Tathagata Mukherjee On Pahalgam Terror Attack: ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গীদের এলোপাথারি গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে ২৮ জন পর্যটক। আহত অনেকেই। ভূস্বর্গের এই ভয়ংকর ঘটনায় দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ভয়ের আবহ। একইসঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে দেশবাসী। সোশ্যাল মিডিয়ায় পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি প্রত্যেকেই নিজেদের মত প্রকাশ করছেন। ইসলাম সম্প্রদায়ভুক্ত অনেকেই আবার মুসলিম হওয়ায় লজ্জিত হয়েছেন। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার জেরে ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছে পাক অভিনেতা ফাওয়াদ খানের সিনেমা। অতীতেও এমন ঘটনার বহু নজির রয়েছে। বারংবার পাক অভিনেতাদের ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঘটনায় দায় শুধুই শিল্পীদের? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে এই প্রশ্ন রাখা হয়েছেন সিনিয়র অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়ের কাছে।
তিনি বলেন, 'আমরা যেটুকু খবর পাচ্ছি সেখানেই তো বিষয়টা থেমে নেই। অন্দরের রাজনীতিটা আরও অনেক গভীর। বিভিন্ন বিষয় উঠে আসছে। শুধু যে শিল্পীরাই এই ঘটনার বলি হচ্ছেন তা কিন্তু নয়। জলের অধিকার আটকে দেওয়া হচ্ছে। খেলোয়ারাও তো সমস্যায় পড়ছেন। যাঁরা পড়াশোনা করতে ওখানে গিয়েছেন বা ওখান থেকে এখানে এসেছেন তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষই কোনও না কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। মানব সভ্যতার সময় মানুষ যখন ঘর বাঁধতে শিখল একটা সময় পর যখন গোষ্ঠী তৈরি হল তখন থেকে মানুষের মধ্যে আমিত্বটাও বেড়ে গেল। গ্রাম-শহর আলাদা হতে শুরু করল। এটা আমার বাড়ি ওটা তোমার বাড়ি এই বিষয়গুলো তৈরি হল। একটা সময় রাজ্য থেকে তৈরি হল দেশ। আর কোনও দেশের নিরীহ মানুষের উপর যদি অন্যায়ভাবে হামলা চালানো হয় তাহলে তো খুব স্বাভাবিকভাবেই মানুষ রেগে যাবে। প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান যদি সেই ঘটনার জন্য দায়ী হয় তাহলে তো সেই রাগ চরমে পৌঁছবেই। সেক্ষেত্রে শিল্পীদের বয়কট করাটা কিন্তু, কোনও সমাধান নয়। একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে দোষের ভাগীদার করার তো কোনও মানে হয় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিরাপরাধ কোনও ব্যক্তির কাজ ব্যান করাকে সমর্থন করি না।'
আরও পড়ুন:বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেছি, যে টোকেন মানি পেতাম সেটা ওয়াকার্সদের মধ্যে বিলিয়ে দিতাম: রাখি গুলজার
আরও যোগ করেন, 'যেহেতু এই পুরো বিষয়টার সঙ্গে জাতীয় পলিটিক্স জড়িয়ে আছে তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করার মতো যোগ্য নিজেকে আমি মনে করছি না। তবে বারবার এভাবে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে থাকলে তো মানুষ একটা পাকাপাকি সমাধান খুঁজবেই। প্রতিবাদ হোক সেটাও চাইবে। পহেলগাঁওয়ের এই ঘটনার পর ভারতে পাক শিল্পীদের ছবি নিষিদ্ধ করাটা সরকারের পক্ষ থেকে একটা প্রতিবাদ। এই ঘটনার জেরে যে সমস্ত শিল্পী, খেলোয়াররা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা যদি নরওয়ে সুইডেনে জন্মাতেন তাহলে এই ঘটনার মোকাবিলা করতে হত না। যে দেশে জন্ম, মাটি জল বায়ু গ্রহণ করা হচ্ছে সেই দেশের দায় তো নিতেই হবে। ভারতের পাসপোর্ট নিয়ে আমেরিকা যেতে অনেক সমস্যা হয়। তখন ভারতীয় হওয়াটাও যেন একটা দায় হয়ে দাঁড়ায়। যে কোনও দেশেরই নাগরিক হওয়ার কিছু সুফল ও কুফল আছে। ভারতের সঙ্গে যদি কোনও দেশের যুদ্ধ লাগে তাহলে তো একজন ভারতবাসী হিসেবে সেই দায় আমাকেও নিতে হবে। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি। যখন কোনও দেশে যুদ্ধ হয় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় সাধারণ মানুষ। এর আগেও অনেক গায়কের গান ব্যান করে দেওয়া হয়েছে। সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। শিল্পীরা তো সেই রাজনীতির অংশ নয়।'
আরও পড়ুন: শো বাতিল করা-ছবি মুক্তির দিন পিছনোর নেপথ্যে পুরোপুরি অর্থনীতি জড়িত: কৌশিক সেন