Rituparna Sengupta Mother Passes Away : ১৪ নভেম্বর শিশুদিবসের দিন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেছিলেন, মাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসতে চান। মায়ের বকুনি খেয়ে ছোটবেলার দিনগুলোয় ফিরতে চান। কিন্তু, মেয়ের সেই ইচ্ছে পূরণ করতে পারলেন না মা। জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে হেরে গেলেন। শনিবার দুপুর ৩-টে নাগাদ হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের আপ্তসহায়ক এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, 'ভেন্টিলেশনে ছিলেন। শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছিল না। শনিবারই সব শেষ হয়ে গেল'।
শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডা. অনির্বাণ নিয়োগির তত্ত্বাবধানে ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের মা নন্দিতা সেনগুপ্ত। ৭৭ বছরেও মৃত্যুর সঙ্গে অদম্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। মনে জোড় ছিল ঋতুপর্ণারও। আশা ছিল মাকে ঠিক বাড়ি ফিরিয়ে আনতে পারবেন। ৭ নভেম্বর ছিল ঋতুপর্ণার জন্মদিন। মায়ের অসুস্থতার কারণে একেবারে জৌলুসহীন জন্মদিন কাটিয়েছেন বাংলার প্রথমসারির অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মাতৃহারা ঋতুপর্ণা।
প্রসঙ্গত, কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন ঋতুপর্ণার মা নন্দিতা সেনগুপ্ত। ডায়ালিসিস চলছিল, এছাড়াও আরও অনেক সমস্যা দানা বেঁধেছিল শরীরে। অসুস্থতা গুরুতর হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরিস্থিতি অনুকূল নয়, সেটা বুঝেই চিকিৎসক তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখেন। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না। দুঃসংবাদ পেয়ে সিঙ্গাপুর থেকে উড়ে আসছেন ঋতুপর্ণার স্বামী ও মেয়ে।
পড়াশোনার কারণে দেশের বাইরে রয়েছে ছেলে। তাই দিদাকে শেষ দেখা হল না। শনিবার মধ্যরাতের বিমানে কলকাতা এসে পৌঁছবেন। কাল অর্থাৎ রবিবার শেষ কৃত্য সম্পন্ন হবে। উল্লেখ্য, ঋতুপর্ণার মা নন্দিতাদেবীর অসুস্থতার সময়ও পাশে ছিলেন জামাই সঞ্জয়।
এছাড়াও সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন অভিনেত্রীর ভাই। মুম্বই থেকে ছুটে আসেন ঋতুপর্ণার মাসতুতো বোনও। জরুরি কাজে ঋতুপর্ণা দুদিন শহরের বাইরে থাকলেও, ফিরে এসে পুরো সময়টাই মায়ের পাশে থেকেছেন। মানসিকভাবে মাকে সাহস জোগানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন। কিন্তু, সবই বৃথা হয়ে গেল।
শিশুদিবসের দিন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইনে ঋতুপর্ণা শৈশবে মায়ের সঙ্গে কাটানো স্মৃতিমেদুর মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিয়েছিলেন। বলেতিলেন, 'মা ছিলেন আমার প্রিয় শিক্ষিকা। ছোটবেলায় প্রতিদিন মা আমাকে ভোর চারটের সময় ডেকে দিতেন। তারপর আমাকে পড়তে বসাতেন'।
আরও পড়ুন: 'আবার মায়ের বকুনি খেতে চাই', শিশুদিবসে শৈশবের স্মৃতিচারণায় ঋতুপর্ণা
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, 'মায়ের বাংলা লেখা ভীষণ ভাল। ওঁর থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আজও আমার মা কবিতা পাঠ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ অনেক কবির কবিতা পাঠ করেন। মানুষকে ভালোবাসা আমি মায়ের থেকে শিখেছি। মায়ের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। যাতে আবার আমি মায়ের বকুনি খেতে পারি'।