অভিনয় শুরু কালারস বাংলা-র 'কাজললতা' ধারাবাহিক দিয়ে, শেষ হতে না হতেই প্রায় স্টার জলসা-র ধারাবাহিক 'বাজলো তোমার আলোর বেণু'-তে নতুন চরিত্রে আসেন সৃজনী। মাত্র দুবছরেই বেশ গতিময় তাঁর অভিনয় কেরিয়ার। পড়াশোনা করতে ভালোবাসতেন, গান ও পেইন্টিংও। একটা সময় ভেবেছিলেন আইএএস অথবা আইপিএস পরীক্ষায় বসবেন কিন্তু হঠাৎই এসে গেল অভিনয়ের সুযোগ আর বদলে গেল কেরিয়ার গোল। সৃজনী জানালেন, শাহরুখ খানের সঙ্গে শুধু দেখা হওয়া নয়, তাঁর সঙ্গে বসে ইন্টারভিউ দেওয়াই তাঁর স্বপ্ন এবং অ্যাম্বিশন।
''কুছ কুছ হোতা হ্যায়' আর 'কভি খুশি কভি গম' যে আমি কতবার দেখেছি তার ঠিক নেই। শাহরুখকে বড্ড ভালো লাগে আমার। আসলে আমি খুব রোমান্টিক তো, সেই জন্যেই বোধহয়'', হাসতে হাসতে বলেন সৃজনী, ''আর আমি শাহরুখের সঙ্গে দেখা করতে চাই কিন্তু এমনি কোথাও শাহরুখ এসেছে, ফ্যানেরা দেখা করতে গিয়েছে, এরকম নয়। আমি হয় শাহরুখের সঙ্গে কফি খেতে যাব নয়তো কোনও একটা ইন্টারভিউ দেব শাহরুখের পাশে বসে।''
ইংলিশ অনার্সের ছাত্রী স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছিলেন, তখনই অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল চিলেকোঠা ছবিতে। তার কিছুদিন পরেই ডাক পড়ে কাজললতা ধারাবাহিকের জন্য। পর্দার অভিনয়ের হাতেখড়ি ওই ধারাবাহিকেই বলা যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় থেকেই থিয়েটার করতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: গৌরব গাইলেন ‘গালি বয়’ র্যাপ, সঙ্গতে টেলিজগতের বন্ধুরা
''আমার প্রথম প্রথম কোপ আপ করতে খুব অসুবিধা হচ্ছিল। এক তো তখন ডেনাইট শুট হতো। তার উপর টেকনিকাল ব্যাপারগুলো প্রথমে বুঝতে পারতাম না। আমার নিজের উপরেই রাগ হতো যে এত বার বোঝাচ্ছে কেন পারছি না, আমি কি তাহলে কিছুই পারি না'', বলে চলেন সৃজনী, ''তার পর একটু একটু করে ঠিক হল। অনামিকাদি (অনামিকা সাহা) আমাকে খুব সাহায্য করেছেন। এত ভালো মনের মানুষ। তার পরে 'বাজলো তোমার আলোর বেণু'-তে এসে আরও অনেক বেশি শেখার সুযোগ হল। কারণ চরিত্রটায় এত রকমের শেডস ছিল। আর সুদীপাদি-অগ্নিদেবদা আমাকে প্রচুর গাইড করেছেন, আমাকে প্রচুর স্পেসও দেওয়া হতো।''
ছোটবেলা থেকেই গান শিখেছেন, ছবি আঁকতে ভালোবাসেন অবসরে। নাচও শিখেছেন মায়ের কাছে। কিন্তু পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ও আগ্রহী ছিলেন বলে ঠিক করেছিলেন আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন, নয়তো এমবিএ করে কর্পোরেট কেরিয়ারের দিকে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিনয়ের টানে সিদ্ধান্ত বদলেছেন। তবে উচ্চশিক্ষার ইচ্ছেটা এখনও রয়েছে। স্নাতকোত্তর পড়াশোনা আবার শুরু করতে চান, যা অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছিল কাজের চাপে। তবে এই সাময়িক বিরতির মধ্যেই চলছে আবার নতুন কাজের কথা।
আরও পড়ুন: হিরণদা আমাকে নিয়ে নার্ভাস ছিল প্রথমে: শর্মিষ্ঠা
''দুএকটা ছবিতে অভিনয়ের কথা চলছে, দেখা যাক কী হয়। আমি চাইব এর পরের চরিত্র যেগুলো আসবে, সেগুলো যাতে একটু আলাদা হয়। আমি নিজেকে সব জায়গায় ফেলে দেখতে চাই'', বলেন সৃজনী। এমনিতে মিশুকে মিষ্টি স্বভাবের মানুষ হলেও খুব বেশি বন্ধু নেই, এমনটাই জানালেন তিনি। ''আমার কলেজ লাইফটা খুব বোরিং কেটেছে। বরং স্কুল লাইফটা বেশি ভালো ছিল। আমি কলেজে থাকতে মা-কে ফোন করে বলতাম, এবার ক্লাস শেষ হয়ে যাবে, চলো কোথাও যাই'', বলেন অভিনেত্রী, ''আমি আসলে বাড়িতে থাকতে খুব ভালোবাসি। আমার একটা গোল্ডেন রিট্রিভার আছে, তাকেও টাইম দিতে হয়।''
স্কুলে দ্বিতীয় ভাষা ছিল হিন্দি। তাই তিনটি ভাষাতেই স্বচ্ছন্দ অভিনেত্রী চান অদূর ভবিষ্যতে বাংলার বাইরেও কাজ করতে। তবে আপাতত বাংলার বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই। অভিনেত্রী জানালেন তিনি এমনিতেই হোমসিক, তাই এখন বাংলা ছেড়ে যাওয়ার কথা তিনি ভাবছেন না। তবে শাহরুখের টানে মুম্বই তাঁকে যেতেই হবে কোনও একদিন!