Bengali Television: প্রতিদিন সন্ধ্যায় টিভির পর্দায় প্রিয় ধারাবাহিকের সম্প্রচার দেখার সময়ে, খুব কম ক্ষেত্রেই দর্শক খেয়াল করেন টাইটেল কার্ডে ভেসে ওঠা নামগুলি। অনেক দর্শকই তাই লক্ষ্য করেন নি যে 'জয় বাবা লোকনাথ', 'আমি সিরাজের বেগম', 'খনার বচন' এবং 'মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য' ধারাবাহিকের প্রযোজক সংস্থার নাম পাল্টে গিয়েছে, এবং এই হস্তান্তর ঘটেছে গত মাসের শেষের দিকে।
প্রযোজক রানা সরকারের সংস্থা 'দাগ সি মিডিয়া'-র হাতেই ছিল এই চারটি ধারাবাহিকের প্রযোজনার দায়িত্ব। এর মধ্যে 'মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য' ও 'খনার বচন' সম্প্রচার হচ্ছে কালার্স বাংলা-তে। 'আমি সিরাজের বেগম' হলো স্টার জলসা-র ধারাবাহিক ও 'জয় বাবা লোকনাথ' সম্প্রচার হয় জি বাংলা-তে। এই চারটি ধারাবাহিকের ইউনিটের বেশ কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী-কলাকুশলী, এমনকী সাপ্লায়াররাও দীর্ঘদিন তাঁদের বকেয়া টাকা পান নি, এমন অভিযোগ রয়েছে। টেলিপাড়ার বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, চারটি ইউনিটেই এই সংক্রান্ত অসন্তোষ তুঙ্গে ওঠে গত মার্চ মাসে। তার পরেই স্টার জলসা, জি বাংলা ও কালার্স বাংলা-র হস্তক্ষেপে 'দাগ সি মিডিয়া'-র ওই চারটি ধারাবাহিকের প্রযোজনা হস্তান্তরিত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: মধুমিতার সঙ্গে এই প্রথম কাজ রিজওয়ানের
বাংলা টেলিজগতের তিনটি প্রধান প্রযোজনা সংস্থার কাছে চলে যায় এই চারটি ধারাবাহিক - ভেঙ্কটেশ ফিল্মস, সুরিন্দর ফিল্মস ও ম্যাজিক মোমেন্টস। গত মাসের শেষের দিক থেকেই 'আমি সিরাজের বেগম' ও 'জয় বাবা লোকনাথ'-এর প্রযোজনার দায়িত্ব নিয়েছে ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। 'মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য' ধারাবাহিকের দায়িত্ব নিয়েছে সুরিন্দর ফিল্মস এবং 'খনার বচন'-এর দায়িত্ব নিয়েছে ম্যাজিক মোমেন্টস।
এই ট্রেডের নিয়ম অনুযায়ী, হস্তান্তরের পরের পর্যায়ে, ধারাবাহিকের ইউনিটের সকলের বকেয়া টাকা মেটানোর দায়িত্ব নেবে পরবর্তী প্রযোজনা সংস্থা। তবে আগের পর্যায়ের যাবতীয় বাকি টাকার দায়িত্ব কিন্তু পূর্বতন সংস্থার উপরেই বর্তায়। এই সিস্টেমের বাইরে রয়েছেন শুধু স্টার জলসা-র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ শিল্পীরা। তাঁরা যেহেতু সরাসরি চ্য়ানেলের সঙ্গে চুক্তি সই করেছেন, তাঁরা যে প্রযোজনা সংস্থার তত্ত্বাবধানেই কাজ করুন না কেন, তাঁদের পেমেন্ট সরাসরি চ্য়ানেলই করে।
অন্যদিকে, যে শিল্পীরা প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সই করেছেন, তাঁদের, এবং যাঁরা দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন, তাঁদের পেমেন্ট প্রযোজনা সংস্থার হাত দিয়েই হয়। এই প্রসঙ্গে বলা দরকার, বাংলা টেলিজগতে খুব কম শিল্পীই চ্য়ানেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন, কিন্তু সব প্রযোজনা সংস্থার বিরুদ্ধে পেমেন্ট দীর্ঘদিন বকেয়া রাখার অভিযোগ নেই। যে কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম দাগ সি মিডিয়া।
আরও পড়ুন: প্রিয়াঙ্কার ‘জা’ হতে চলেছেন ‘গেম অফ থ্রোনস’ অভিনেত্রী
টেলিপাড়া সূত্রের খবর, গত মাসে যখন হঠাৎ এই বকেয়া সমস্যার মধ্যেই দাগ সি মিডিয়ার অফিসে তালা ঝুলতে দেখা যায় বেশ কয়েক দিন, তার পরে প্রায় রাতারাতি সিদ্ধান্ত হয় হস্তান্তরের। বলতে গেলে দু-তিনদিনের মধ্যেই নতুন প্রযোজনা সংস্থার হাতে দায়িত্ব চলে যায়। পাল্টে যায় ধারাবাহিকের এপিসোড সম্প্রচারের টাইটেল কার্ডের নামগুলিও।