/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/07/lead-3.jpeg)
ছবি সৌজন্য: রূপা ভট্টাচার্য
Rupa Bhattacharya Interview: অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য সদ্য ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন। বাংলা টেলি ও টলিজগতের আরও অনেকেই একইসঙ্গে বিজেপিতে গিয়েছেন। এই পদক্ষেপের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে বাংলা বিনোদন জগতে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ঠিক কী ভাবছেন রূপা? এবার কি বাংলা বিনোদন জগতে বড়সড় চিড় ধরতে চলেছে? আর্টিস্টস ফোরামেও কি সেই আঁচ এসে পড়বে? রইল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র সঙ্গে তাঁর একান্ত কথোপকথনের অংশবিশেষ--
সম্প্রতি তোমার কিছু সোশাল মিডিয়া পোস্ট পড়ে মনে হয় বিজেপিতে যোগদানের পরে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সেটা কি সত্যি?
হ্যাঁ, আমাদের ফ্রেটারনিটির লোকজনই করছে। যাঁরা এই আন্দোলনের মধ্যে কোথাও কোনও দিক থেকে ছিল না, তারা আমাদের জ্ঞান দিচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, আমরা সুবিধাবাদীর দলে, আমরা আগে তৃণমূলে ছিলাম... যার যা মনে হচ্ছে বলছে। এই যে ডুবন্ত জাহাজের মন্তব্যটা অপর্ণা সেন করেছেন, সেটা আমার গায়ে লাগেনি। আমার তো কোনওদিনই কোনও রাজনৈতিক অ্যাসোসিয়েশন ছিল না। আমি কোনও নেতা, মন্ত্রীর সঙ্গে কখনও গল্প করতে, কফি খেতেও যাইনি। কিন্তু আমাদের ফ্রেটারনিটি যে অ্যান্টাগনাইজ করছে তার পিছনে বেশ কিছু অঙ্ক রয়েছে। কোথাও একটা নিজেদের না পাওয়ার অঙ্ক থাকে।
আরও পড়ুন: মোদীকে চিঠি দিলেন অপর্ণা-অঞ্জন সহ বিদ্বজ্জনেরা
তোমার বিজেপিতে যাওয়ার কারণটা কী?
আমার নিজের পলিটিকাল অ্যাস্পিরেশন আছে। আমি অভিনয়ের পাশাপাশি পেশাদারি রাজনীতিটা করতে চাই। এটা আমার ব্যক্তিগত পছন্দের জায়গা। আর এই অ্যাস্পিরেশন থাকার কারণটা তোমাকে বলি। দূর খেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের জাজ করব আর তারা যেই দায়িত্বটা নেবে, তখন সুবিধেবাদীর মতো তাদের দিকে আঙুল তুলব, আমি সেটায় বিশ্বাসী নই। আমি মনে করি, ইয়ং জেনারেশনের সক্রিয় রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন। আমার যদি মনে হয় সিস্টেম পছন্দ হচ্ছে না তবে আর্মচেয়ার রেভলিউশন না করে সিস্টেমের মধ্যে আসা দরকার।
বিজেপির সহযোগী যারা, আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ইত্যাদি সংগঠনের যে মনোভাব রয়েছে অন্য ধর্ম ও গোষ্ঠীর মানুষের প্রতি, সেগুলিকে তুমি সমর্থন করো?
আমি সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি, ধর্মনিরপেক্ষতাকে সাপোর্ট করি। মোদীজির বেসিক বক্তব্য কিন্তু এটাই যে ভারতবর্ষে সবার সমান অধিকার ও সবার সমান দায়িত্ব। সেখানে সংখ্যালঘু বলে কেউ প্রিভিলেজড হবেন না। এটা যদি কোথাও ধর্ম অসহিষ্ণুতা হয়, তবে আমি এটার পক্ষে।
এই যে ধরো একদিকে গোহত্যা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে আবার পাশাপাশি গোরক্ষকরা তাণ্ডব করলে সেটাও বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এটাকে তুমি কী বলবে?
গরুর থেকে দুধ, দই সবকিছু আসে। আবার যারা পুরোপুরি ভেগান, তাঁরা দুগ্ধজাত কোনও খাবারও খান না। এটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত পছন্দের জায়গা। আবার পাশাপাশি দেখতে হবে যারা গোহত্যা বন্ধ করার চেষ্টা করছে, তারা কোন গোষ্ঠীর? সত্যি সত্যিই কি সরকারের থেকে কোনও সার্কুলার এসেছে?
কিন্তু তোমার কি মনে হয় না যে সমস্যার কারণ ও সমস্যার ফলাফল দুটো দিকই খোলা রাখছে সরকার?
তুমি বলছ দরজাটা একটা দিক বন্ধ, দুটো সমস্যাকে জিইয়ে রাখছে আর আমি বলছি দরজাটা একটা দিক খোলা। অর্থাৎ দুটো সমস্যারই সমাধান কিন্তু সরকারের হাতে রয়েছে। আমি নির্বাচনের আগে ওঁদের একটা কনফারেন্সে গিয়েছিলাম। আমিও আগে বাইরে থেকে জাজ করেছিলাম। কিন্তু ওই কনফারেন্সে সুরেশ প্রভু যখন মোদী সরকারের নিউ ইন্ডিয়া পলিসি আমাদের বোঝান, তখন আমি খুব ইন্সপায়ার্ড হই। যে পরিকল্পনাটা ওঁদের রয়েছে, তাতে সত্যি সত্যিই দেশ এগোবে। তবে সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে। আর মোদীজি যেমন পার্টি সুপ্রিমো, পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীও। এই দুটি ভূমিকাই তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পালন করেন।
আরও পড়ুন: টালিগঞ্জের নতুন গেরুয়া বাহিনী! বিজেপিতে একগুচ্ছ তারকারা
তোমার প্রাথমিক কাজটা তো হবে এখানকার টেলিভিশন ও সিনেমা জগতে। সেখানে যদি এত বিরোধিতা পাও, যেটা প্রথমেই জিজ্ঞাসা ছিল আমার, তবে কাজ করবে কী করে?
দেখতে হবে কারা বিরোধিতা করছে। বিরোধিতা তাঁরাই করছেন যাঁরা কোনওদিন পাশে ছিলেনই না। সুতরাং তাঁরা বরাবরই ঘরে বসে সোশাল মিডিয়ায় বিপ্লব করেছেন, প্রেস স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। তাঁরা বিরোধিতা সেখানে করবেন। মাঠে নেমে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা কিন্তু আমাদের পাশে রয়েছেন। তাঁরা কিন্তু সাঙ্ঘাতিক ভাবে অরাজনৈতিক এবং ইন্ডাস্ট্রির গ্রোথে বিশ্বাসী, অ্যাপোলিটিকাল। তাঁদের আমরা কথা বলে বোঝাতে পেরেছি যে আমাদের উদ্দেশ্য হল এই জগতে যে নেক্সাস তৈরি হয়েছে, তাকে কমব্যাট করা, আলাদা আলাদা পার্টির ঝান্ডা গেড়ে দেওয়া নয়। যাঁরা সোশাল মিডিয়াতে বা খবরের কাগজে মন্তব্য করেছেন তাঁরা কোনওদিনই আমাদের পাশে দাঁড়াননি। পেমেন্টের জন্য যখন আমরা অ্যাপোলটিকালি লড়ছিলাম, তাঁদের ওয়ালে পোস্ট করে বলেছিলাম, দাদা আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান, আমরা সাহস পাব। তাঁরা পাত্তাই দেননি। আজ তাঁরা ডিসাইড করে দেবেন, আমি কোন রাজনৈতিক পথে হাঁটব, ইন্ডাস্ট্রিতে সারভাইভালের জন্য কোন পথ ধরব বা ইন্ডাস্ট্রির নেক্সাস কীভাবে ভাঙব? ৩৫০ শিল্পী-কলাকুশলী যখন খেতে পাচ্ছিলেন না, তখন তাঁরা কেউ একটাও কথা বলেননি। তাঁরা আমাদের কী ডিসওন করবেন, আমরা তাঁদের ডিসওন করছি।
আর্টিস্ট ফোরামের মধ্যে তো এবার চিড় ধরবে তাহলে!
আমি এটা মানছি না। এই নিয়ে বুম্বাদাও একটা প্রেস স্টেটমেন্ট দিয়েছেন যে ব্যক্তিগতভাবে কে কোন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস করছেন বা দল করছেন, তাতে কিছু আসে যায় না। অভিনয় যাঁরা করছেন, তাঁরা কাজটা দক্ষতার সঙ্গে করুন। এবার আসি আর্টিস্ট ফোরামের কথায়। ফোরাম কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। এটা একটা অরাজনৈতিক সংগঠন। আমাদের কাজ হবে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুস্থ পরিবেশের পাশাপাশি ফোরামের সম্মান ও সক্রিয়তা বজায় রাখা। আমি আর্টিস্ট ফোরামের সদস্যই থাকব।