New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/03/rd-burman-2025-08-03-12-53-00.jpg)
ফিরে দেখা যাক সেইসব বন্ধুদের...
বন্ধুত্ব দিবস উপলক্ষে ফিরে দেখা যাক এমন কিছু চিরস্মরণীয় বলিউড জুটিকে। পরিচালক, সুরকার ও গায়কদের এমন বন্ধুত্বকে - যা যতদিন ভারতীয় সিনেমা থাকবে, ততদিন মনে রাখা হবে।
ফিরে দেখা যাক সেইসব বন্ধুদের...
শিল্পের ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে, সবচেয়ে কালজয়ী সৃষ্টি গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের মজবুত বন্ধনে। হিন্দি সিনে জগতে এ ধরনের সৃজনশীল বন্ধুত্বের বহু নজির রয়েছে, যেগুলো কেবল গান বা ছবি নয়, এক একটি যুগে মাইলস্টোন সৃষ্টি করেছিল। বন্ধুত্ব দিবস উপলক্ষে ফিরে দেখা যাক এমন কিছু চিরস্মরণীয় বলিউড জুটিকে। পরিচালক, সুরকার ও গায়কদের এমন বন্ধুত্বকে - যা যতদিন ভারতীয় সিনেমা থাকবে, ততদিন মনে রাখা হবে।
রাজ কাপুর ও শঙ্কর-জয়কিশন: হৃদয়ের জুটি
লক্ষ্মীকান্ত-প্যারেলালের আগে, রাজ কাপুর বার বার ফিরে গিয়েছেন আরেক কিংবদন্তি সুরকার জুটির কাছে। তাঁরা শঙ্কর-জয়কিশন। পৃথ্বী থিয়েটারে কাজ করার সূত্রে তাদের সঙ্গে রাজ কাপুরের পরিচয় হয়। ‘বরসাত’ তৈরির সময় রাজকে শঙ্করের নাম সুপারিশ করেছিলেন তাঁর বাবা পৃথ্বীরাজ কাপুর।
রাজ কাপুর, শঙ্করকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে জয়কিষনকে যাতে সমান মর্যাদায় নেওয়া হয় এমনটা জানান শঙ্কর। বরসাতের বিপুল সাফল্যের পর এই জুটি হয়ে ওঠে রাজের প্রিয়। আওয়ারা, শ্রী ৪২০, জংলি-সহ বহু ছবির সুর সৃষ্টি করে তাঁরা গড়ে তোলেন এক স্বর্ণযুগ। তবে ‘মেরা নাম জোকার’-এর সময় কিছু মতানৈক্য তৈরি হয়। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে রাজের দূরত্ব, শারদাকে গান গাওয়ানোর ইচ্ছা, এবং পরে গানগুলি বাদ পড়া- সব মিলিয়ে এই সৃজনশীল বন্ধুত্বে ফাটল ধরে।
Actor Death News: দীর্ঘদিনের লড়াই শেষ, না ফেরার দেশে ভারতীয় সিনেমার…
মণি রত্নম ও এ আর রহমান:
বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল রচয়িতা এ আর রহমানকে প্রথম চিনতে পারেন মণি রত্নম। ‘রোজা’ সিনেমার মাধ্যমে তাঁকে সুযোগ দেন এবং তাতেই রহমান জাতীয় পুরস্কার জেতেন। এরপর শুরু হয় এক ঐতিহাসিক সঙ্গীতযাত্রা। থিরুদা থিরুদা, ইরুভার, দিল সে, গুরু, রাবণ, কাদাল… একের পর এক সৃষ্টি ইতিহাস হয়ে ওঠে।
তবে ‘বোম্বে’ ছবির ‘হাম্মা হাম্মা’ গানটি নিয়ে রহমান এত দেরি করেছিলেন যে মণি রত্নম তাঁকে বরখাস্ত করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু রহমান তখন শোনান ‘বোম্বে থিম’। শুনেই চিত্রগ্রাহক রাজীব মেননের চোখে জল। মণি বলেন, "তোমাকে বাদ দিতে এসেছিলাম, তুমি আমাকে কাঁদিয়ে দিলে।" সেখান থেকেই আবার নতুন করে জেগে ওঠে তাদের সুরের জাদু।
আশা ভোঁসলের ফোনে বদলে যায় যতীন-ললিতের ভাগ্য
‘ডিডিএলজে’, ‘ফানা’, ‘মহব্বতে’— যতীন-ললিত যুগল বলিউডের একাধিক অসাধারণ ছবির সুরকার। তবে যশরাজ ফিল্মসের ব্যানারে তাদের যাত্রা শুরু হয় এক অপ্রত্যাশিত ফোন কল দিয়ে। যশ চোপড়া তাঁর ছেলে আদিত্যর প্রথম পরিচালিত ছবি ‘ডিডিএলজে’-র জন্য নতুন সুরকার খুঁজছিলেন। তখনই পামেলা চোপড়াকে ফোন করেন আশা ভোঁসলে, দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করেন যতীন-ললিতকে। বাকিটা ইতিহাস। এই ছবির গান আজও মানুষকে নাড়া দেয়।
Kartik Aaryan: কার্তিক আরিয়ানকে FWICE-র কড়া নির্দেশ, পাকিস্তানি সংস্থা…
শাম্মী কাপুরের ‘না’ থেকে ‘হ্যাঁ’: আর ডি বর্মণের সঙ্গে বন্ধুত্ব
“ও হাসিনা জুলফোঁওয়ালি” —এই গানে শাম্মী কাপুরের নাচ আজও সমান জনপ্রিয়। অথচ তিনি প্রথমে আর ডি বর্মণের সঙ্গে কাজ করতে রাজিই ছিলেন না। চাইছিলেন শঙ্কর-জয়কিশনকেই। তখনো পঞ্চম ততটা পরিচিত নন, কিন্তু নাসির হুসেন বোঝালেন, “একটা নতুন ছেলে আছে। শচীন দেব বর্মণের ছেলে।” অনেক অনিচ্ছার পর শাম্মী গান শোনেন, এবং তৎক্ষণাৎ মুগ্ধ হয়ে যান। ‘তিসরি মঞ্জিল’ হয়ে ওঠে পঞ্চমের কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। গানের প্রতিটি ট্র্যাক শ্রোতাদের মনে গেঁথে যায় চিরকালের মতো।
এইসব গল্প কেবল সাফল্যের নয়, বিশ্বাস, সহানুভূতি ও বন্ধুত্বের— যেখান থেকে উঠে এসেছে বলিউডের কিছু অনবদ্য সৃষ্টি। সেগুলি আজও অনুপ্রেরণা দেয়, প্রমাণ করে, বন্ধুত্বই কখনও কখনও শিল্পের জন্য লাভদায়ক হয়ে ওঠে।