বাংলা বাণিজ্যিক ছবির 'পোস্টার বয়' বলা হয় তাঁকে। সম্প্রতি দায়িত্ব পেয়েছেন কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের গুরুভার সামলানোর। টলিউডের রাজনৈতিক-সামাজিক সমীকরণে সমানুপাতিক দৃষ্টিভঙ্গি রেখে চলেন এই পরিচালক। তিনি রাজ চক্রবর্তী। তাঁর ছবি 'পরিণীতা' বক্স অফিসে আসছে ৬ সেপ্টেম্বর। রাজের অফিসে, কাজের ফাঁকে আড্ডা জমল ছবি থেকে বির্তক, সবকিছু নিয়েই।
রাজ চক্রবর্তী কনটেন্ট বেসড ছবি করছেন জেনে টলিপাড়ার একাংশ এখনও মেনে নিতে পারছেন না...
(কথা কেটে) কেন এখনও মানুষ চমকে যায় বুঝি না। আমি তো আগেও বিষয়ভিত্তিক ছবি করেছি, 'বোঝেনা সে বোঝেনা' কনটেন্ট বেসড সিনেমা। 'প্রেম আমার' অনেকরই পছন্দের ছবি, 'প্রলয়' করেছি। আসলে আমার মনে হয় যাঁরা এখনও আমার ছবি দেখেননি, তাঁদের এই ধারণা রয়েছে। কে রাজ চক্রবর্তী, তাঁর ছবি দেখব! এই ভাবনা না ভেবে হলে টিকিট কেটে ছবিটা যদি দেখেন তাহলে ভাল ছবি করার সাহস পাব।
শুভশ্রীকে মুখ্য চরিত্রে কাস্ট করাটাও অনেকে ভাল চোখে দেখেননি।
তেমনই পরিচালক হিসাবে আমার কিছু ভিশন ছিল। মনে হয়েছিল অন্য রকম কাস্টিং করা দরকার। দুটো কারণ ছিল, এক শুভশ্রী ভাল অভিনয় করে সেটা এই ছবিটার মধ্যে দিয়ে বের করে আনতে হবে। এটা আমাদের দুজনের জন্যই চ্যালেঞ্জ ছিল। দুই, ঋত্বিককে বাবাইদার বাইরে কাউকে ভাবতে পারিনি। কাস্টিংয়ে পুরো ফোকাস করেছিলাম। কে কোন জঁরে আছে সেটা ভাবিনি। আর আশা করি ট্রেলারেই বোঝাতে পেরেছি 'পরিণীতা' আলাদা।
আরও পড়ুন, সত্যজিৎ, মৃণাল থেকে সৃজিত, বাংলা ছবির ভক্ত মধুর ভান্ডারকর
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের কথা বললে কী বলবেন?
দেখুন মান-অভিমান থাকেই যেকোনও পরিবারে। কেন, কী হয়েছে সেই প্রশ্নে আমি যাচ্ছি না। তবে বুম্বাদাকে (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) এই ফেস্টিভ্যালে খুব প্রয়োজন। যে মানুষটি সবাইকে নিয়ে চলতে চায় এবং পারে, সে কখনও দূরে থাকতে পারে না। তাঁর মান ভাঙিয়ে নিয়ে আসার দায়িত্ব আমার। এটা সিনেমার উৎসব, আজ আমি আছি, কাল অন্য কেউ আসবে। আমাদের মধ্যেকার বিবাদ যাতে এই উৎসবকে ম্লান না করে তার জন্য সব চেষ্টা করব।
আরও পড়ুন, ভালোবাসাতে না পারলে কোনও চরিত্রই ক্লিক করবে না: সাহানা
অপর্ণা সেনের কথায় কষ্ট পেয়েছেন?
না না! কেন পাব? উনি অপর্ণা সেন। ওঁর প্রতিটা ছবি আমার দেখা। ওঁর লেখা, অভিনয় সবকিছু ভীষণ ভাল লাগে। ভালো দিকগুলো এতটা উৎসাহ দেয়, সেটা অন্যকিছুর থেকে অনেক বেশি। তাছাড়া উনি অভিমানও যদি করেন, সেটা ওঁর অধিকার আছে। আমি চেষ্টা করব খারাপ লাগার কারণগুলো যাতে উপশম করতে পারি।
আপনার নাকি রাগ কমে গিয়েছে?
বয়স বাড়ছে না?
আপনি এভাবে বললে মহিলা ফ্যানেরা দুঃখ পাবে তো!
(হেসে) বিশ্বাস করুন আমি রাগ করি অ্যাসিস্ট্যান্টদের উপর। এত বড় ক্যানভাস, অনেক কিছু সামলাতে হয়। সময়ও কম থাকে, তাই কাজের সময় আমি কিচ্ছু বুঝি না। ফলে কোপ পড়ে বেচারা আমার অ্যাসিন্ট্যান্টদের উপর।
আরও পড়ুন, আমি তো খুব ছোট, কী করব বলো আমি তো ছোটই: সম্পূর্ণা
পরিণীতা নিয়ে কতটা টেনশনে?
সত্যি কথা বলতে টেনশন নেই। যেহেতু এটা নিজের প্রোডাকশন, কোনও পার্টনার নেই আমাদের সঙ্গে সুতরাং সবটা দেখতে হবে। আগে তো ছবির পরিচালনা করতাম তারপর প্রমোশন, ব্যস। এখন তো ডিস্ট্রিবিউট ঠিক করে হচ্ছে কি না, পোস্টার শহরে পড়ল কি না, জিএসটি (হাসি) সবটা দেখতে হচ্ছে। তাড়াতাড়ি দর্শকদের কাছে 'পরিণীতা'-কে পাৌঁছে দিতে চাইছি।
আরও পড়ুন, শরতে নয় শীত আসছে পাভেলের ‘অসুর’
প্রযোজক রাজ চক্রবর্তী 'পরিণীতা'-র সঙ্গে কতটা পরিণত হল?
(এতটুকু না ভেবে) অনেকটা। কোথায় কতটুকু পা ফেলা উচিৎ এগুলো ভাবতাম না। এখন শিখছি। তবে আরও একটু সময় লাগবে। প্রযোজকটা ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি।