Kolkata Car Accident: সিরিয়ালের টিআরপি ঊর্ধমুখী হতেই কলাকুশলীদের রাতভোর উদ্দাম পার্টি। দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে পার্টির পর ওই মেগার নায়ক আরিয়ান ভৌমিকের বাড়িতে বসেছিল পার্টির পরবর্তী আসর। ভোর রাত পর্যন্ত পার্টি করার পর প্রায় বেহুঁশ প্রত্যেকেই। টলমল পায়ে অভিনেতা আরিয়ানের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান 'ভিডিয়ো বউমা'-র পরিচালক ভিক্টো, সান বাংলার কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া ও ঋ। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে এক নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন সিদ্ধান্ত দাস। প্রশাসনিক সূত্রে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা জেনেছে, সোমবার দুপুরে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় পরিচালককে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখা হবে 'ভিডিয়ো বৌমা'-র পরিচালক সিদ্ধান্ত দাসকে। তারপর ফের আদালতে পেশ করা হবে পরিচালককে। ঘটনার সময় গাড়িতে ছিলেন সান বাংলার কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া। প্রসাশন সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। স্টুডিওপাড়ার এই নিন্দনীয় ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সুর চড়িয়েছেন টলিপাড়ার একাংশ। এবার সেই তালিকায় নাম জুড়ল স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের।
অন্যায়ের সঙ্গে কোনওদিনই আপোস করেন না স্বস্তিকা। নিজের ইন্ডাস্ট্রি হোক বা আরজি করের মতো ইস্যুতে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন। এবার বাংলা মেগার পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টোর ড্রাঙ্ক অ্যান্ড ড্রাইভ এবং নিরীহ মানুষকে গাড়িতে পিষে ফেলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনও অপরাধ থেকে কেউ মুক্তি না পায় সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। গাড়িতে থাকা মহিলাকে কেন ছেড়ে দেওয়া হল সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ফেসবুকের ওয়ালে লম্বা-চওড়া পোস্টে স্বস্তিকা লিখেছেন, 'এতদিন জানতাম ড্রাঙ্ক ড্রাইভিং একটা অতিব সিরিয়াস ক্রাইম। ধরা পড়লে পুলিশ কোনও কথা শোনে না। কোনও রকম ক্ষমতা, পরিচিতি - আমি কে জানো, আমি কার ছেলে জানো এই মার্কা এটিটিউড কাজ করে না। সোজা হাজতবাস। কলকাতায় নাকি পুলিশ এই নিয়ে খুবই কড়াকড়ি করে। তাই জানি এবং তাই দেখেছি। কড়া নাকাবন্দি, চেকিং, গাড়ি তে মহিলা থাকলেও কোনও আপোষ নয়। তাহলে এত মারাত্মক একটা ঘটনাতে সবাই কি করে বেল পেয়ে গেল ? যে মহিলা বাজার থেকে পালাল তাকে নাকি ধরা-ই হয়নি। সে কে? তাকে ছেড়ে দেওয়া হল কেন?'
আরও সুর চড়িয়ে লিখেছেন, 'একটা নো এন্ট্রি রাস্তায় ঢুকে একজন কে মেরে ফেললো, বাকি এতজন হাসপাতালে। এত রকম খবর ঘুরছে যে সঠিক কজন বোঝা দায়। কিন্তু একজন এর মৃত্যু টা কি ইয়ার্কি? এমনই নৈরাজ্য তার মধ্যে মদ খেয়ে এই ভাবে এলোপাথারি গাড়ি চালিয়ে লোক কে মেরে ফেললেও যদি কোনও শাস্তি না হয় এবং রাতারাতি বেল পেয়ে তারা যে যার বাড়ি চলে গিয়ে শান্তি তে ঘুমিয়ে পড়ে তাহলে আর আইন বা ট্রাফিক আইনের কোনও দরকার নেই। যে যা ইচ্ছে তাই করবে, গাড়ি চাপা দেবে, খুন করবে, রেপ করবে তারপর কিছুই হবেনা।'
প্রত্যেকের জন্য সমান নিয়মের দাবি জানিয়ে স্বস্তিকার সংযোজন, 'যার বাড়ির লোক সকাল বেলা বাজার করতে এসে প্রাণ হারাল আর যাঁরা হাসপাতালে জীবন নিয়ে লড়ছে তাদের দায় কার? তাদের জবাবদিহি কে করবে ? তাদের কি হবে? সহ্য করার একটা সীমা থাকে। সব গিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছি আমরা। এদের বাঁচানোর ও লোক আছে ? শাস্তি না পেলে এর শেষ কোথায়? গাড়ি যে চালাচ্ছিল এবং গাড়ি তে যে দুজন মহিলা ছিল তারা সমান দোষী। এদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পাড়ার মধ্যে একদিন হেলমেট ছাড়া স্কুটিতে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলাম, পুলিশ আটকে দিয়েছিল। হাজার একটা কৈফিয়ত চাইল।মানুষ মেরে ফেলেছে যারা তাদের ব্যাপারে চুপ থাকলে তো হবেনা। লোক বুঝে নিয়ম পালটালে হবেনা। চ্যাংড়ামো হচ্ছে নাকি? সবার জন্য নিয়ম একটাই। কঠোর শাস্তি।'
আরও পড়ুন: 'ওই ঘটনার পর আমার...', ঠাকুরপুকুর গাড়ি দুর্ঘটনার জেরে এ কী হাল অভিনেত্রী ঋ-র!