Sayantani Guhathakurta comments on escort service: জিফাইভ অ্যাপের জন্য শুটিং চলছে 'হেডকোয়ার্টার্স লালবাজার'-এর। সুরিন্দর ফিল্মস প্রযোজিত এই ওয়েব সিরিজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। সেই চরিত্র প্রসঙ্গে কথোপকথনে ধরা পড়ল এসকর্ট সার্ভিস নিয়ে অভিনেত্রীর নিজস্ব মতামত।
সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা মডেল-অভিনেত্রী। মডেলিং তাঁর প্রথম প্রেম বলা যায়। বিশেষ করে প্রিন্ট মডেল হিসেবেই তাঁর জনপ্রিয়তা বেশি। কিন্তু বিগত তিন-চার বছর ধরেই সায়ন্তনী অনেক বেশি মন দিয়েছেন অভিনয়ের দিকে। পাশাপাশি অবশ্যই চলছে মডেলিংয়ের কাজ। কলকাতার মডেলিং সার্কেলে এমন অনেক মেয়েকে আসতে দেখা যায়, যাঁরা তাঁদের পারিবারিক আর্থিক দুর্দশার কারণে অনেক সময় জড়িয়ে পড়েন এসকর্ট সার্ভিসের পাকেচক্রে।
আরও পড়ুন: ‘দুপুর ঠাকুরপো’-র তৃতীয় সিজন, পর্দায় নতুন বৌদি
'হেডকোয়ার্টার্স লালবাজার'-এ সায়ন্তনী যে চরিত্রে অভিনয় করছেন, তার গল্পটাও অনেকটা এই রকম। ''আমার চরিত্রটি এক মফসসলের মেয়ের যে কলকাতায় আসে কাজের জন্য। আর সেই কাজটা তার প্রয়োজন ফ্যামিলিকে সাপোর্ট করার জন্য'', বলেন সায়ন্তনী, ''সে কাজের জন্য এত মরিয়া হয়ে যায় যে শেষমেশ এসকর্ট সার্ভিস নেটওয়ার্কে জড়িয়ে পড়ে। আমার কাছে কাজটা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল কারণ এই প্রথম অত্যন্ত সাহসী একটি দৃশ্যে অভিনয় করলাম। সেটা ডিটেলে এখন আমি বলতে পারব না কারণ তাহলে গল্পটা বলা হয়ে যাবে। সিনটা করার আগে খুবই অস্বস্তি ছিল। কিন্তু ইউনিট এত ভাল ছিল যে আমার একটুও অসুবিধা হয়নি।''
এই প্রসঙ্গেই উঠল কলকাতার এসকর্ট সার্ভিস নেটওয়ার্কের কথা। কলকাতা শহরে এই নেটওয়ার্ক বিগত দশ-পনেরো বছরে যেভাবে ডালপালা বিস্তার করেছে তা ভয়ঙ্কর। একদিকে রয়েছে বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য অতিরিক্ত টাকা রোজগারের নেশা আর অন্যদিকে রয়েছে প্রচণ্ড অর্থকষ্ট থেকে নিজেদের উদ্ধার করার প্রচেষ্টা।
মূলত দুধরনের ছেলেমেয়েরা এই ধরনের কাজে জড়িয়ে পড়েন। একদল মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণি, যাঁরা দামি ফোন, গাড়ি অথবা বিদেশভ্রমণের খরচ তুলতে এসকর্টের কাজ করেন। আর উল্টোদিকে রয়েছেন অন্যদল যাঁদের কোনও উপায় নেই। কারও পরিবারে হয়তো দুরারোগ্য ব্যাধি শুষে নিচ্ছে সব সম্বল অথবা একগলা ঋণে ডুবে রয়েছেন কেউ। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পরিস্থিতিতে তাই তাঁদের বাধ্য হয়েই আপোষ করতে হয়।
আরও পড়ুন: ‘মায়ের কথাতে অডিশনে যাই’! ‘গন্দি বাত’ তৃতীয় সিজনে বাংলার পল্লবী
সেই আপোষের পরিণাম যে কতটা সাঙ্ঘাতিক হতে পারে তার একটা ঝলক দেখা যাবে ওই ওয়েব সিরিজে। তাই বহু পুরনো সেই প্রশ্নটি আবারও রাখা গেল অভিনেত্রী সায়ন্তনীর কাছে-- জীবনধারণের জন্য অন্য কোনও পেশা কি খুঁজে নেওয়া যায় না? কেন এসকর্ট সার্ভিসেই নাম লেখাতে হবে কোনও দুঃস্থ মেয়েকে?
সায়ন্তনী জানান, ''আমি এমন অনেক মেয়েকে দেখেছি। লেট নাইট পার্টিতে অথবা ডিস্কে এদের অনেককেই দেখা যায়। আমি একটা কথাই বলব। আমি যার মুখে খাবার তুলে দিতে পারছি না, সে ঠিক কীভাবে টাকা রোজগার করছে, তা নিয়ে কথা বলার আমি কেউ নই। আমি সেই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতেই পারি না কারণ তার জীবনটা আমি বাঁচছি না। তাই আমি তাকে জাজ করতে পারি না কোনওভাবেই।''
না চাইলেও সায়ন্তনীর সঙ্গে একমত না হওয়ার কোনও উপায় নেই। তাঁর মতামত নিঃসন্দেহে যুক্তিযুক্ত। যে সমাজব্যবস্থা সব মানুষের জন্য তাদের ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তার ব্যবস্থা করতে পারে না, সেই সমাজে আসলে নৈতিকতার কোনও নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয় না। স্থান-কাল-পাত্র-পরিস্থিতিতে সেই সংজ্ঞা পাল্টাতে থাকে এবং থাকবে। আর ক্রমশই তলিয়ে যেতে থাকবে, হারিয়ে যেতে থাকবে 'মানুষ'।