/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/13/qwee3-2025-10-13-16-52-27.jpg)
Sanjay Dutt Drug Battle: বলিউডের সফল অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম সঞ্জয় দত্ত। নামের সঙ্গে জুড়েছে 'খলনায়ক' তকমা। ১৯৮০-৮১ সালে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন সঞ্জয় দত্ত। সেই সময় অভিনেতা মা অর্থাৎ কিংবদন্তি অভিনেত্রী নার্গিস নিউ ইয়র্কে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। মায়ের অসুস্থতা এবং পরবর্তীতে তার মৃত্যু সঞ্জয়ের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। কষ্ট ঘুচাতে মাদকাশক্ত হয়ে পড়েন অভিনেতা। শেষ পর্যন্ত পুনর্বাসনের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ করে তুলেছেন খলনায়ক সঞ্জয় দত্ত। সম্প্রতি, তার ১৯৯৪ সালের সিনেমা আতিশ–এর সেট থেকে একটি পুরনো ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে অভিনেতা নিজের জীবন কী ভাবে বদলে গিয়েছিল সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করেছিলেন। একইসঙ্গে কঠিন সময়ে কী ভাবে পরিবারকে পাশে পেয়েছিলেন সেই কথাও বলেছেন সঞ্জয়।
ভিডিওটি ইউটিউব চ্যানেল WildFilmsIndia–তে শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে সঞ্জয়কে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'আমার মনে হয় আমি নিজের মৃত্যু দেখেছিলাম। নিজেকে সকলের থেকে আড়ালে রাখা, পালিয়ে বেড়ানো, তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা এই সব কিছু দেখে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমাকে পরিবারের সাহায্য নিতে হবে।'
মুন্না ভাই এমবিবিএস খ্যাত অভিনেতা শেয়ার করেন শরীরচর্চা কীভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার পথে বিরাট ভূমিকা পালন করেছিল। তাঁর কথায়, 'নিজের মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দাও। ব্যায়াম করো। ব্যায়ামের মতো ভাল অন্য কিছু নেই। শারীরিক কার্যকলাপ মানুষকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এটা এক ধরনের সুন্দর নেশা যা অন্য অনেক কিছুর চেয়ে ঢের ভাল। জীবনে সুস্থ থাকার চেয়ে বড় কোনও নেশা এই দুনিয়ায় নেই।'
কিংবদন্তি অভিনেত্রী তনুজা আতিশ–এ একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। শুটিং চলাকালে সঞ্জয়ের শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, 'পরিচালক আমাদের বলতেন ওকে স্পর্শ করো না। একটা দৃশ্যে ওকে চড় মারার কথা ছিল কিন্তু পরিচালক বললেন হাত শুধু সামনে নাড়াও ওকে ছোবে না। কারণ, যদি ছোঁও ও পড়ে যাবে।'
একই সাক্ষাৎকারে সহ-অভিনেত্রী পূজা ভাট সঞ্জয়ের রক্ষনশীল স্বভাবের কথা বলেন। মহেশ কন্যা জানান, 'আমি ছয় বছর বয়স থেকে ওকে চিনি। ও সবসময় বলত, তুমি এটা পরেছ কেন? ঘরে যাও, ঘুমাও। বড়দের কথা শোনা উচিত। আজও তেমনই আছে। আমি ভয় পাই ওঁর সঙ্গে যদি ডিস্কোতে দেখা হয় তখনও বলবে, তুমি এটা পরেছ কেন? এগুলো পান করছ কেন? এত রাতে বাইরে কেন? কিন্তু আমি ওকে খুব ভালোবাসি। কঠিন পুরুষালি চেহারার আড়ালে এক মিষ্টি, সংবেদনশীল মন আছে।'
সঞ্জয় চেয়েছিলেন তার মা নার্গিস যেন তাঁর প্রথম ছবি রকি দেখেন কিন্তু ছবি মুক্তির তিন দিন আগেই মারা যান। মাতৃবিয়োগের এই শোক মাদকাশক্তির দিকে আরও বেশি করে ঠেলে দেয়। বোন প্রিয়া দত্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন,ভাইয়াকে পুরোপুরি সুস্থ হতে তিন থেকে সাড়ে তিন বছর লেগেছিল। সে জার্মানিতেও কিছু রিহ্যাব সেন্টারে গিয়েছিল, এখানেও, কিন্তু তেমন লাভ হয়নি। পরে সে আমেরিকায় যায়, যেখানে সে নয় মাস ছিল। সেই নয় মাস আমাদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। বাবা পর্যন্ত থাকতে পারেননি। কাউন্সেলররা বলেছিলেন, এই ছেলেটি খুলে কথা বলে না। তারা একটা ট্রিগার খুঁজছিল, যাতে ওর মধ্যে কিছু বদল আসে। তখন তারা মায়ের একটি ভয়েস রেকর্ড বাজান, যা শুনে ভাইয়া ভেঙে পড়ে। সেই মুহূর্তটাই ওর জীবনে মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন সঞ্জয় দত্তকে ৭২ কোটির সম্পত্তি উপহার, মহিলা ভক্তের ভালবাসার যা প্রতিদান নিলেন 'খলনায়ক'....
আরও গভীরভাবে আসক্তির দিকে ঠেলে দেয়। বহুবার পুনর্বাসনে গিয়েও সঞ্জয়কে ফিরতে হয়েছে। তার বোন প্রিয়া দত্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'পুরোপুরি সুস্থ হতে ভাইয়ের তিন থেকে সাড়ে তিন বছর সময় লেগেছিল। জার্মানিতেও কিছু রিহ্যাব সেন্টারে গিয়েছিল। সেখানেও বিশেষ কিছু লাভ হয়নি। পরে সে আমেরিকায় যায়। সেখানে সে নয় মাস ছিল। সেই নয় মাস আমাদের সঙ্গে ওঁর কোনও যোগাযোগ ছিল না। বাবা পর্যন্ত থাকতে পারেননি। কাউন্সেলররা বলেছিলেন ও ভীষণ কম কথা বলে। ওরা একটা সুযোগ খুঁজছিল যাতে ওঁর মধ্যে কিছু বদল আসে। তখন ওঁরা মায়ের একটি ভয়েস রেকর্ড বাজান যা শুনে ভাইয়া ভেঙে পড়ে। সেই মুহূর্তটাই ওর জীবনে মোড় ঘুরিয়ে দেয়।' লাস্ট বাট নট ইন লিস্ট, ভারতে ফিরে এসে সঞ্জয় দত্ত চিরতরে মাদক থেকে দূরে সরে যান এবং নিজের জীবন ও কর্মজীবন পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন।
আরও পড়ুন বিচ্ছেদের বছর ঘুরতেই গলছে অভিমানের বরফ? প্রাক্তন স্বামীকে জন্মদিনের আদুরে শুভেচ্ছা এষার