/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/21/protima-2025-08-21-12-26-50.jpg)
প্রয়াত মাকে নিয়ে যা বললেন পুজা...
আইকনোক্লাস্টিক এবং মুক্তচেতা প্রতিমা বেদী ছিলেন এক অনন্যা নারী। একজন মডেল হিসেবে খ্যাতি পাওয়ার পর তিনি নৃত্যের জগতে প্রবেশ করেন এবং ভারতকে উপহার দেন বেঙ্গালুরুর নিকটবর্তী নৃত্যগ্রাম- এক অসামান্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। অভিনেতা কবীর বেদীর স্ত্রী এবং অভিনেত্রী পূজা বেদী ও সিদ্ধার্থের মা হিসেবে তিনি পরিবার ও কর্মজীবনের ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় সমান স্বতন্ত্র ছিলেন।
১৯৯৮ সালে কৈলাস মানস সরোবর যাত্রায় দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরও তাঁর অবদান ও উত্তরাধিকার আজও ভারতীয় নৃত্য ও সংস্কৃতির ভেতরে বেঁচে আছে।
মায়ের সবচেয়ে পুরনো স্মৃতি
পূজা বেদী বলেন "মায়ের সবচেয়ে পুরনো স্মৃতি বলতে, আমার মনে আছে জুহু সৈকতে আমাকে বালির উপর বসিয়ে এবিসি শেখানো। তিনি আমাদের সবসময় জড়িয়ে ধরতেন, আদর করতেন, এক প্রাণবন্ত মানুষ ছিলেন। প্রচুর হাসি, অফুরন্ত আনন্দ, এটাই ছিল তাঁর পরিচয়। সবচেয়ে অবাক লাগত, হোমওয়ার্ক করলে মা রেগে যেতেন। বলতেন, 'আমি তোমাকে স্কুলে পাঠাই পড়াশোনার জন্য, ওরা কীভাবে বাড়িতে পড়াশোনার কাজ দেয়? এটা আমার-তোমার সময় কাটানোর মুহূর্ত।’ তিনি আমাদের সময়কে সবচেয়ে বড় শিক্ষা মনে করতেন।"
Shah Rukh Khan: 'আমার এক হাত-ই যথেষ্ট', পুত্র আরিয়ানের বিশেষ দিনে কেন একথা বললেন শাহরুখ?
এক অপ্রচলিত নারী
"মা ছিলেন প্রচণ্ড বাঁধনছাড়া। প্রাণবন্ত, মজার, গভীর হাসি ছিল তাঁর আর দুর্দান্ত রসবোধে ভরপুর ছিলেন। তিনি শুধু নিজের স্বপ্নে বিশ্বাস করতেন না, আমাদেরও স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিলেন।
তিনি ছিলেন বহুমুখী এক নারী, চাইলে ঘরোয়া গৃহিণী, চাইলে মুক্ত পাখি, বিকিনি পরে সিগারেট খাওয়া আধুনিক নারী, আবার শাড়ি-গজরা পরা শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী, র্যাম্পে হাঁটা ফ্যাশন মডেল, কিংবা ১০ একর অনুর্বর জমিকে পরিণত করেছেন নৃত্যগ্রামে- ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নৃত্যবিদ্যালয়ে।”
Actress Pregnant: গর্ভপাতের যন্ত্রণা থেকে পুত্র সন্তানের জন্ম! ছেলের বয়স…
আফসোস ও অমলিন স্মৃতি
"৫০ বছর বয়সের আগেই মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। অসংখ্য আফসোস রয়ে গেছে, কত কিছু করা বাকি ছিল। তবুও মা নিজের মতো করেই জীবন যাপন করেছেন, নিজের শর্তে বেঁচেছেন। তিনি সবসময় বলতেন- প্রকৃতির মাঝে মরতে চান, মহাবিশ্বের সঙ্গে এক হয়ে যেতে চান। তাঁর দেহ আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। যেন প্রকৃতির সঙ্গেই মিলেমিশে গেছেন।”
মৃত্যুর পূর্বাভাস
"মা মৃত্যুর আগে আমার কাছে উইল লিখে গয়না, নথিপত্র সব কিছু দিয়ে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘তুমি নিজেও জানো না কখন কী হয়।’ আমাকে শেষবার লিখেছিলেন ১২ পাতার এক চিঠি। তাঁর শৈশব থেকে নৃত্যজীবন, সম্পর্ক, সন্তান সব কিছুর কথা উল্লেখ করে লিখেছিলেন, ‘আমি কুল্লুতে আছি- এটি দেবতাদের উপত্যকা। আমি শান্তিতে আছি, আমি খুশি।’ সেটিই ছিল তাঁর শেষ চিঠি। মা ছিলেন এক অবিশ্বাস্য শক্তি, এক অসাধারণ নারী।”