীর সম্পর্ক নিয়ে চর্চা শুরু হয়। শোনা যায়, তাঁরা নেপালে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন।
আরও পড়ুন জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেতার মর্মান্তিক পরিণতি! মুম্বই ছেড়ে বেঙ্গালুরুর অটোচালক কালজয়ী ছবির নায়ক
অভিনয় থেকে অবসর
১৯৬৫ সালে 'বম্বে রেস কোর্স' ছবির পর অভিনয় থেকে অবসর নেন নলিনী। তবে প্রায় ১৮ বছর পর অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে 'নাস্তিক' ছবিতে তাঁর কামব্যাক মোটেই সুখকর ছিল না। Eastern Eye-এর সূত্র অনুযায়ী, এক সাক্ষাৎকারে নিজেই বলেছিলেন, 'এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। এরপর আর কখনও অভিনয়ের কথা ভাবিনি।' কারণ এই ছবিতে অমিতাভের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। যা পরবর্তীতে ভুল সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়েছিল নলিনীর।
শেষ জীবন ও মৃত্যু
সাংবাদিক ও আত্মীয় প্রণয় গুপ্তে তাঁর শেষ জীবনের বেদনাময় কাহিনি বর্ণনা করেছিলেন। একাকিত্ব, নিঃসন্তান জীবন আর মদ তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল। দ্বিতীয় স্বামী প্রভু দয়ালের মৃত্যুর পর তিনি সম্পূর্ণ একা হয়ে যান। চেম্বুরের ছোট্ট বাংলোয় পোষ্যদের সঙ্গেই দিন কাটাতেন। মৃত্যুর পর তারাও রাস্তায় চলে আসে। প্রতিবেশীরা জানান, জীবনের শেষ পর্যায়ে কারও সঙ্গে মিশতেন না।
দিলীপ কুমারের স্মৃতিচারণা
৯০তম জন্মদিনে দিলীপ কুমার যখন প্রিয়তম সহঅভিনেত্রীর নাম বলতে বলা হয়, তিনি এক মুহূর্ত দেরি না করে নলিনী জয়ওয়ন্তের নাম নেন। বলেন, 'ওঁর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় আমাকে সবসময় মুগ্ধ করত।' প্রসঙ্গত, নলিনী জয়ওয়ন্তের জীবনগাথা বলিউডের সেই করুণ কাহিনিগুলির একটি যেখানে রঙিন আলো নিভে গেলে রূপকথার নায়িকাদের জীবন ডুবে যায় নিঃসঙ্গ অন্ধকারে।
আরও পড়ুন ভোর চারটে পর্যন্ত নিয়মিত মদের নেশায় বুঁদ, হাসির অন্তরালে জীবনের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা ভাগ জনি লিভারের