Sharmila Tagore: শর্মিলা ঠাকুর, চলচ্চিত্র জগতের এমন এক দৃষ্টান্ত যাঁর সৌন্দর্য এবং অভিনয় বারবার মুগ্ধ করে দর্শককে। চুলে পাক ধরলেও 'পুরাতন' শর্মিলা আজও সিনেপ্রেমীদের মনে চির নতুন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে অভিনয়ে অভিষেক। দু’বার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শর্মিলাকে প্রথম সুযোগ দিয়েছিলেন প্রবাদপ্রতীম পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তাঁর প্রথম বাংলা ছবি 'অপুর সংসার। এরপর হয়ে উঠেছিলেন সত্যজিতের 'দেবী'। ২০১৩ সালে ভারত সরকারের তরফে সম্মানিত হয়েছিলেন শর্মিলা ঠাকুর। কিশোরী বয়স থেক যেহেতু অভিনয় জার্নি শুরু তাই টাকার মূল্যটাও অনেক ছোট থেকেই বুঝেছিলেন। একটি সাক্ষাৎকারে প্রথম পারিশ্রমিক নিয়ে কথা বলেছিলেন শর্মিলা। তিনি তাঁর প্রথম পারিশ্রমিকের সেই টাকা কোথায় খরচ করেছিলেন জানেন?
উত্তরপ্রদেশের কানপুরে জন্মগ্রহণকারী শর্মিলা ঠাকুর শুটিং ফ্লোরে পা রাখার মাত্র আট বছর পর বিয়ে করেন। ১৯৬৮ সালে, তিনি পতৌদির নবাব এবং ক্রিকেটার মনসুর আলী খান পতৌদির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শর্মিলা ঠাকুর অনুপম গুপ্তার ইউটিউব শো 'পয়সা ভাইসা'-তে বলেছিলেন যে তিনি প্রথম ছবির জন্য পারিশ্রমিক বাবাদ পেয়েছিলেন ৫০০০ হাজার টাকা, যা দিয়ে তিনি নিজের পছন্দ মতো গয়না কিনেছিলেন। লেজেন্ডারি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর বলেন, 'আমি খুব অল্প বয়সে কাজ শুরু করি। তখনকার ফি এখনকার মতো এত বেশি ছিল না। কিন্তু, জিনিসের দামও সেই সময় খুব বেশি ছিল না। আমার বাবা অর্থের প্রতি আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু, সত্যজিৎ রায় জোর করে দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে একটি শাড়ি, একটি ঘড়ি এবং ৫০০০ টাকা দিয়েছেন।'
প্রথম উপার্জনের খরচের বিবরণ দিতে গিয়ে শর্মিলা ঠাকুর বলেছিলেন, 'বাঙালি পরিবার হওয়ায় আমরা টাকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সোনা-রুপোর দোকানে যাই। আমি সোনার চুড়ি, একটি নেকলেস এবং কানের দুল কিনলাম।' কেরিয়ারের গোড়ার দিকে বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য তিনি পারিশ্রমিক হিসাবে প্রায় ১০,০০০-১৫,০০০টাকা পেতেন। প্রথম হিন্দি ছবির জন্য পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ২৫,০০০ টাকা। ১৯৬৪ সালে শর্মিলা অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি 'কাশ্মীর কী কলি', যেটি পরিচালনা করেছিলেন শক্তি সামন্ত।
আরও পড়ুন: ব্যাকগ্রাউন্ডে রামনাম- মদ গোমাংসতে রামনবমী উদযাপন! হৃত্বিকের অনুষ্ঠানে পাক-যোগ ঘিরে বিতর্ক
শর্মিলা ঠাকুর বলেছিলেন যে তিনি শক্তি আনন্দের দুটি চলচ্চিত্র পিছু ২৫,০০০টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু, পরিচালক তখন তাঁকে দ্বিতীয় সিনেমার জন্য পারিশ্রমিকের পরিবর্তে একটি জমি কেনার প্রস্তাব দেন। অভিনেত্রীর কথায়, 'তিনি আমাকে বলেছিলেন যে আপনাকে টাকা দেওয়ার পরিবর্তে আমি ভিলে পার্লে কিছু জমি দেব না। আমি বললাম এই তুমি কি পাগল? আমি কি এই জলাভূমিতে এসে বাস করব?'
আরও পড়ুন: 'বাংলার বাঘিনী', ১৪ বছর পর বাংলা সিনেমা 'পুরাতন'-এ শর্মিলার প্রত্যাবর্তন, আপ্লুত করিনা
'ওয়াক্ত' এবং 'অনুপমা'র মতো সুপারহিট ছবির নায়িকা শর্মিলা ঠাকুর আরও জানান, সেই সময় তিনি মুম্বইয়ে একটি অ্যাপার্টমেন্টও কেনেননি। তিনি কয়েক বছর তাজমহল হোটেলেই ছিলেন। কারণ, সেখানে তাঁকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে চিন্তা করতে হত না। অভিনেত্রীর কথায়, 'কয়েক বছর পর যখন মুম্বই আমার বাড়ি হয়ে যায়, আমি আমার প্রথম অ্যাপার্টমেন্টটি তিন লাখ টাকায় কিনেছিলাম। এর জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে অনেক সংগ্রামও করতে হয়েছে। টাকার ব্যবস্থা করা খুবই কঠিন কাজ ছিল। কারণ, তখন আমরা প্রচুর ট্যাক্স দিতাম। তাই টাকা বাঁচানোর সুযোগ ছিল না।'