Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

'সেরা জুটি' শ্যামা-নিখিল তৈরি হল কীভাবে, রইল নেপথ্যকাহিনি

Krishnakoli pair Shyama-Nikhil:এবছর টেলি অ্যাকাডেমি পুরস্কারে সেরা জুটি শ্যামা-নিখিল। সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কারও পেয়েছেন প্রযোজক সুশান্ত দাস। জুটির সাফল্য ও তার পিছনের গল্প শোনালেন প্রযোজক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tele Academy Award 2019 best Bengali serial pair Krishnakoli

শ্যামা-নিখিল। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

Tele Academy Award winner Krishnakoli pair backstory: তিয়াসা রায় ও নীল ভট্টাচার্য-- 'কৃষ্ণকলি' ধারাবাহিকের শ্যামা ও নিখিল বাংলা টেলিভিশনের সেই সব জুটিগুলির অন্যতম, যারা পর্দার রসায়নে পাকাপাকি ভাবে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে দর্শকের মনে। ধারাবাহিকের পথচলা এক বছরের একটু বেশি। আর এই এক বছরের মধ্যে প্রায় ৯ মাস 'কৃষ্ণকলি' থেকেছে টিআরপি সেরা। তাই টেলি অ্যাকাডেমি পুরস্কার ২০১৯-এর সেরা জুটির স্বীকৃতি শ্যামা-নিখিলই যে পেতে চলেছে, সেই বিষয়ে মোটামুটি নিশ্তিত ছিলেন টেলিজগতের সকলে।

Advertisment

প্রত্যেকটা সফল জুটির পিছনেই একটা গল্প থাকে-- তৈরি হয়ে ওঠার গল্প। 'কৃষ্ণকলি'-র প্রযোজক এবং চিত্রনাট্যকার সুশান্ত দাসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এল সেই নেপথ্যকাহিনি। এই বছর সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছেন তিনি 'কৃষ্ণকলি' ধারাবাহিকের জন্য। দর্শক জানেন যে এই ধারাবাহিকের সারকথা হল-- নায়িকার রূপ নয়, গুণের উদযাপন। এখনও এদেশের মানুষের অধিকাংশই রূপ বলতে মূলত বোঝেন ফর্সা রং। তাঁরা পর্দায় বিপাশা বসু, পাওলি দামের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও জীবনসঙ্গিনী নির্বাচনের সময় দুধে-আলতা রং খোঁজেন। কেউ সেটা প্রকাশ্যে বলেন, কেউ বলেন না। সেই ভাবনার মূলে আঘাতের প্রচেষ্টা-- 'কৃষ্ণকলি'।

Krishnakoli producer and Screenplay writer Sushanta Das 'কৃষ্ণকলি'-র প্রযোজক ও চিত্রানাট্যকার সুশান্ত দাস। ছবি: শাঁওলি

আরও পড়ুন: সেরার সেরা এবার ‘ত্রিনয়নী’, তৃতীয় স্থানে ‘কৃষ্ণকলি’

''আমাদের সব ধারাবাহিকেই একটা বার্তা থাকে। আমরা মেয়েদের নানা ধরনের ক্রাইসিসের কথা বলতে চাই। যেমন সাইনার বায়োগ্রাফি পড়তে পড়তে আমার 'দীপ জ্বেলে যাই'-এর কথা মাথায় এসেছিল। আবার একবার মনে হয়েছিল মেয়েরা কি কখনও শাড়ি পরে ফুটবল খেলে, যদি খেলে তাহলে ঠিক কেমন হতে পারে সেই মেয়েটির গল্প, এভাবেই 'জয়ী' তৈরি হয়েছে'', প্রযোজক বলেন, ''একটি মেয়ের গান তখন ভাইরাল হয়েছিল। একটি বাচ্চা মেয়ে, গান করে কিন্তু সে নিজে কালো বলে তার একটা কমপ্লেক্স রয়েছে। তার বাবা-মা একটি ইন্টারভিউতে বলেন সেটা। সেখানে থেকেই 'কৃষ্ণকলি'-র ভাবনা।''

Tele Academy Award 2019 best Bengali serial pair Krishnakoli শ্যামা-নিখিল। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

এই মূল ভাবনা থেকেই তৈরি হয় 'কৃষ্ণকলি'-র স্টোরিলাইন। একটি মেয়ে যার মধ্যে অনেক গুণ রয়েছে কিন্তু তার বিয়ে হবে কি না, সেই নিয়ে পরিবারের সকলের সংশয়, কারণ তার গায়ের রং কালো। ধারাবাহিকের ড্রামার প্রয়োজনে তার পরে অনেকটা লার্জার দ্যান লাইফ করে তোলা হয়েছে শ্যামা চরিত্রটিকে। উল্টোদিকে নিখিলকে তৈরি করা হয়েছে একজন আদ্যন্ত প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে, যার মধ্যে দায়িত্ববোধ এবং মূল্যবোধ দুটোই প্রবল। শ্যামার সঙ্গে বিয়ে প্রাথমিকভাবে মেনে নিতে পারেনি নিখিল ঠিকই কিন্তু তার কারণ এমনটা ছিল না যে শ্যামার গায়ের রং কালো।

''আমরা এটাই বলতে চেয়েছি যে হৃদয়ের মিলটাই বিয়ে বা সম্পর্কের ক্ষেত্রে শেষ কথা। শ্যামা ও নিখিলের মধ্যে এখন যে প্রেম দেখছেন দর্শক সেটা পারস্পরিক সম্মান ও মুগ্ধতা থেকে এসেছে। নিখিল যেমন শ্যামার প্রতিভা ও মানুষ হিসেবে তার গুণগুলি দেখে মুগ্ধ। শ্যামাও তেমনি নিখিলের সহমর্মিতা দেখে মুগ্ধ হয়েছে। শ্যামার কাছে নিখিল এমন একজন উদার মনের মানুষ যে তাকে বুঝতে চেয়েছে, সেভাবেই একটু একটু করে কেমিস্ট্রিটা তৈরি হয়েছে'', প্রযোজক জানান।

Tele Academy Award 2019 best Bengali serial pair Krishnakoli শ্যামা-নিখিল। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

আরও পড়ুন: জীবনের প্রতি আমাদের মনোভাব আলাদা, তাই আলাদা থাকাই ভাল: মধুমিতা

শ্যামা ও নিখিল-- এই দুটি চরিত্রের কাস্টিংও এই জুটির সাফল্যের অন্যতম প্রধান কারণ। নীল ভট্টাচার্য এই ধারাবাহিকের আগে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিলেন 'স্ত্রী' ধারাবাহিকের নায়কের চরিত্রে। তবে 'কৃষ্ণকলি' তাঁকে অভিনেতা হিসেবে অনেক বেশি পরিণত করেছে। 'স্ত্রী'-তে বেশ কিছু উচ্চকিত ড্রামা ছিল। 'কৃষ্ণকলি'-তেও খুবই নাটকীয় মুহূর্তে তৈরি হয়েছে কিন্তু নিখিল চরিত্রটি এমন ভাবেই লেখা হয়েছে যে এখানে সূক্ষ্ম অভিনয়ের সুযোগটা অনেক বেশি।

''কৃষ্ণকলি-র আগে নীলের সঙ্গে আলাপ ছিল না। এখন আমি ছোট ভায়ের মতোই ভালোবাসি। নীল খুব প্রোডাকশন-ফ্রেন্ডলি অভিনেতা। যে কোনও প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করতে যাক, ওকে সবাই পছন্দ করবে কারণ সব রকম পরিস্থিতির সঙ্গে হাসিমুখে মানিয়ে নিতে পারে। খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ এবং সর্টেড'', বলেন প্রযোজক সুশান্ত দাস, ''আর তিয়াসা হল গড গিফ্টেড ট্যালেন্ট। ওর অভিনেত্রীই হওয়ার ছিল। একটা সাড়ে তিন মিনিটের গানে লিপ দিতে পারে টানা একটিমাত্র টেকে। এটা অত্যন্ত বিরল, আচ্ছা আচ্ছা অভিনেত্রীরাও পারেন না, একবারে। ওর স্বামীও অভিনেতা। ওদের একটা ছবি দেখে আমি সুবানকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে পাশের ওই মেয়েটি কে, ও কি অভিনয় করবে? সুবান বলেছিল, কথা বলে দেখছি। তার পরেই লুকসেটের জন্য তিয়াসাকে ডাকা হয়। তিয়াসার এটা প্রথম কাজ, ও যদি নিজেকে আরও ভালো করে তৈরি করে, আগামী দিনে বাংলা বিনোদন জগৎ অত্যন্ত বড় একজন অভিনেত্রীকে পাবে।''

Bengali Serial Bengali Television
Advertisment