ধনুশ ও সোনম কাপুর অভিনীত ২০১৩ সালের প্রশংসিত ছবি রাঁঝনা সম্প্রতি আবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। তবে এবার একটি বড় বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ছবিটি। ক্লাইম্যাক্সকে (AI)-র মাধ্যমে এক্কেবারে পাল্টে ফেলা হয়েছে। ১ আগস্ট মুক্তি পাওয়া এই "নতুন সংস্করণ" দেখে ছবির পরিচালক আনন্দ এল. রাই আগেই রেগে গিয়েছিলেন এবং এবার অভিনেতা ধনুশ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ধনুশ রোববার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেন। “সিনেমার প্রতি ভালোবাসার জন্য” ক্যাপশন দিয়ে তিনি লেখেন, “AI দিয়ে পরিবর্তিত ‘রাঁঝনা’র ক্লাইম্যাক্স দেখে আমি হতবাক ও ক্ষুব্ধ। এই বিকল্প সমাপ্তি ছবিটির আত্মাটাই কেড়ে নিয়েছে। আমার স্পষ্ট আপত্তি সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি এই কাজ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এটি সেই ছবি নয়, যার প্রতিশ্রুতি আমি ১২ বছর আগে দিয়েছিলাম। সিনেমার বা বিষয়বস্তুর পরিকাঠামো বদলাতে AI ব্যবহারের প্রবণতা শিল্প ও শিল্পীদের জন্য গভীর উদ্বেগের। এটি গল্প বলার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সিনেমার ঐতিহ্যের প্রতি সরাসরি হুমকি।” ধানুশ ভবিষ্যতের জন্য কড়া নীতিমালার দাবি তোলেন, যাতে এই ধরনের হস্তক্ষেপ ঠেকানো যায়। পরিচালক আনন্দ এল. রাইও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, তিনি প্রথমে এই AI সংস্করণ সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানতে পারেন। তাঁর কথায়, "মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করছে কেন শেষটা পাল্টে গেল। আমি অবাক ও হতাশ। এটা সেই শেষ নয়, যেটা দর্শক ভালোবেসেছিলেন।"
পরে নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি দীর্ঘ নোটে তিনি লেখেন, “গত তিন সপ্তাহ আমার জন্য চরম হতাশার। ‘রাঁঝনা’ এমন এক ছবির নাম, যা আমরা আবেগ, ঝুঁকি ও ভালবাসা দিয়ে তৈরি করা। অথচ সেই ছবিকে আমার অজান্তে ও সম্মতি ছাড়াই বদলে, পুনরায় প্যাকেজ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এটা শুধু একটা পরিবর্তন নয়, এটা হলো আমাদের পরিশ্রম, নীতিবোধ ও উদ্দেশ্যকে অপমান করা।” তিনি আরও লেখেন, “এতে আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই, এমনকি মূল নির্মাতা দলেরও কেউ এতে যুক্ত নন। 'রাঁঝনা' কখনও কেবল একটি সিনেমা ছিল না, এটি ছিল মানুষের আবেগ ও ত্রুটির সংমিশ্রণে তৈরি একটি শিল্পকর্ম। যন্ত্রের মাধ্যমে সেই ছবিকে পাল্টে দেওয়া মোটেই উদ্ভাবন নয়, বরং তা একটি নির্মম হাইজ্যাক।”
Bharti Singh: বাড়িতে অদ্ভুত দৃষ্টি, ছেলের ওপর কার নজর পড়ল? তাঁর সাড়ে সর্বনাশ করলেন ভারতী
যদিও প্রযোজক সংস্থা ইরোস ইন্টারন্যাশনাল পুরো বিষয়টিকে "সৃজনশীল পুনর্কল্পনা" বলে ব্যাখ্যা করেছে, তবে দর্শকদের একাংশ এবং চলচ্চিত্র মহল এই সিদ্ধান্তকে এক প্রকার ‘সিনেমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেই মনে করছে। AI দিয়ে একটি সিনেমার আবেগ ও বার্তা বদলে দেওয়া কি সত্যিই সৃজনশীলতা, নাকি শুধুই প্রযুক্তিনির্ভর এক নির্মম হস্তক্ষেপ? এই প্রশ্ন এখন উঠছে চলচ্চিত্র জগতে।